কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১ জুলাই, ২০১৮

শুভলক্ষ্মী ঘোষ




ভয়


-   হ্যাঁ রে সাবিত্রী, তুই ফ্যান না চালিয়ে কাজ করতে পারিস না, না রে? এ মাসে কত টাকা ইলেকট্রিক বিল এসেছে খবর রাখিস? – মাথার ভিজে চুল মুছতে মুছতে ইন্দ্রাণী ঝাঁঝিয়ে বলে উঠলেন।
-   কী বলছো গো বউদি!! ফ্যান?... আমি?... কোই!
-   তুই নয় তো কে? আমার স্পষ্ট মনে আছে ডাইনিং স্পেসের ফ্যান অফ করে  আমি স্নানে গেলাম, আর এখন এসে দেখছি ফুল স্পিডে ফ্যান চলছে!  
-   বিশ্বাস যাও গো বউদি, আমি সেই থিকে রান্নাঘরের বাইরে যাই নিকো! ঐ কিছুক্ষণ আগে দাদাবাবু খাবার টেবিলে এসি বসলেন, বললেন চা দিতি, তখন মনে হচ্ছে পাখাখানা ছেড়ে দিছেন।
-   চুপ! আবার মুখে মুখে তর্ক! একটু আগেই তো আমি অনির্বাণকে চা করে দিয়েছিলাম। আবার চা কী রে? বাজে কথা বলার যায়গা পাও না! যাও রান্নাগুলো  ঢেকে, ঘরগুলো মুছে ফেল। অনেক বেলা হয়ে যাচ্ছে।  

রবিবার আজ বাড়িতে একটু বেশি’ই রান্নাবান্না। এরপর অল্প ঝাড়াঝুড়ি সেরে ঘর মুছে সাবিত্রীর ছুটি। রান্নাগুলো ডাইনিং টেবিলে গুছিয়ে সাবিত্রী ন্যাতা আর বালতি নিয়ে শোয়ার ঘরে ঢুকল। ফ্যান অফ করে ইন্দ্রাণী বারান্দায় বেরিয়ে এলেন, মোছা হলে আবার ঢুকবেন। নিজেরা না থাকলে ঘরের ফ্যান-লাইট জ্বালিয়ে অপচয় ইন্দ্রাণীর কোনোদিনই পছন্দ নয়   

ঘরের মধ্যে জ্যৈষ্ঠ মাসের ভ্যাপসা পচা গরম ঘুরপাক খায়। সাবিত্রী মন দিয়ে ঘর মুছে চলে শোয়ার ঘরের পর বসার ঘরমাথার খোঁপা বেয়ে নেমে আসা ঘামে সারা পিঠ  ভেজা। রং ওঠা ব্লাউস বুকে সেঁটে রয়েছে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভিতরে ব্রা নেই। অনেক খানি খোলা পিঠ, সরু কোমর, চিক চিক করছে ঘাম আষ্ঠেপৃষ্ঠে গায়ে জড়ানো ভিজে ন্যাতার মত ছাপা শাড়িখানা হাঁটু্ অব্দি তোলা। আঙ্গুলে চড়া রঙের নেলপালিস আর  লাল আলতা মাখা পায়ের গোছ বেরিয়ে আছে। ঘামে ভেজা কালো ছিপছিপে মেদহীন শরীরখানা এঁকেবেঁকে ঘরের মেঝেতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক থেকে ওদিক 
   
আজ রবিবার। অনির্বাণের অফিস ছুটি। সারাদিন বাড়িতে ফোন নিয়ে এঘর ওঘর হাঁটাহাঁটি করছে। ইন্দ্রাণীর কী জানি কী মনে হল, ঝটপট ঘরের ফ্যান আর এসি দুটোই চালিয়ে দিলেন


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন