প্রতিবেশী সাহিত্য
ক্রিস্তিনা পেরি রোসসি’র
গল্প
(অনুবাদ : জয়া চৌধুরী)
পরিচিতি : ১৯৪১ সালে উরুগুয়ের মন্টে ভিডিও
শহরে জন্ম হয় লেখক অনুবাদক ক্রিস্তিনা পেরি রোসসির। ৩৭টি গ্রন্থের প্রণেতা এই
মহিলা সাহিত্যিক ১৯৭২ সালে সে দেশের মিলিটারি শাসনের সময় পালিয়ে যান স্পেন দেশে।
১৯৭৫ সাল থেকে সেখানেই নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি বার্সিলোনাতেই থাকেন ও
কাতালুনিয়া রেডিওতে সাংবাদিকতা করেন। ২০০৬ সালে রেডিওয় কাতালান ভাষার বদলে
স্প্যানিশ ভাষা বলার জন্য তাঁকে চাকরি
থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং তারপরে বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে সসম্মানে ফিরে
আসেন পুরনো চাকরিতে। ২০০৪ সালে লেখা ‘এস্ত্রাতেখিয়াস দেল দেসেও’ বা ‘কামনার
স্ট্র্যাটেজি’ উপন্যাসটি ইংরিজীতে অনুবাদ করেন লেখিকা তাতিয়ানা দে লা
তিয়েররা।
LA
NATURALEZA DE AMOR (প্রেমের স্বভাব)
একজন পুরুষ এক নারীকে ভালবাসে।
কারণ সে মনে করে নারী তার চেয়ে ওপরে অবস্থান করে। বাস্তবে এরকম পুরুষের ভালবাসার
ভিত্তিই হল নারী তার চেয়ে উন্নত এই বোধ। যেন সে নিজের চেয়ে নিচু বা নিজের সমান
কাউকে ভালবাসতে পারবেই না। কিন্তু মেয়েটিও ভালবাসে। এই অনুভূতিতে সে যদি সন্তুষ্ট
হয়েও থাকে, তার আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করে ছেলেটি। অন্য দিকে একটা বিপুল অনিশ্চয়তা
সৃষ্টি করে। বস্তুত মেয়েটি যদি ছেলেটির চাইতে উন্নতই হয় তাহলে সে তো ভালবাসতে পারে
না। কারণ পুরুষটি তার চেয়ে অনুন্নত। অতএব, হয় মেয়েটি মিথ্যে বলে যে সে ভালবাসে
অথবা সে পুরুষটির চেয়ে উন্নত নয়। সুতরাং মেয়েটির প্রতি ছেলেটির নিজস্ব ভালবাসা
বিচারের ভুলের কারণে যথাযথ হয় না।
এই দ্বিধা ছেলেটির মনে সন্দেহ
জাগায়, তাকে জর্জরিত করতে থাকে। তার নিজের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার ওপর
অনাস্থা জন্মায় - (মেয়েটির সৌন্দর্য সম্বন্ধে,
নৈতিক যথার্থতা বিষয়ে, বুদ্ধিমতা সম্পর্কে)। এবং একজন নিরস্তিত্ব কোনো প্রাণীকে
কল্পনা করেছে বলে মাঝে মাঝে সে অভিযোগ জানায় তার কল্পনাশক্তিকে। যাইহোক সে ভুল করে
নি - মেয়েটি সুন্দরী, জ্ঞানী এবং সহ্যশীল, পুরুষটির চাইতে
বেশীই। অতএব সে তাকে ভালবাসতে পারে না। তার প্রেম একটি মিথ্যা বিশেষ। এখন বাস্তবে
সে যদি চেষ্টাই করে, একজন মিথ্যেবাদী হতে, ভন্ড হতে, মেয়েটি সেক্ষেত্রে নিষ্ঠাবান
শ্রেষ্ঠ পুরুষটির চেয়ে উন্নত হতে পারবে না। এভাবেই দেখা যাচ্ছে সে যাকে ভালবাসছে
তার নীচত্বের কারণে তার সমান হতে পারছে না। যাইহোক ছেলেটি মেয়েটির প্রেমে পড়ে।
নিঃসঙ্গ বোধ করে ছেলেটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঠিক করে মেয়েটির কাছ থেকে আলাদা হয়ে
যাবে। তার অনুভূতিগুলোকে বুঝে নিতেই হবে ঠিক কীনা। আপেক্ষিকভাবে দেখা যায় মেয়েটি ছেলেটির সিদ্ধান্ত
স্বাভাবিক হিসাবে মেনে নেয়। আর সেটিই ঘুরে ফিরে তার দ্বিধাই বাড়ায় আবার। অথবা সে
অনিশ্চয়তায় ছেলেটি যেমন মেয়েটিকে উন্নত মনে করে চুপিচুপি সেরকম উন্নত হতে বেশ
চেষ্টা করে। তখন তার প্রেম যুক্তিযুক্ত হয়। ছেলেটির প্রেম মেয়েটির সঙ্গে সঙ্গে
সমান তালে দৌড়ায় ও তাকে ক্ষমা করিয়ে দেয়। কিংবা মেয়েটি তাকে ভালই বাসত না। তাই
আলাদা হওয়ার এই সিদ্ধান্ত মেয়েটিও নির্লিপ্ত ভাবে মেনে নেয়। এইবার পুরুষটির ফিরে
আসা উচিৎ নয়।
অবসর নেবার পরে গ্রামে পুরুষটি
একা একা দাবা খেলে সময় কাটায়। অথবা লাইফ-সাইজ পুতুল নিয়ে সময় কাটায় যেটা সে নিজেই
কিনে এনেছিল।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন