কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮

ওবায়েদ আকাশ




আরণ্যক গ্রীবায়

পোশাকের অন্ধকার থেকে বিশ্বাসের নৈকট্য
স্পষ্ট দেখা যায়

তথ্যসূত্র পেরুলেই সরোবর
হাঁসগুলো কানায় কানায় উৎসব

ছাতিম গাছের নিচে পর্যটনের জিভ
চেটে নিচ্ছে নাগরিক ধুলো
কফিশপ থেকে টিম টিম করে
বেরিয়ে পড়েছে হারিকেনের রোদ
মুখের গরিমা নিয়ে মহাকাব্যিক
সন্ধেটুকু হামলে পড়েছে ফুটপাতে

হ্রস্বদূর মাড়িয়ে আসা দুটি পথের মহত্ত্ব
পিচভর্তি ধুলোয় নামাঙ্কিত হলো

পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বিশ্বাসের নৈকট্য ঠিক
কত দূরে?

মৌপোকাদের ক্লাসে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের
অনেক গল্প শুনেছি


ট্রেন

ট্রেনটি গাছে ওঠার ছলে
তোমার আমার মাঝখান দিয়ে দাঁড়িয়ে গেল

আর দু’পাশের দরজাগুলোয় ঝোলানো থাকল
উভয়ের জন্য অভ্যর্থনা

অভ্যর্থনার মুখ একবার অতলে একবার ইথারে
শ্বাস গ্রহণে ব্যতিব্যস্ত বলে
তারা আমাকে দেখতে পাচ্ছে না

আর যতবার ট্রেনের এপার থেকে ওপার
তোমার দিকে হাত বাড়িয়েছি
ততবার কিছু প্রকাণ্ড জাহাজ
আমার জন্য বয়ে এনেছে সামুদ্রিক সম্মাননা

সকলে যা জানে, এই ট্রেন
কখনো তোমার বাড়িতে কখনো আমার বাড়িতে
নিশ্চিন্ত দৌড়ঝাপ করে কাটিয়েছে তাদের
প্রেমিক-কৈশোর, বিকল্প শিশুবেলা

আর তুমি আমি এই ট্রেন কাঁধে করে
পাহাড় সমুদ্র প্রপাত নিমিষে ঘুরেছি

দু’চোখে অজানা ভ্রমণ সাজিয়ে, একদিন
বিভোরে ছুটতে দিয়েছি অবিশ্বাস্য অনুগত ট্রেন


উচ্চারণ

তুমি কী  করে বলছ এবং
নিঃশব্দ গাছের ব্যাকরণ নিয়ে ভাবছ

তোমার বলার স্পর্ধা একদিন
যে কোনো বৃক্ষের আত্মজীবনী হবে

এমন দিন আসছে যেদিন
নৈঃশব্দ্য ছাড়া আর কিছুই বরাদ্দ থাকবে না
এখন তবু ফিসফিসিয়ে কিছু বলছ

আর বৃক্ষ তো সেটাও বলে না

তোমার কথা বলার নিঃশব্দ
বৃক্ষভঙ্গিমা
বলো সেটাও কাটাকুটি হবে?

আর অবশিষ্ট ইশারা ভঙ্গিমা
প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে বলো
দু’পায়ে কতটা দাঁড়াবে!


সুখ

তুমি সুখী হও
আর আমাকে সুখী হতে প্রার্থনা করো না

আমি চমৎকার গদ্যের ভেতর থেকে
ঈশ্বরের অসুখ অসুখ আর্তনাদ
অনায়াসে আবিষ্কার করেছি

এবং তার তাবৎ সৃষ্টিকে
আর্তনাদের নিশ্ছিদ্র লক্ষ্যে দাঁড়াতে দেখেছি

নদী তো মুক্ত নয়
প্রতিদিনের দখল-ধকল আর
সামুদ্রিক আগ্রাসন থেকে
মাছেরা সুখী নয়
জলস্তরে মাৎস্যন্যায় আর
কৈবর্ত সংসার ভালবেসে

তুমি সুখী হও
পর্যটকের পায়ের নিচে পিষ্ট হওয়া
সৈকতের অভিন্ন আর্তনাদ শুনে
মুক্ত কয়েদির মতো সুখী হওয়া
মোটেও তো সাজে না আমার

তুমি সুখী হও
আমি বহুতল ভবনের চূড়ায়
বিবিধ সুখের আবাসন ঘুরে
চিরটাকাল অসুখী থাকার
এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি

আদতে তা পারি না কারণ
নিঃশর্ত সুখী হতে
প্রতিটি মানুষকে আমি সুখ সুখ করে
আগুনে হাঁটতে দেখেছি



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন