সে ও বিদর্ভা
-
তিনটি ছবি পাঠালাম আপনাকে। চা খেয়ে এই জাতীয় আত্ম প্রেমময় কাজ কারবার! নারসিসিজম!
সেল্ফি! সবই যদি মিথ্যে মিথ্যে চলতে পারে তো মিথ্যে ছবি, মিথ্যে
হাসি না কেন? যাকগে গোল্লায় সব, আমি এখন চিড়িয়াখানায় যাব।
- কী সুন্দর লাগছে
আপনাকে! একদম সেই পুতুল... হাসিটায় আছে
লাবণ্য... তিরতির ৬৪ জেলা। বেশ ভালো লাগছে।
- সেল্ফি তাইলে purnota পাইলো। এমন কাব্যিক কমেন্ট আপনার! তাও ধন্যবাদ। আমরা মিথ্যের চাষ করি। জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। নিরাশাবাদী
কুৎসিত সাতাশ বছরের কিশোরীরূপী মধ্যবয়সী নারী আমি।
- আমার মন শরীর খুব
খারাপ। থাক না মধ্যবয়সী প্রলাপ! মন ভালো করা কথা হোক।
- ও ঘুমিয়ে গেল। প্রতিদিনই
এমন হয়। অফিস করে ও ভীষণ ক্লান্ত থাকে। রাত সাড়ে দশটা কি এগারোতেই ও ঘুমোয়। আমার
ওকে চুমু করতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু কিছু লাভ নেই। ...সে কী, আপনার
শরীর আবার খারাপ কেন? কী হলো? ধুর, এইসব শুনলে ভালো লাগে না! শরীর খারাপ শুনলে মনে হয় আবার পালাই।
- এই হার্টের ব্যথা, জ্বরের
বর্শা এসব। লিখতে পারছি না। একদম না।
- কী হয়েছে ফের? আপনার
সেই ডাক্তার কই? সে দেখতে পারে না? জোর করে লেখার দরকার নেই। সুস্থ
হন। আর আপনার বোধহয় খুব কাজের চাপ। কী রকম যান্ত্রিক সব!
- সেই সুন্দরী ছুটিতে। আসবে সহসা...। ঠিক! এখানের জীবন খুব চাপের।
- হুম, তাকে
বলবেন সে কেমন ডাক্তার যে অসুখ করে বারবার!
- এই বিদর্ভা এই...
- জ্বি
- এমনি ডাকি
- আমিও এমনি জবাব
দেই
- হাহাহাহাহা
- ব্যথা ভালো হয়ে
যাক
- একটু ছুঁয়ে দিন তো
- দিই। সাথে মন্ত্র
পড়ে ফুঁ
- কী মন্ত্র জানে
বিদর্ভা?
- হতাশার মন্ত্র। এমন হতাশ করে দেব যে, হতাশায় সব অবশ লাগবে। ব্যথা বেদনা উধাও। অনেকটা গাজার মতো।
- চুপ করেন। একটা মজার কথা শুনুন।
- কী?
- সেদিন তিউনিসিয়ার
একটা ছেলে আমাকে সামান্য গাঁজা দিয়েছে।
- বেশ তারপর? খেলেন?
মানে এইটাকে কী বলে, স্মোক করা। কেমন ছিল?
- তো রোববার ভোর
রাতে আমি খুব পান করেছিলাম। মাতাল ঋত্বিক। ছেলেটা গাঁজা দিল আর আমি একদম ভুলে
গেছি।
- গাঁজা কিন্তু দারুণ! সে কী!
- দু’দিন পরে আমাকে
প্রশ্ন করে, কেমন লাগল খেতে? আমি তো আর মনে করতে পারি না কিছুই, ভুলেই গেছি যে সে আমাকে দিয়েছে!
- হা হা। উত্তর কী দিলেন?
- পরে ওয়ালেটে দেখি
কিউট বাচ্চার মতো এক টুকরো গাঁজা শুয়ে আছে। তার মানে সেদিন মদের
নেশাটা জম্পেশ ছিল...
- হাহাহাহা
- কী মিষ্টি! ওখানে
ওর পাশে আমিও ছিলাম। ওখানে কি আমাদের মতো লুকিয়ে খেতে হয়?
- রেখে দিয়েছি। খাইনি এখনো।
- আপনার ওয়ালেটে গাঁজার
পাশে তাহলে আমিও শুয়ে আছি, ঠিক আছে? আমাকে রাখেন।
- এখানে গাঁজা পেলে
পুলিশ শুধু জরিমানা করে। মানে
টিকেট দেবে আপনাকে।
- আচ্ছা!
- তবে বিক্রির জন্য
বেশ পরিমানে পেলে সেটা অপরাধ। তবে বড় বড়
ফেস্টিভেলে বেশ গাঁজার ঘ্রাণ মৌ মৌ করে।
- কবে খাবেন? একা
খেলে মন খারাপ করবে, কাউকে সাথে নিয়ে খাবেন।
- গাঁজা খেলে আমার
শরীর জেগে ওঠে। আদর
করতে ইচ্ছা করে।
- আমারও, আমারও! আমার ধারণা, সবারই। আর খুব আনন্দ লাগে।
ওইটা নির্মল। আপনাকে আরেকটা ছবি দিই। দেখেন কেমন পেটের ওপর ল্যাপটপ নিয়ে ঘুমোচ্ছে!
ও যদি জানে এরকম ছবি আপনাকে দিয়েছি, আমাকে আছাড় দেবে।
- দারুণ ছবি তো!
- আচ্ছা আপনার আজকের
লেখার ঘটনাটা কি সত্যি? মজা পাচ্ছি পড়ে। কিন্তু শীত নিদ্রায় আছি তাই লাইক দিই নি। আপনার ছবি আমাকে দেখতে দ্যান না কেন? কাজ জমে আছে, কিন্তু
এখন একটু ব্রেক নেব। আপনার ছবি দেখতে
দ্যান আমাকে। আমি কত ছবি দিই... ইস্ এইটা আগের ছবি। আজকের ছবি চাইছি। আমাকে বোকা মনে
করেছেন? এইটা আপনার ঘর? আপনাকে সুন্দর দেখাচ্ছে না। আমাকে নিয়মিত বিরতিতে
ছবি পাঠাবেন। ওখানে আপনার ছবি, আপনার দেখা জায়গার ছবি...
-আচ্ছা
- কাল যে ছবি দুটো দিয়েছিলেন,
দারুণ তো! কোথায় তোলা? আপনাকে রূপমোহ পরী লাগছে...
- আপনার আজকের লেখা
ভালো হইছে। এইগুলা সত্যি হলে আরও ভাবতে ভালো লাগত। আমার খিদে পেয়েছে। অফিসে একটু কাজের
চাপ থাকলেই খিদে পায় আর মনে হয় কখন বাড়ি যাব, বাড়ি গিয়ে আবার মনে হয় জীবনের
তো কোনো মানে নাই... পলাশ ভাইয়ের দেওয়া কাজগুলো করতে পারলাম না... তারপর রান্না
করে খেয়ে ঘুমিয়ে যাই।
নীহারকে ফোনে ব্লক
করে দিয়েছি যেন কোনোদিন অফিসের সামনে এসে জড়ানো জড়ানো গলায় বলতে না পারে নিচে নামো... তাতে কোনো
দুঃখ নেই। আমি ওর চেহারা আর কোনোদিনই দেখতে চাই না।
আর ঐ ছবিগুলো রাঙ্গামাটির
এক রেস্টুরেন্টে তোলা... বোতলগুলো ভালো লাগলো... ওটার পরিবেশ এমন ছিল যে আমার
ইচ্ছা করছিল যদি কোনোদিন প্যারিস যেতে পারতাম... বা ইউরোপের দেশগুলোতে... অনেক অলি
গলি ঘুরতাম।
আমার সাথে কে থাকত
জানেন তো? অচেনা কালো ছেলেমানুষ কেউ। আচ্ছা থাক, ওকেই
নেব। কিন্তু ও যে সারাক্ষণ ফোন নিয়ে ডুবে থাকে, নয়তো ল্যাপটপ... এজন্যে ওকে নিতে
একটু ভাবতে হবে...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন