কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

০২) অমিতাভ প্রহরাজ


একটি লেখানেস্‌, ভঙ্গি লেখেটিভ





Sunday, September 07, 2014
7:44 AM

















যে তিনজন তৈ
রি হয় একটি লেখাতে

লেখার ইন্টারপ্রিটেশান ও লেখার মধ্যে প্রেম চলাকালীন একজনের প্রবেশ-
আমার এ কথোপকথনে ঢোকা খুব দৃষ্টিকটু, তবু লজ্জার মাথা খেয়ে একটা ছোট্ট কথা বলতে চাইবেসিক্যালি  লেখার ইন্টারপ্রিটেশান হয় না, কোনো লেখারই একমাত্র লেখকের কাছে থাকেযে কবিতাটা এখানে চোখে  দেখা যাচ্ছে, সেটা বস্তুত লেখকের দ্বারা ইন্টারপ্রিট বা নিখুঁত হয় রিক্রিয়েট বললে, রিক্রিয়েট করা একটা জিনিস আসল কবিতা তো কিছু গন্ধ, শব্দ (অক্ষরজাত নয়), স্পর্শ, অনুভূতি, বোধ, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি দ্বারা সৃষ্ট, যা কবির মনের মধ্যে তৈরি হয় এবং সেটা নিরাকারঅনেকটা পূর্ণিমার মতো, পূর্ণিমার চাঁদ সাকার কিন্তু পূর্ণিমা নিরাকার  এবার কবি সেই মাদার পোয়েমকে ইন্টারপ্রিট/রিক্রিয়েট করে, তাকে আকার দিয়ে দৃশ্যমান ও ট্যাঞ্জিবল করে তোলে, এবং সেটি করে শব্দের (অক্ষরনির্মিত) সাহায্যেসেই মূল কবিতার স্বাদ বা সাক্ষাত পাওয়া পাঠকের পক্ষে অসম্ভবএকমাত্র কবির মনে সেই অনুভূতিটি আছেফলে পাঠক যেটা পড়ে সেটা একটা শব্দ দ্বারা রিক্রিয়েটেড কবিতাবা বলা যায় শব্দ দিয়ে তৈরি কবিতার প্রতিমাএবার এই প্রতিমার কোনো ইন্টারপ্রিটেশান হয় না আমরা মানে খুঁজতে যাই কার পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মিথটির দাসত্ব থেকে বেরোতে পারি না বলে সেই মিথ হলো, শব্দের মানেবেসিক্যালি শব্দের কোনো মানে নেইখুব আজগুবি শোনালেও এটি একটি বৈজ্ঞানিক  সত্যএটা বোঝার জন্য বেশি দূর যেতে হবে না, হাতের কাছে যে কোনো ডিকশনারি খুললেই বোঝা যাবে দেখা যাবে একটা শব্দের মানে বাস্তবিকই আরেকটা বা একাধিক শব্দ ছাড়া কিছু নয়এইভাবে ফোনেটিক্যালি  ভাঙতে ভাঙতে গেলে শেষ যেখানে পৌঁছব তা হলো বিশুদ্ধ ধ্বনি যার মানে নেই, আছে কোনো ক্রিয়াকে/কাজকে  রেফার করা যেমন ছুতোর র‍্যাঁদা চালাচ্ছে, তার ধ্বনি নিজস্ব যা শুধু এই কাজটিকে রেফার করে ফলে শব্দ বেসিক্যালি রেফার করে কোনো কিছুকে, মানে বলে নাপ্রসঙ্গ থেকে দূরে চলে এসেছি। কথা হচ্ছিল ইন্টারপ্রিট  করা নিয়েএই লেখাবিজ্ঞানের নিরিখে কবিতায় ইন্টারপ্রিট করার কিচ্ছু থাকে নাতাহলে প্রশ্ন ওঠে, পড়ব কেন ও কবিতার তাহলে কী থাকে? এটা ভাবা হয় এভাবে, যে ইন্টারপ্রিটেশন থাকে না কবিতার, কিন্তু রিয়াকশ্যান  থাকে। কবিতা একটি ঘটন্ত। একটা এ্যাকশান, যার সাপেক্ষে আমার একটা রিয়াকশান হয়। সেই রিয়াকশানটাও কিন্তু একটা লেখাযেহেতু যে কোনো দুজন মানুষের বোধ কখনোই এক হতে পারে না, তাই মূল কবিতাটার কাছে আমি কখনোই পৌছতে পারব না, সেটা অন্যের ও নিরাকার, তাই চেষ্টা বৃথা। আমার যেটা হবে, তা হলো ওই শব্দ দিয়ে তৈরি কবিতাপ্রতিমার প্রতি একটা প্রতিক্রিয়া। কেউ তাকে বলে লাগা, কেউ অনুভূতি, কেউ বলে  লক্ষ্মীরতন। সেটা যাই হোক না কেন, সেটিও একটি লেখা যা পাঠক একটি কবিতা পড়ার সময় সমান্তরাল ভাবে লিখে চলে মনের মধ্যে, এবং সেটিও নিরাকারএবার কেউ তাকে শব্দের সাহায্যে মূর্ত করার চেষ্টা করতে পারে।  তাই আমি মনে করি, বিশুদ্ধ পাঠক বলে কিছু নেই, পাঠকমাত্রেই লেখক, হতে বাধ্য। হ্যাঁ হয়তো তিনি শব্দে লেখেন না, কিন্তু দৈনন্দিন দিয়ে লেখেন, ফীলিংস দিয়ে লেখেন, প্রাত্যহিকতা দিয়ে লেখেন, সংসারশিল্প দিয়ে লেখেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই কবিতাকেই সফল মনে করি যা আমাকে দিয়ে আরেকটি কবিতা লিখিয়ে নেয়
আসলে আমি ঘোরতরভাবে মানি, একটা কবিতা মানে তিনটে সম্পূর্ণ আলাদা কবিতাএকটা, আমার মাথায় যেটা  তৈরি হয়, তার মধ্যে গন্ধ আছে, স্পর্শ আছে, অনুভূতি আছে, শব্দ আছে (অক্ষর দেওয়া শব্দ নয়)দ্বিতীয়,  সেটাকে অক্ষরযুক্ত শব্দ দিয়ে আমি রিক্রিয়েট করছি, চেহারা দিচ্ছিতৃতীয়, সেই চেহারা যে পড়ছে তার মনের মধ্যে যে নিজস্ব কবিতা সৃষ্টি হয় এই তিনটে ডিসটিংক্টলি আলাদা কবিতাসুতরাং যে পড়ে সে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের কবিতাটা লিখতে থাকেতাকে তুমি বোধ বলো, অনুভূতি বলো, রিএ্যাকশান বলো, কাঁটা লাগা বলো কী  পাঁচুগোপালের জর্দা বলো, দিনের শেষে সেটা তার লেখা একটা কবিতা, সম্পূর্ণ নিজস্বতাই কবিতা পড়ে যে পাঠক, সে তো কবি হতে বাধ্য
এই ভাবনাপদ্ধতি, শব্দের মানে নেই, কবিতার ইন্টারপ্রিটেশান হয় না, একটি চিন্তাবিপ্লব যা অতি প্রয়োজনীয়, এর মূল ভিত্তি এক অন্য যুক্তিপদ্ধতি, যার নাম ল্যাটারেল থিংকিং। আমাদের সাধারণ যুক্তিপদ্ধতি হলো ভার্টিক্যাল থিংকিং বা রক লজিক। কারোর সীমানা কম নাকার চিন্তার কোনো সীমানা হয় নাযুক্তি যখন পাথরের মতো কাজ করে তখন সিঁড়িভাঙ্গা কাজ করেধাপে ধাপে নামতে থাকি আমি একটা সিদ্ধান্তের দিকেবস্তু দেখলে মনে প্রশ্ন জাগে এটা কি?”, তার উত্তরের দিকে যাইপৃথিবীর সকলের, আমারও এই অভ্যেসকার এটি বাস্তব  জগতে অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজন হয় কিন্তু লেখা বা সৃষ্টির পৃথিবীতে এই পাথুরে যুক্তির অভ্যেসই সীমানা খাড়া করেএই অভ্যেস থেকে একটু বেরোলে, পাথরটা গলিয়ে জল করে নিলে, যুক্তি সিঁড়িভাঙ্গা আনে না, পাত্রের আকার নেয়তখন বস্তু দেখলে মনে প্রশ্ন জাগে এটা কি হতে পারে?” … যার উত্তরের দিকেও আমি যেতে পারি বা পূর্ব, পশ্চিম, নৈঋতের দিকেসীমানা ভেঙে যায় তখন রিলেটের বদলে মন বেছে নেয় রিয়াক্টএটি একটি যাপনপদ্ধতি, আউল বাউল ফকিরদের মতোঅভ্যেস করতে হয়চিন্তার কোনো সীমানা নেই, কম বেশি নেইব্রহ্মবোধের মতোই এটা একটা বোধবার চলে এলে দেখা বদলে যায়, চারপাশ বদলে যায়, পৃথিবী বদলে যায়



















লেখার সময়- একটা সহজ জিনিস কেন আজও তুখোড় লেখকরা বোঝেন না, সময় হচ্ছে সেই তাজা রক্ত যা  একটি অস্তিত্বর মধ্যে সর্বদা চলাচল করে। তার জন্য কোনো বিশেষ কার লাগে না বা তাকে আলাদা করে ধন্যবাদ জানাতে হয় না। একটি সময়ে একটি কবিতার অস্তিত্ব আছে মানে, সেই সময়টি কবিতার মধ্যে, চাও বা  না চাও, আছেই। তাকে আলাদা করে পয়েন্ট আউট করা মানে সেটা ব্লাড টেস্টের রিপোর্ট হয়ে যায়। আরে, তোমার শরীরে রক্ত টগবগ করছে এবং তুমি, ধরো মোনালিসাকে পাওয়ার জন্য রক্ত ঝরাতে রাজি নির্দ্বিধায়, এটা কম্যুনিকেট করার জন্য কি তুমি প্রথমে ব্লাড টেস্ট করতে দৌড়বে আর তোমার হিমোগ্লোবিন, ইয়োসেনোফিল, বেসোফিল কাউন্ট মোনালিসার বাবাকে জানাবে??? একটা কথা খুব বলা হয়, সময়ের প্রয়োজন, সময়ের উপযোগী... আরে সময়ের প্রয়োজন থেকে যদি কবিতা লেখা হচ্ছে তাহলে সেটা নিশ্চই পারপাস সার্ভিং লেখা... কবিতার ব্যবহার করা হচ্ছে... হে সৃষ্টিশীল কবি, তুমি কি চাও তোমার কবিতা মাইক্রোসফটে চাকরি করতে ঢুকুক??? সে যার জন্য হোক, যেভাবে হোক, কবিতার ব্যবহার মানে কবিতার ব্যবহার, সিম্পল। একজন ড্রাইভার যেমন গীয়ার ব্যবহার করে পথোপযোগী চলন সৃষ্টি করতে। বিশ্বাস করুন, মাইরি বলছি, সময়ের কিচ্ছুটি প্রয়োজন নেই, ওর গাড়ি বাড়ি বউ গার্লফ্রেন্ড, ধনদৌলত, সব আছে... হাঃ আপনি ওকে কী দেবেন?? সব নস্যি... আপনি  যদি এক ভয়ঙ্কর সময়ে বাস করছেন, তাহলে জেনে রাখুন, সেই ভয়ঙ্করতা আপনার সবটা জুড়ে আছে, আপনার  হাতের লেখার মধ্যে আছে সেই অমানবিকতা... আপনার প্রতিটি ভাবনার মধ্যে, এমনকি আপনি যখন চিংড়ির চপ খাবেন ভাবছেন, সেই ভাবনার মধ্যেও আছে ভয়ঙ্করতা... এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আপনার আঙুলের নড়াচড়ার মধ্যে আছে, পলক ফেলার মধ্যে আছে, পিঠ চুলকোনোর মধ্যে আছে... ওকে আলাদা করে চিহ্নিত করা মানে কাউকে মুখে লাথি মারার আগে পায়ের সংজ্ঞা দেওয়া... আপনি আলোড়িত, আলোড়িত মনটিকে লিখতে দিন, আলোড়নকে লিখতে দেবেন না... একয়া হৃপিন্ড লাফিয়ে উঠছে, এটা আপনি একটা এ্যানাটমি ক্লাস থেকে রক্তাক্ত হৃপিন্ড বার করে এনে তাকে স্প্রিংএর ওপর চাপিয়ে দেখতে পারেন, অথবা একটা সুন্দর মানুষ লাফিয়ে উঠছে দেখতে পারেন... দুটো একই














লেখা জানা জানোয়ার স্ট্যাচুর সুরে কথা বলে


লেখা জানে জানোয়ার-
কিছু না জানা লোকের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি না... হ্যাঁ, ওই নাম, তত্ত্ব, ইতিহাস ইত্যাদি তার না জানা থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো তো পাতি ইনফর্মেশান... তার সাথে কবিতার যোগ কোথায়??? কবিতা বা ক্রিয়েটিভ কোনো লেখা লেখার জন্য প্রয়োজন নিজেকে জানা... যে পারসিভ করতে পারে সেই কবিতা লিখতে পারে... সেই লোকটি আইজাক নিউটনের নাম বাপের জন্মে শোনেনি, সে কি মাধ্যাকর্ষবাইরের জীব??? সে যদি মাধ্যাকর্ষপারসিভ করতে পারে, তাহলে সে কবিতা লিখতেও পারে... আর এটা পারসিভ করার জন্য তো নাম, ইকুয়েশান, ফান্ডা, জানার প্রয়োজন হয় না, প্রয়োজন শুধু নিজের ভাবনা... যে নিজের ভাবনা ভাবতে পারে সে কবিতা লিখতে পারে, তার অক্ষরজ্ঞান না থাকলেও... তার কবিতা হয়তো সে ভাষায় লিখতে পারবে না, কিন্তু কবিতা ঘটবে না তা তো বলা যায় না... কার কবিতা তো চতুর্দিকে  ঘটেই চলেছে, মানুষ তাকে স্প করে ভাবনা দিয়ে... স্পট করতে  নাম, তত্ত্ব, ইত্যাদি কী দরকার??? এগুলোর  দরকার হয় একটাই কারণে, সেটা হলো কালেক্টিভ নলেজকে  স্ট্যাগন্যান্ট না করা, তাকে বাড়ানো, এবং তাকে ট্রান্সফার... যেগুলি করলে মাথার বিবর্তন বন্ধ হয় না... কিন্তু তার সাথে কবিতা লেখার কী সম্পর্ক??? যে ভাষা জানে (লিখতে বা পড়তে না, বুঝলেই হলো) ভাবতে জানে সে   লিখতেও জানে, শুধু তাই নয় দামী দামী লেখা লিখতে জানে... তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ মেয়েলী ছড়া বা বিয়ের ছড়া বা ছেলেভুলানো ছড়া... জ্ঞান আর বিদ্যা, এই দুটো জিনিস অনেকে গুলিয়ে ফেলে... জ্ঞান নিজস্ব আর বিদ্যা অর্জিত... কবিতার জন্য প্রয়োজন জ্ঞানের, বিদ্যার নয়... বিদ্যার প্রয়োজন জ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য... এই কাজটা যে চুজ করবে সে করবে, আর যে চুজ করবে না সে করবে না, কবিতার তাতে একটা গাছিও ছেঁড়া যায় না...














লেখার আমিপনায় কত রঙ্গই না থাকে!!!


লেখার আমিপন-
দুর্ঘটনার বোঁটা ও দুধ খেয়ে বড় হওয়া ঘটেছে আমার। বস্তুত বড় এক তীব্র অপরিচিত আমার। ঘটে যা বড়-হওয়া বড়-হওয়া খেলা। তো দুর্ঘটনা বড় আদরের চোখ আমি, কোলে পিঠে করে আগলেছে প্রতিটি পাস্ট টেন্সে। যখনই পাস্ট টেন্সের সাথে ট্রেক বা সামিটে গিয়েছি, রুকস্যাকে কাটা চেন হয়ে প্রতিবার সঙ্গে গিয়েছে, ভ্রমণের সাথে ঝগড়া করে আমাকে রেখেছে নিজের অন্তরে। প্রকান্ড রকফেসের গায়ে সুড়সুড়ি দিতে শিখেয়েছে আর কী যত্নেই না বুঝিয়েছে রকফেসের ভেতরে ছোট ছোট আরামের শ্যাওলা কীভাবে তৈরি হয়। শেরপার মতো হাসিমুখে খিচুড়ি  চাপিয়েছে, আমি আর পাস্ট টেন্স যাতে সেসব ধোঁয়ায় ঢুকে যাই, আর আবছা পায়ের কথা, আবছা আঙুলের গান গাছের হামাগুড়ি থেকে পালিয়েছিল, তারা সব এসে আমার চোখেমুখে জুটেছে। দুর্ঘটনার প্রাণটি চির-উত্তেজিত, ফোর মেন টেন্টের মতো হাসতে পারতো বলে প্রতিবার শুধু পেগ আর রডগুলি নিয়ে যেতাম, আর দুর্ঘটনার প্রাণের মধ্যে থেকে বেরোত জীবনের দড়ি, হেলমেট, হারনেস, হেক্স, ক্যারাবিনার এমনকি ঈশ্বর ও মানুষের র‍্যাপেলিং, টুকরো টুকরো করে যত্নে কৌটোয় ভরে রাখা... কৌটো বলতে মনে পড়লো, প্রচণ্ড ভয় পাই আজো কৌটোদের কথা জিভে এলে... (ছোটবেলায় দিদিভাই-এর জর্দার কৌটো দেখিয়ে বলেছিল, আমার শরীরে যেমন রক্ত আছে,  কৌটোদের শরীরে নাকি রক্তারক্তি থাকে, ছুঁলেই সে দুজন আমাকে খেয়ে নেবে, দুজনেই খুব রাগী আর লাললীলাল রঙের। লীলাল আর লাল, এই দুই রঙের রাগী দুই লোক, রক্তা আর রক্তি, দিদিভাই পান খেলে যারা মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, বাবা গো!! যাদের ভয়ে আমি সারা ছোটবেলা জর্দা দেখলেই পালাতাম... আর সাপকে যেমন লতা, একই ভঙ্গিতে সারা ছোটবেলা জর্দার কৌটোকে দর্জা বলেছি্‌, সামান্য এগোলে সময়, বিছে দেখলে ওরে আশা আশা বলে হেসেছি)
















কে কাকে টুকলো এই দেওয়া নেওয়া তে



লেখার চোরাচোর- 
ওহে চুরি একটি কনসেপ্ট ইটসেলফ... পৃথিবীর প্রথম চোর কিন্তু ভয় পায়নি, লুকোয়নি, পালায় নি... সে এটাকে একটা ফলের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রম কমাবার একটা অলটারনেট উপায় ভেবেছিল... আসলে পৃথিবীর প্রথম মানুষ যে সর্বপ্রথম প্রয়োজন অনুভব করতে পেরেছিল তার সাক্ষাৎ বংশধর ছিল রত্নাকর... সৃষ্টিশীল প্রাণীদের কিছু লক্ষ্ম আছে, যা দেখা গেলে  অবিলম্বে আই সি ইউ সতর্কতার ব্যবস্থা করে রাখা প্রয়োজন... পৃথিবীর প্রথম সতর্কতা অবলম্বন একটি মানসিক বিকৃতি বলেই চিহ্নিত হয়েছিল... পরে যেহেতু সবলের থেকে দুর্বলের সংখ্যাধিক্য ছিল, তাই দুর্বলদের চতুর ব্র্যান্ড পজিশনিংএ সতর্কতা অবলম্বনের সঙ্গে মেধা, দূরদৃষ্টি ইত্যাদি ফ্যাক্টরগুলি সুকৌশলে মিশিয়ে ব্যাপারটিকে বেশ উচ্চাঙ্গের মনোভাবের ব্র্যাকেটে ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়া হয়... যাক সিম্পটমগুলি বলি
১) কবি বা লেখক যখন নিজের লেখাকে জাস্টিফাই করার প্রবণতা দেখায় (এর অর্থ একটি লেখা ও একটি একশো বা হাজার টাকা খরচ তার কাছে সমপরিবারের সন্তান)দুই, লেখক লেখা শেষ করার উপায় বিস্মৃত হয়েছেন। কার লেখাটি যদি লেখা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়ে থাকে সত্যিই, তাহলে তার সাথে কোনো টান, ইন্টুপিন্টু থাকা  তো সম্ভব নয়। লেখাকে মারা খিস্তি যখন লেখককে উকিলে পরিণত করে, তার মানে লেখাটির সাথে তার অবৈধ  ইন্টুপিন্টু জারি আছে।
২) কবি বা লেখক যখন তাঁর লেখার অঙ্গে অবিচার-ঘটনার দাগ খুঁজে পান ও নিজেকে ব্যবহৃত সামগ্রীর মতো দেখেন। (এর অর্থ লেখা নয়, লেখার মাধ্যমে কোনো গন্তব্যের প্রাপ্তিযোগ নিয়ে আকুলতা বেশি
৩) কবি বা লেখক যখন লেখা পড়ে পাঠক কী ভাববে ভেবে ফেলেন। (এর অর্থ অহঙ্কার-কার্সিনোমা ছোবল  দিয়েছে)
৪) আকাশ থেকে ঘোড়সওয়ারি ঔজ্জ্বল্য অর্ডার করে ফেলেন লেখক, চেতনে বা অবচেতনে

যাকগে, কনসেপ্ট-এর মালিকানা হয় না... যদি তোমার কনসেপ্ট অন্য কলমে চেপে থাকে, প্রকাশ্য ঘোষণার বদলে নিজের কলমকে অবিলম্বে ইরেক্টাইল ডিসফাংশানের জন্য ডাক্তার দেখাও... কখনো ভেবেছো, তুমি নিজে মার্ক জুকারবার্গ নামক একটি ছোকরার কনসেপ্ট চুরি করে নিজের প্রতিবাদ জানাচ্ছো??!! লেখার তলায় নিজের নামকে যতক্ষণ লেখারই একটি পংক্তির মতোন দেখতে মনে না হয় (যে পংক্তি প্রয়োজনে পরিবর্তিত হতে পারে, এডিট হতে পারে এমন কী বাদও যেতে পারে) ততক্ষণ লেখাকে মানসিক প্রতিবন্ধী বলেই ভাবতে পারো তোমার কনসেপ্ট চুরি হচ্ছে, এই অভিযোগ তুমি করবে কেন?? কনসেপ্ট যদি বাপের ব্যাটা হয়, যা করার ও, মানে  কনসেপ্ট নিজেই করবে। লেখক পাহারাদারের জুতোয় প্রবেশ করলে, তাও নিজের কনসেপ্ট আর নিজের লেখার, কলমের অবধারিত ইরেক্টাইল ডিসফাংশান ডেকে আনে।

পৃথিবীর প্রথম চোর আসলে একটি আপেল, যে দুটি ধেড়ে ধেড়ে ন্যাংটো ছেলেমেয়ে, আদম আর ঈভ, তাদের মধ্যেকার দূরত্ব চেটেপুটে চুরি করেছিল, এমন চুরি করেছিল যে, চুরির পর ভ্যাকুয়াম নেমে এসেছিল নারী আর পুরুষের মাঝখানে। আবার আপেল গাছের মতে আসলে আপেল চুরি করেছিল দুজনের মাঝখানে থাকা একটি অশরীরীকে, মানে একটি ভূতকে, বা বলা যায় একটি পাস্ট টেন্সকে। তবে যাই হোক, পৃথিবীর প্রথম চোরাই মাল একটি বিশুদ্ধ পাস্ট টেন্স, এটি নিশ্চিত সত্য।
আর বহু চেষ্টার পরেও দেখা গেছে ফিউচার বা ভবিষ্যৎ চুরি বা নকল পিগমিদের কমপ্ল্যানে চান করার মতোই একটি ঘটনা।
তাই কমপ্লেনের থেকে কমপ্ল্যান বেটার এনি ডে! অন্তত আকাশের একটু কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার আশা তো দেয়!














অতঃপর মানব
কীরূপে ছত্রাকার হইবে লেখায়??



লেখার কল্পবিজ্ঞান-

সঠিক অনুবাদ কি বাচ্চাদের খেলা? একটা বিষয়ের ওপর বিভিন্ন রকম ভাবে বাক্য গঠন করতে পারে!!!... এটা রোবোটিকস নয়, একটা দর্শনগত জায়গা থেকে... এবং এর জন্য এ্যলগরিদম নয়, ওয়ার্ডনেট বলে একটা প্যাটার্নের সাহায্য নেওয়া হয়... কালকে বলছিলাম, এ আই মানুষের ইনটেলিজেন্স অতিক্রম করতে পারবে না, কিন্তু যেটা সম্ভব হয়েছে তা হলো আ আই আর এইচ আই এর মধ্যে সমীকরণটি বার করা গেছে... এ্যালগরিদম দিয়ে যা যা করা যেত তা হলো compression, machine summarization, automatic query answering, machinetranslation... অত্রি ঠিকই বলেছে, এগুলো হলো এ আই এর গোড়ার কথা... ১৯৮০ সালে প্রথম বৈদ্যুতিন অভিধান ও তার ব্যবহার করা যায়... এই পদ্ধতিগুলোতে corpus বা ভাষানমুনা হিসেবে যা নেওয়া হতো তা হলো শব্দ, এবং শব্দকে সংখ্যা দিয়ে ডিনোট করা হতো... যেমন স্ত্রী যদি ৬৬ হয়, পুরুষ ৬৭ ও ক্লীব ৬৮... এইবার কোথাও যদি এমন বাক্য থাকে যেখানে কোনো পুরুষকে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে এই বলে যে তার মেরুদণ্ড নেই, ও একটা ক্লীবলিঙ্গ... এই ক্ষেত্রে কম্পিউটার পড়তো ফ্যাসাদে কার এ্যালগরিদম দিয়ে শব্দের ভাবকে পাকড়াও  করা যায় না... কিন্তু এসব হচ্ছে ১৯৮১-৮২র কথা... তারপর একটা যুগান্তকারী টীম তৈরি হয় প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে, একটা স্পেশাল ল্যাব তৈরি হয়, cognitive sciencelaboratory... টীমে আছেন জর্জ মিলার, অতি বিখ্যাত মনস্তত্ত্ব বৈজ্ঞানিক, যাকে contemporary freud বলা হয়... ক্রিস্টিন ফেলবাম, বিখ্যাত লিনগুইস্টিক্স ও সফটওয়ার বিশেষজ্ঞ এবং আরো অনেকে... ১৯৮৫ সালে তৈরি করা হয় বিখ্যাত brown  corpus, ভাষা ব্যবহার যে নিরাকার, এটি ভুল প্রমা করে তার আকার ডিফাইন করার জন্য... এবং ১৯৯১ সালে  তৈরি হয় ওয়ার্ডনেট যার চারটি অঙ্গের ওপর মানুষের দ্বারা যে কোনো রকম শব্দ ব্যবহার দাঁড়িয়ে আছে... এই চারটে হলো hyponym, hypernym, meronym, holonym এবং co-ordinate team collocation ওয়ার্ডনেটে প্রথম যেটাকে বাতিল করা হলো তা হচ্ছে শব্দের মানে। এবং তার জায়গায় এলো explanatory  gloss... এবার অর্ঘ্য/ইন্দ্র তোদের কথায় ফিরি, বিশেষ করে অর্ঘ্য, রোজার পেনরোজ আর গোডেল এ আই কে এইহ আই এর নিচে রেখেছেন কেন, প্রশ্নটা মাথায় আসেনি? সহজ করে উত্তরটা দি... মিলার, ফেলবাম যখন  সঠিকের দিকে যাত্রা করেছিলেন, সঠিককে চেনার গবেষণা চালাচ্ছিলেন... পেনরোজ ও গোডেল সঠিক ভুলকে  চিহ্নিত করার পথে এগোচ্ছিলেন... এটা এক মজার জিনিস, সত্যির কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে মিথ্যা এবং ভুলকে  চিহ্নিত করার এক্সপেরিমেন্ট... যা আবিষ্কার হয় তা হলো কয়েকটি আদর্শ প্যারাডক্স। Liar's paradox, Russels paradox এবং Godel's Incompleteness Theory. এই তাত্ত্বিক জায়গাগুলি ঠিক বা ভুল কোনো দলেই ফেলা যায় না, গুলির জন্য বিভ্রম নামে একটি জ তৈরি করতে হয়। এ জিনিস নতুন কিছু নয়... ভারতীয় দর্শনের  মায়াবাদ ও অজ্ঞেয়বাদ একই বিভ্রমকে প্রতিষ্ঠিত করে... সে আলাদা কথা, penrose, godel russel যে  জায়গাটায় পৌঁছান তা হলো এই না-মিথ্যে না-সত্য, না-ঠিক না-ভুল অবস্থান এ আই এর পক্ষে নির্ণয় করা অসম্ভব... এবং দ্বিতীয় জিনিস যা দেখিয়েছিলেন তা হলো এ আই এর করা ভুল সংখ্যাতত্ত্বের আওতায় ফেলা যায়, কিন্তু এইচ আই এর করা ভুল সংখ্যাতত্ত্বের আওতায় আনা যায় না... এখান থেকে সিদ্ধান্ত এসেছিল এ আই কখনোই এইচ আই কে পেরোতে পারবে না... ঠিক যেভাবে ক্রিক ও ওয়াটসনের মডেল আসার পর বায়োলজির অনেক ধারণা বদলে দেওয়া গেছিল, মিথ ভাঙা হয়েছিল... একই রকম ১৯৯২তে স্মৃতির Atkinson-Shiffrin Model এই ভুল সম্পর্কিত বহু মিথ ভেঙে দেয়... সবচেয়ে প্রথমে ভাঙে একটা যুগ-যুগান্তর ধরে চলে আসা  ধারণা, স্মৃতি নিরাকার। প্রমা হয় মানব স্মৃতি প্যারাবোলা আকৃতির। এবং তারপর ভাঙে শব্দের মানের চরিত্র।  ওয়ার্ডনেটের মতো মানুষের মনে শব্দের অবস্থান একটি নেটওয়ার্ক, semantics network. ফলে এই দুই নেটওয়ার্কের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করতে পারলেই এ আই এইচ আই এর বাড়িতে বা এইচ আই এ আই এর বাড়িতে থাকতে পারবে। এই জিনিসগুলো মেনে নিতে বা বিশ্বাস করতে অসুবিধে হয়, কিন্তু একটু তলিয়ে ভাবলে বুঝতে পারা যাবে, এটা একটা বিজ্ঞান, যার নাম বোধবিজ্ঞান
হাতের মুঠোয় আছে, সময়ের সার্কাস সময়ে হবেই


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন