কালিমাটির ঝুরোগল্প |
কুমীর কুমীর
ক্রমে আরেকটা গরমকাল শুরু হল। সেটা টের পেলাম
পাখার হাওয়ায় ঘড়ির টিকটিক শব্দ হঠাৎ মিলিয়ে যাওয়ায়। এই শাব্দিক খাওয়া-খাওয়ির
মধ্যে আমার মনে পড়ল আজ কোনো নেমন্তন্ন নেই। ঘন্টা বাদে পড়ে থাকা গ্যাসের
ওষুধগুলোর জন্মদিন। গতবছর এইদিনেই তো কিনে এনেছিলাম ঠিক দত্তক নেওয়া ছেলের মতো।
মোমবাতি ছিল না তাই তেতলার ঘরে চুপিচুপি আড়াই টাকার সিগারেট জ্বালালাম। গত ক'দিন
ধরে আমার খুব কেমিস্ট্রি পড়তে ইচ্ছা করছে। ইনঅরগ্যানিক ভাংচুরগুলো নাড়িয়ে দেখার
জন্য, নাকি না শিখেই পাশ করে যাওয়া বিষয়ের প্রতি মূল্যবোধ জাগিয়ে নিতে, ঠিক
বুঝতে পারছি না। তা সে মূল্যবোধে আড়াই
টাকায় জ্বলা আগুন সোজা ক্যাঁতা থেকে শিফ্ট করল। কেবল আমিই মায়ের পেট দখল করার
সাহস দেখিয়েছিলাম তাই আনকোরা কাঁথা আমার অয়েলক্লথ ছাড়ার পর সোজা ঢুকে গেছে
বাক্স প্যাঁটরার কোন গভীরে। পরতের পর পরত জমতে থাকলো আর ওই কাঁথা ছাড়াই অঢেল শিশু
বড় হল, বিয়ে হল কিংবা হল না, সন্তান হল কিংবা ক্যাঁতা সেলাইয়ের চিন্তা নিয়ে
তারাও বুড়িয়ে গেল। এরকমই চিন্তা হতো ইংরাজি ছড়া মুখস্থ না হলে। তখনই মনে পড়তো ত্রাতার কথা। ত্রাতার কোনো লিঙ্গ
নেই, তবে যখন বুকের মধ্যে শরীরটা ছেড়ে
দিতাম ঠিক বুঝে নিত উৎস ও মোহনা। আলগা গায়ের পর বগল কাটা জামা শব্দদুটো একই ভাবে
মিলিয়ে গেছিল কোনা এক গ্রীষ্মের ছুটিতে। নতুন পাখার তলায় শুয়ে শুয়ে আর কুমীর
কুমীর খেলা হল না।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন