সুহাসিনী
আশ্চর্য ভঙ্গিমায় মেয়েটা একটা স্ট্রবেরি
আর একটা মেয়ের নাভিতে রাখে। মেয়েটার চুল নানা বর্ণে রাঙানো, ঠোঁট একচিলতে মনিহার। মেয়েটা ঠোঁটে হুইপ ক্রিম মেখে আবেশি ঢঙে ঈষৎ ফাঁক
করে পাশে শোয়া অন্য মেয়েটার নাভি থেকে তুলে নেয় কামার্ত ধ্বনিতে। মেয়ে দুটো গভীর যত্ন করে
পরস্পর চুমু খেতে থাকে শব্দ করে।
সুহাসিনী বড় চোখ করে টেলিভিশনের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকে। কোথায় কেমন যেন আবেশ ছড়িয়ে যায়। একটা নিরুপম অনুপম প্রজাপতি ওর চিবুক থেকে মনে হলো নিচের দিকে সেলাই কলের মতো নামতে থাকে। সুহাসিনী টেলিভিশনের চলচ্চিত্রের দিকে আকুল মনপ্রাণ ঢেলে দেয়। পর্দার মেয়ে দুটোর আকুল পাগলপাড়া আদর ওকে স্পর্শ করে। সুহাসিনী ধীরে ধীরে বিবস্ত্র হতে শুরু কর।
মা লিভিংরুম থেকে রান্নাঘরের দিকে যাচ্ছিলেন। সুহাসিনীর ঘরে কোনো দরোজা নেই বলে ওর কোনো প্রাইভেসি নেই। মা সব সময় সুহাসিনীকে চোখে চোখে রাখেন। হঠাৎ তাঁর চোখ আটকে গেল, দেখলেন টেলিভিশনের পর্দায় এই শারীরিক কমলালেবুর ঘ্রাণ।
সুহাসিনী বড় চোখ করে টেলিভিশনের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকে। কোথায় কেমন যেন আবেশ ছড়িয়ে যায়। একটা নিরুপম অনুপম প্রজাপতি ওর চিবুক থেকে মনে হলো নিচের দিকে সেলাই কলের মতো নামতে থাকে। সুহাসিনী টেলিভিশনের চলচ্চিত্রের দিকে আকুল মনপ্রাণ ঢেলে দেয়। পর্দার মেয়ে দুটোর আকুল পাগলপাড়া আদর ওকে স্পর্শ করে। সুহাসিনী ধীরে ধীরে বিবস্ত্র হতে শুরু কর।
মা লিভিংরুম থেকে রান্নাঘরের দিকে যাচ্ছিলেন। সুহাসিনীর ঘরে কোনো দরোজা নেই বলে ওর কোনো প্রাইভেসি নেই। মা সব সময় সুহাসিনীকে চোখে চোখে রাখেন। হঠাৎ তাঁর চোখ আটকে গেল, দেখলেন টেলিভিশনের পর্দায় এই শারীরিক কমলালেবুর ঘ্রাণ।
দৌঁড়ে এসে ঘরে ঢুকলেন মা। মুহূর্তে টেলিভিশনের
চ্যানেল পাল্টে দিলেন। ধমক দিলেন মেয়েকে।
: সুহা, কী দেখ এসব? ছি...
সুহা রেগে যায়। গোঙানোর শব্দ করে হাতের কাছে একটা পানির বোতল ছিল, ছুঁড়ে মারল সামনের দেওয়ালে । সুহাসিনী রেগে গেলে গোঙায়, আরও বেশি করে লালা ঝরে মুখ থেকে। ঠোঁটের বাম দিকটা খানিক বাঁকা...
: সুহা, কী দেখ এসব? ছি...
সুহা রেগে যায়। গোঙানোর শব্দ করে হাতের কাছে একটা পানির বোতল ছিল, ছুঁড়ে মারল সামনের দেওয়ালে । সুহাসিনী রেগে গেলে গোঙায়, আরও বেশি করে লালা ঝরে মুখ থেকে। ঠোঁটের বাম দিকটা খানিক বাঁকা...
মা সারাক্ষণ হাতে রুমাল ধরিয়ে দেন সুহাকে। সুহা কখনো রাখে, কখনো রাখে না।
সুহাসিনী ওদের বাবা মায়ের প্রথম সন্তান। খুব আনন্দে ওর নাম রেখেছিলেন সুহাসিনী। চার বছরের মাথায়
টের পান যে মেয়েটি জড়বুদ্ধিসম্পন্ন। জন্মকালীন ত্রুটি। চেষ্টা কম করেননি। কত ধরনের
ডাক্তার দেখানো হলো। সুহাসিনীর কোনো পরিবর্তন নেই।
বয়স বাড়তে থাকে, মেয়েটার নানা ধরনের উপসর্গ বাড়তে থাকে। সারাক্ষণ মুভি দেখবে। ক্ষণে ক্ষণে তার বায়না। মা হাঁপিয়ে ওঠেন। আর পারেন না। সবচেয়ে যন্ত্রণাময় মুহূর্ত হলো, সুহা রেগে গেলে হাতের কাছে যা পায় তা অন্যের গায়ে ছুঁড়ে মারে। তখন সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়, ঠাস ঠাস চড় মেরে বসেন। মেয়ে আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে।
মা বাবা মাঝে মাঝে মেয়েকে এরকম ছেলেমেয়েদের জন্য স্পেশালাইজড হস্টেলে রেখে আসেন। রেখে আসার পর আবার মা কান্নাকাটি করেন, মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন বাসায়। সুহা পুরো বাড়ি ধপধপ করে হেঁটে বেড়ায়।
সুহা কথা বলতে পারে না। এক ধরনের ধ্বনি করে শুধু। মুখ থেকে প্রায়ই লালা ঝরে বলে ওকে বাবা মা কোথাও নিয়ে যান না। বিব্রত বোধ করেন। মাঝে মাঝে মেযেটা জামাটামা খুলে ফেলে, মা কাঁদতে কাঁদতে পেছনে পেছনে দৌঁড়ান, জামা পরানোর জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন। এখন অবশ্য জামায় অনেকগুলো সেফটি পিন দিয়ে আটকে দেন, যাতে মেয়ে জামা কাপড় না খুলে ফেলতে পারে।
কাল রাতে খুব তুষার পড়ছিল। মেয়েকে একটা কার্টুন ছবি চালিয়ে দিয়ে মা ঘুমোতে গেলেন। বেশ রাত হয়েছে। আচমকা পাশের ঘর থেকে তীব্র গোঙানোর শব্দ ভেসে এলে মা আধো ঘুম থেকে উঠে ছুটে গেলেন মেয়ের ঘরে।
মেয়ে অদ্ভুত ভয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাজামা নেই পরনে। মেঝেতে ছোপ ছোপ রক্ত। মা চমকে চিৎকার করে ওঠেন।
বয়স বাড়তে থাকে, মেয়েটার নানা ধরনের উপসর্গ বাড়তে থাকে। সারাক্ষণ মুভি দেখবে। ক্ষণে ক্ষণে তার বায়না। মা হাঁপিয়ে ওঠেন। আর পারেন না। সবচেয়ে যন্ত্রণাময় মুহূর্ত হলো, সুহা রেগে গেলে হাতের কাছে যা পায় তা অন্যের গায়ে ছুঁড়ে মারে। তখন সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়, ঠাস ঠাস চড় মেরে বসেন। মেয়ে আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে।
মা বাবা মাঝে মাঝে মেয়েকে এরকম ছেলেমেয়েদের জন্য স্পেশালাইজড হস্টেলে রেখে আসেন। রেখে আসার পর আবার মা কান্নাকাটি করেন, মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন বাসায়। সুহা পুরো বাড়ি ধপধপ করে হেঁটে বেড়ায়।
সুহা কথা বলতে পারে না। এক ধরনের ধ্বনি করে শুধু। মুখ থেকে প্রায়ই লালা ঝরে বলে ওকে বাবা মা কোথাও নিয়ে যান না। বিব্রত বোধ করেন। মাঝে মাঝে মেযেটা জামাটামা খুলে ফেলে, মা কাঁদতে কাঁদতে পেছনে পেছনে দৌঁড়ান, জামা পরানোর জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন। এখন অবশ্য জামায় অনেকগুলো সেফটি পিন দিয়ে আটকে দেন, যাতে মেয়ে জামা কাপড় না খুলে ফেলতে পারে।
কাল রাতে খুব তুষার পড়ছিল। মেয়েকে একটা কার্টুন ছবি চালিয়ে দিয়ে মা ঘুমোতে গেলেন। বেশ রাত হয়েছে। আচমকা পাশের ঘর থেকে তীব্র গোঙানোর শব্দ ভেসে এলে মা আধো ঘুম থেকে উঠে ছুটে গেলেন মেয়ের ঘরে।
মেয়ে অদ্ভুত ভয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাজামা নেই পরনে। মেঝেতে ছোপ ছোপ রক্ত। মা চমকে চিৎকার করে ওঠেন।
: সুহা সুহা পাজামা খুলেছ কেন? কি হয়েছে?
রক্ত কেন? কি করেছিস?
সুহা আর গোঙাচ্ছে না। ওদের এরকম শব্দে বাবাও ছুটে আসেন মেয়ের ঘরে। আচমকা মা বাবাকে ধমকে উঠলেন,
: তুমি এসেছ কেন? তোমাকে কে আসতে বলেছে? যাও এখান থেকে। যাও!
সুহা আর গোঙাচ্ছে না। ওদের এরকম শব্দে বাবাও ছুটে আসেন মেয়ের ঘরে। আচমকা মা বাবাকে ধমকে উঠলেন,
: তুমি এসেছ কেন? তোমাকে কে আসতে বলেছে? যাও এখান থেকে। যাও!
বাবা নীরবে চলে গেলেন। মা সুহাসিনীকে হঠাৎ টেনে নেন বুকে। হু হু করে কেঁদে
ওঠেন।
সুহা মায়ের এরকম আচরণের অর্থ বোঝে না। বড় বড় চোখে মায়ের কান্না দেখতে থাকে।
বাইরে সাদা সরীসৃপ তুষারে ঢেকে যাচ্ছে নাগরিক দালানকোঠা, মেকানিক কংক্রিট।
ল্যাম্পপোস্টের আলোতে তুষারপাত অপূর্ব জোছনাময় হয়ে ওঠে। ভারি রাস্তায় ভারি মানুষগুলো জোব্বায় ঢেকে কোথায় যেন চলে যাচ্ছে। এত রাতে মানুষ কই যায়?
মা কাঁদতে থাকেন হুড়মুড়িয়ে। অস্ফুট বিড়বিড় করে বলতে থাকেন,
: আমার মা বড় হয়ে গেছে। আমার সুহা বড় হয়ে গেছে...
এত অস্ফুট ধ্বনি যে পাশে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলেও শুনতে পেত না...
সুহা মায়ের এরকম আচরণের অর্থ বোঝে না। বড় বড় চোখে মায়ের কান্না দেখতে থাকে।
বাইরে সাদা সরীসৃপ তুষারে ঢেকে যাচ্ছে নাগরিক দালানকোঠা, মেকানিক কংক্রিট।
ল্যাম্পপোস্টের আলোতে তুষারপাত অপূর্ব জোছনাময় হয়ে ওঠে। ভারি রাস্তায় ভারি মানুষগুলো জোব্বায় ঢেকে কোথায় যেন চলে যাচ্ছে। এত রাতে মানুষ কই যায়?
মা কাঁদতে থাকেন হুড়মুড়িয়ে। অস্ফুট বিড়বিড় করে বলতে থাকেন,
: আমার মা বড় হয়ে গেছে। আমার সুহা বড় হয়ে গেছে...
এত অস্ফুট ধ্বনি যে পাশে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলেও শুনতে পেত না...
নামকরণের দ্যোতনায় লেখাটি অনবদ্য।
উত্তরমুছুন