কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪

১৬) সায়ন ঘোষ





(১)
আমার একটা কবিতা ছিল
যত্ন করে রাখতাম তাকে
টেবিল ল্যাম্পের ঝাপসা আলোয়
কিংবা বইয়ের ঝাঁকে ঝাঁকে
সে জটিল ছিল, বর্ণময়
রাস্তা তার বড় বেহাল
সে পথ খুঁজত ভ্রুকুটির মাঝে
জ্বালাতে পারত তীব্র মশাল
সে কথা বলত, গান গাইত, মাঝে মাঝে কাচ ভাঙত
দুঃখ হলে বিষ চাইত আমার কাছে
বলত দাদা, বিষ দেন্‌ না, একটু বাঁচি
আমি দিতাম অশ্রুবন্যা
সে খুশি হতো, মজা পেত, মুচকি হেসে উপহাস করত
প্রায়ই আমি খাতা খুলতাম
লিখতাম দৈনিক খোঁজখবর
সে অট্টহেসে, রাত্রি শেষে বলত আমায়, বেজায় পাগল
যেতাম গড়িয়াহাট, গড়ের মাঠ
পাঠাতাম কবিতাকে ভেট
সে বালাই ষাট, একশো আট
ভালো থাকিস all the best!  


(২)
বঙ্গাব্দ শেষ হয়নি এখনও
কবিতারা ফুরোয়নি এখনও
মৃতফুল ফুঁপিয়ে কেঁদেছে সারারাত
বালিশেরা জড়িয়ে ধরেছে দুটো হাত
এখন সান্ত্বনা রাতের পাশবালিশ
চুপিসারে চলছে রোজ আকাশের চাঁদপালিশ
বিজ্ঞের মতো কফিমাখা ঠোঁটে চেয়েছি কতবার
কবি হয়েই বাঁচতে চেয়েছি আমি বারবার
এখনও বিকেলে কাব্য লিখে যাই
এখনও ভ্রমণে বেরোই আমি একাই
অশ্বত্থের পাতা ঝরে পড়েনি কোনোদিন
কাটিনি কেক, পালিত হয়নি জন্মদিন
সন্ধ্যের একটা ডানা কেটে ফেলে
বৃহত্তর একগোছা দাঁড়ি ছেঁটে ফেলে
পালিয়েছি কতবার বিষের ঠ্যালায়
হারিয়ে যাইনি তবু অচেনা মেলায়
বুদ্ধিরা ভিক্ষা করেছে হাওড়া ব্রিজে
কখনও ভিজেছে শরীর দারু শীতে
অস্ফুটে বাঁচতে চাই বলিনি কখনও
ধার করা বৃষ্টিরা ফুরোয়নি এখনও।


(৩)

দূর থেকে আকাশ দেখেছিস কখনও?
পাহাড়ে দাঁড়িয়ে নয়, সবুজ মাটিতে দাঁড়িয়ে...
মেঘের ভিড় তোর ছোঁয়নি ফুসফুস?
চেষ্টা করিসনি আরো ভালো করে দেখার?
আরো দু-পা বাড়িয়ে
আকাশ কিন্তু আমারই মতো
আরো ভালো করে দ্যাখ, আমায় খুঁজে পাবি
পাচ্ছিস না এখনও?
ঘুরে দ্যাখ, লোকটা কেমন বইছে বোঝা 
এবার দেখেছিস আমায়?
আমি কিন্তু তোকে রোজ দেখি
ভেজা ফুটপাথে বা অন্ধকারে নিষিদ্ধ রাস্তায়...


(৪)

বহুদিন মাঝরাতে খুঁজেছি ইঁদুরের গর্ত
জানি, মনমতো গর্ত পাওয়া খুব শক্ত
বিছানা ছেড়ে সাত পা, তারপর এক গ্লাস জল
আর তাতে একটা ট্যাবলেট সঙ্গে স্বপ্নের আস্তাবল
জল খেয়ে বাথরুমে অল্প আলোয় এলোমেলো চিন্তার হাতছানি
গর্ত খুঁড়ব না আর চরিত্রের ভয়ে
অগত্যা বিছানায় যাই, চাদর টানি।


(৫)

বিত্র দহনে পোড়া বিশুদ্ধ প্রেমিকের দল একদিন মুক্তি চাইবে
কিছু সুন্দরী ন্যাকামি বিকোবে রাস্তার মোড়ে
সিঁদুরে মেঘ তারা কোনোদিন দেখেনি
চাপেনি কোনোদিন সর্বহারার যানে
ঘুমকে ডিঙ্গিয়ে রাত্রি করেছে কাবার
ভিজেছে কেবল যৌনস্নানে
আকাশ মলিন হয়নি তখনও
আমি অপেক্ষায় ছিলাম ছাতা হাতে
বিদ্যুতের ঝলকানির অপেক্ষায়...
সে আসেনি কখনও...
 
ওহে, তুমি কোন্‌ যুগের নারী
ভালোবাসা বিকোবার দরুণ
যাতে লম্বা হরফে লেখা
পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে আমাকে ব্যবহার করুন

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন