দ্বিতীয় পক্ষ
সামনাসামনি কোনোদিন দেখিনি। ঐ রিফিউজি ধুম সিরিজ পা, এসবেই আমার যত আকর্ষণ
যত বিস্ময়। চোখ নাক আর ঠোঁটে। অভিষেক বচ্চন। ওকে আমি যেভাবে দেখেছি। শুনে ঘর থেকে
পর সবাই হেসে, আপ্না আইডিয়া বদল্ লো স্যডজী! বলে দেখে নেয় আমিও হাসছি না বিরক্ত
হচ্ছি। কী করব? আমার এই অভ্যেস আমার
অনেকদিনের অভ্যেস হয়ে গেছে। আসলে সব মানুষেরই কোনো না কো্নো আচরনের মধ্যে দিয়ে
স্বভাবের একটা পয়েন্টলেশ একগুঁয়েমি প্রকাশ পায়। এটাও তাই। আমার যত নাছোড়বৃত্তি
আমি যেমন দেখতে পেয়েছি।
অভিষেকের মতোই।
দেখার ইচ্ছের জন্য কি আমি দায়ী? দেখতে না পাওয়াটাও
আমার হাতে নেই। কনট্রোভার্সারী। উল্টোদিকে মুখ করে তাই কল রেজিস্টারে গিয়ে তন্ন তন্ন করে এন খুঁজে নক্সনাকে ফোন করি। ক্রিং ক্রিং... সেইখানে চরম ব্যস্ততা অথবা
গভী্র ঘুমের ভেতর থেকে নক্সনা কলটা পাঁচ
বছর পর রিসিভ করে। জিজ্ঞাসা করে, দিদি তুই এত ঘন ঘন ফোন করিস কেন? আমরা তো ভালোই আছি...
শোনার পর আমার মনে হয়,
কিন্তু আমি তো ভালো নেই! কেবলই পয়েন্টলেশ একগুঁয়েমিতে ভুগছি। কেবলই
মনে হচ্ছে বিগত কুড়ি বছরে
নক্সনাকে এখন কেমন দেখতে হয়েছে? কতটা মোটা অথবা কতটা রোগা?
আর কিছু বলার আগেই ও
আবার বলে, দিদি এখন নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় নেই। তোকে পরে ফোন করব, বলেই লাইন কেটে
দেয়।
ম্ ম্ ...তার মানে ওও
আমায় আইডিয়া বদলে নিতে ইঙ্গিত দিচ্ছে!
বেশ, এরপর যার সঙ্গে
কথা বলব আর তাকে কিছুতেই নিজের আয়ত্বে বেঁধে রাখব না। পাখির মতো গাছের মতো অথবা
স্ববিরোধের মতো।
সম বলল, কার সঙ্গে কথা
বলছিস, সেটা বড় কথা নয়। কী করে কেন কথা বলতে চাইছ সেটাই মোদ্দা কথা। যুক্তি
সাজানোর পদ্ধতি।
আমি জানতাম মানুষই কথা
বলে। পাখি গান গায়। মেঘ গর্জন করে। এর পেছনে আবার যুক্তি কেন? সম অনেক বই পড়েছে। বলল, বইয়ে এমন আছে।
-একটু ভালো করে বুঝিয়ে
দে!
-তুই কথা বলতে গিয়ে
ভালোবেসে ফেলছিস। দুটো আলাদা জিনিস। যে কোনো একটা কর।
-আমি তোকে ভালোবাসি
সম, তাহলে লাইনটা কি রেখে দেব?
-তোর প্রেমিকদের কথা
বল!
-আমার প্রেমিকেরা সব
অবসিলিট হয়ে গেছে।
-তাও আবার বল!
-সম আমার এতগুলো প্রেমিক
ছিল জেনেও তোর রাগ হয় না?
-না। একজন
মেয়ের অনেক প্রেমিক থাকলে মেয়েটাকেই
আরো ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।
-তার মানে সম তোর
বন্ধুদের প্রেমিকাদের আরো অন্য প্রেমিক নিশ্চয়ই আছে...
-থাকতে পারে। ঠিক জানি না।
ভেবেচিন্তে সেলফ্ কাউন্সেলিং করে আমার যত্নে
ভাবা চিন্তাগুলোকে সত্যি মিথ্যে দিয়ে একাকার করে ফেলি। সত্যি এই, সমকে আমার ভীষণ
কাছে পেতে ইচ্ছে করে। ছুঁতে ইছে করে। মিথ্যে, ওকে আমি ভুলে যাই। একবার
মনে হয় সমকে নিয়ে যদি একটা
গল্প লিখি, ঊর্দুতে অনুবাদ হয়, ওরা কি গল্পটাকে দীদার ইয়ে ইয়ার নাম দিয়ে ছাপবে?
ওরা কি জানবে আমি আমার সমস্ত রকমের ক্ষরণ সমকে গোপনে দান করে দিয়েছি? আইডিয়া বদলে
নেব?
ঘুরপাক খেতে খেতে
তন্ময় হয়ে টিভির দিকে তাকিয়ে থাকি। অভিষেক কথা বলছে। অভিষেক হাসছে। আমি আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে যাই। মহাকাশে
বেলুন ভাসছে একা
অভিষেককে নিয়ে। আমি শুকনো বেলপাতা ভরা কাল্পনিক মাদুলি হাতে বেঁধে ডিম পেঁয়াজ আলু
ফুলকপি দিয়ে ঝোল রাঁধতে বসি। ঝোলে
নুন কম হয় চিনি বেশি। ধাতানির
ভয়ে নুন দিতে গিয়ে আবার চিনিই দিয়ে ফেলি। মাদুলি কাজ করল না।
স্ক্রীন থেকে অভিষেক চলে গেছে। সমকে ফোন করতেই ও বলে, ঐশরিয়া কেমন একটা
পাজী মেয়ে দেখেছিস? এমন একটা লোকের পেছনে দৌড়চ্ছে যে নাকি কোনোদিন তার প্রেমিকাকে
পাত্তাই দিল না...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন