কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬

দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

একটি প্রেমের কবিতা

সারারাত তোমাকে ভাবার পর
সকালে মেঘের ভেলা 
সানগ্লাস নেই খোলা চোখ 
সূর্যমুখী ক্ষেতে তুমি বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী
স্কুল শেষ করে ফিরে যাচ্ছে 
শনিবারের অটো
তোমার ভ্যানিটি আর স্বেদগন্ধ নিয়ে 
পুরুষ সঙ্গীটি ঘুমচোখে
একটা শত্রু স্টেশন
ট্রেন এনে কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদ 
প্রশ্রয় দিলে 
প্ল্যাটফর্মের ছাতিমকে সাক্ষী রেখে 
বসন্তকালীন বিদায়
দায় ঝেড়ে ফেললেও 
সেই হতচ্ছাড়া কোকিল 
আবার ফেরে জানালার গাছে...

কবিতা পথ ১

আমতা রোডএকলা তার 
সবুজ গানে পিচ দিচ্ছে
বিস্কুট কারখানার গন্ধ 
নিয়ে কারা নামবে গাজীপুর
অটো থেকে যে মেয়েটির বড় চোখ ছুঁয়ে দিল বাসের জানালা
তার গভীরে শুকিয়ে এসেছে জল না জলের ভিতরে গভীর!

কবিতা পথ ২

খাজুট্টি বাইনান নারিটট্রেকার 
আর ঝুলন্ত হাত
নজর দিচ্ছে সূর্যমুখী জারুলে 
আর কিছু অলৌকিক বাসভূমি;
চটের ঘোরাটোপে গুছিয়ে নিচ্ছে
চাল আর রুটির হিসেব
সেবা আর নিরাময়ের বাইরে 
নতুন পাওয়া সাইকেল রেসে
সীমানা নির্দিষ্ট করে উঠেছে তর্জনী বিদ্যালয়...

কবিতা পথ ৩

কলেজ রোড সবুজ বেচার আখড়া আর ছাল ছাড়ানো মুরগি পেরিয়ে
পাশাপাশি কথা বিনিময় আর 
চিত্রবাণীর সিনেমা পোষ্টার
নায়ক উড়তে উড়তে টেনে নিচ্ছে আঁচল আর উত্তম পাথর
গাছের মাথায় কিছু শামুক খোল
পরিযায়ী কবিতা রচনায়...

কবিতা পথ ৪

চন্দ্রপুর রাস্তায় ভোরের লরি সারসার কুয়াশা খায়
ভাঙাচোরা বাড়িটির নির্জনতা 
পুকুরের পাশে রাখা দেবী কাঠামো আর বাঁশবন ছোঁয়
চা দোকানের ঝাঁপ খোলে না
আর নটবর স্কুলেরও
শুধু কিছু কলাগাছে পাখিরা 
নিজস্ব ভাষা ঝালিয়ে নেয়
আর কেউ ব্রাশ হাতে কলের জলের প্রতীক্ষায়
লেড়ো বিস্কুট আর পাঁউরুটি নিয়ে যাচ্ছে যে মেয়েটি
কেউ তাকে শুধাবার নেই শরীরের সব রক্ত পড়ে যাবার পর
কেন এই পথে আর এই পথই কেন!

কবিতা পথ ৫

মুরলিবাড় বাজার পেরিয়ে ছিন্নমস্তা আর ইটভাটা আর এক একলা মন্দির
এক ছটাক জলে সায়াবউদির স্নান দেখে ফেলা কার্তিক
বড়ই অসহায় পাকুড়গাছকেই 
সাক্ষী মেনে নেয়
আর তারপর যা কিছু সবই লোহা 
আর সিমেন্টের কারবার
ব্যঙ্গ বিদ্রূপে ভাঙা লাইব্রেরী মোড়...

কবিতা পথ ৬

হেতমপুর চা দোকানে লেজ নাড়ছে কুকুর হাফ টোস্টের দীর্ঘ আশায়
বস্তির বাসনের কাছে শিশু ও মোরগ ধ্বনি আর উপসর্গ
ব্যাকরণের সব নিয়ম ভেঙে ছুটে 
যাচ্ছে  কার ও বাইক
নিবিড় ছায়ার অভিলাষী গরু ও রাখাল 
জানে খাল পেরোলেই টেনে নিয়ে যায় একলা কুমারী ট্রেন
ধারালো দাঁতের কথা রহস্যের পা ভারী করে তোলে দুর্লভপুরের... 


কবিতা পথ ৭

খালনা এক নিঃসঙ্গ কথা ঢুকে পড়ে মোড় পেরোলেই
সেইসব জোছনা খাওয়া ক্ষেতে 
পড়ে থাকে পাতা ছেঁড়া উপন্যাসের
লক্ষ্মী পূজায় কেউ কেউ কুড়িয়ে 
বুনে নেয় পাঁচালী গান
আর হাটের ভিতরে বাঁধের মানুষের কথা
জয়পুরে যাওয়ার পথে কারা ফেলে গেছে বেদানা আর বেদনা তরল...


1 কমেন্টস্: