কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪

১২) বিতস্তা ঘোষাল


ঢেউ

রাত দশটায় ফোনটা এলো

আমাকে তুমি কী নামে ডাকো?

কেন?

বল না...

হঠাৎ?

আমার নাম কী তুমি জানো?

না জানলেই বা অসুবিধা কোথায়?

ওঃ তার মানে তুমি না জেনেই আমার সঙ্গে গল্প কর?

তাতে তো কোনো অসুবিধা ঘটেনি 

বুঝেছি, তুমি জানো না

মাথাটা বিগড়ালো কখন?

মানে? তুমি ভাবছ, আমি মজা করছি!

না, তা ভাবব কেন?

আসলে কিছুতেই নামটা... আচ্ছা আমাকে তো তুমি... দেখছ, কিছুতেই মনে পড়ছে  না আমার বল না...

নামে কী বা আসে যায়, তোমার হাসিটাই তোমার পরিচয়...

আমার হাসি? তুমি আমায় কবে হাসতে দেখলে?

দেখিনি। তবে না দেখেও অনেক কিছু বলা যায়। শুধু বুঝে নিতে হয়...

বুঝতেই তো চাইছি। কিন্তু...

কী কিন্তু?

তুমি কি রেগে যাচ্ছ? আমি চেষ্টা করছি মনে করতে অথচ কিছুতেই...

মনে করার দরকার কী? যেগুলো মনে আছে সেগুলোই ভাবো...

জানো, খালি একটা নামই মনে পড়ছে  

কী নাম?

আমি রুপাইয়ের মা...

ওতেই হবে। আর মনে করার দরকার নেই

বুঝলাম।

কী?

তার মানে তুমিও আমার মতো ভুলে গেছ নাকি কোনো দিনই জানতে না?    

না জানি না, জানতেও চাই না। তোমার সঙ্গে নামের কোনো সম্পর্ক নেই

আমিও তো সেটাই ভাবতাম। কিন্তু ওই ফোনটা এসে সব গোলমাল হয়ে গেল।

কার ফোন?

ওই যে একজন বললেন, আমাকে একটা উপহার পাঠাতে চান, তাই নামটা...

যিনি পাঠাতে চান তিনি নাম জানেন না?

উনি একটা নাম বলে ঠিকানাটা জানতে চাইলেন, কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম না ওটা কার নাম  

কী নাম?

মনে পড়ছে না...

বুঝলাম। যাক অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পড় কাল সকালে মনে এসে যাবে।

 

বাবিন ফোন রেখে দিল। মেয়েটার স্মৃতি ক্রমশ কমে যাচ্ছে এভাবে একদিন সব ভুলে যাবে। কী যে হবে, কে জানে! ভাবতে ভাবতে বাবিন খবর শুনতে লাগলো ।

 

দু’দিন পর মেয়েটার ফোন এলো। মনে পড়েছে

বাঃ, খুব ভালো

জানো, সকালে বারান্দায় বসে আকাশ দেখছিলাম। মনে হচ্ছিল ওর সঙ্গে আমার অনেক দিনের চেনা-পরিচয় দূরে একটা গান বাজছিল। শুনতে শুনতে মনে পড়ে গেল

তাই? তা নামটা কী?

রঞ্জনা

ও! বাবিন চুপ করে গেল মেয়েটি বলে যাচ্ছিল। বাবিনের কানে তা ঢুকছিল না।


মেয়েটির নাম আসলে ঢেউ।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন