কৈশোর ও আয়না (১)
কিছুই কেন চেনা দেয় না
গলা ভাঙে হৃদয় সুরে গায়
কালো কালো হাতে পায়ে কালশিটে তার হদিস পায় না
টিলা কখন পাহাড় হলো, গর্ত কবে খাদ!
গন্ধ কিছু অন্ধ করে
সঙ্গ কিছু কড়া মদের
তবুও তো সে জিরাফ হয়ে গলা বাড়ায়
জানালা তাকায় দূর
পতন যদি পতন ডাকে
চাইবে কাকে ডাকবে কাকে হাত?
সরে সরে যাচ্ছে শুধু পায়ের নিচের জমি
কুহক রাত
তার পরে কার পড়ছে ছায়া শক্তিশালী কেউ!
যদিও বুক ছোটই তবু আছড়ে পড়ে ঢেউ
ঈশ্বরী হে তুমিই ছিলে প্রথম নদী প্রথম জলের ছাঁট
পরে কত ছলাৎ ছলাৎ বৃষ্টি জুড়ে ভিজবে কত মাঠ
কী যে ছিলে, কী যা ছিলে তাও তো কিছু বোঝা যায় না
কৈশোর ও আয়না (২)
কী ভীষণ দিশাহারা তুমি কি জানো হে ঈশ্বরী?
তুমি আর সরিও না অন্ধকার, অন্ধকারই ভালো
অদ্ভুত কৈশোর জেনো চিরকালই অন্ধকার খোঁজে
কতজন হোমওয়র্কে কত মতো গন্ধ নিয়ে আসে
কখনো চিতার গন্ধ, কখনো মায়ের মার খাওয়া
অদ্ভুত রাতের গন্ধ, এরা সব রাত চিনে নেবে
একদিন ধীরে ধীরে, এরা আর অন্ধ থাকবে না
অথবা জন্মের মতো অন্ধ হয়ে শুধে যাবে ঋণ -
জীবনের!
তবু তুমি কী যে ছিলে কী যে ঠিক ছিলে!
এদের অন্ধকারে তোমার এমন দীর্ঘ ছায়া -
সে তুমিও কখনো চিনবে না।
জাতিস্মর
জাতিস্মর গিয়ে দেখে
ও বাড়িতে পাত উঠে গেছে।
তক্তপোষ পাতা হবে,
ধুলো পায়ে সে দাঁড়িয়ে না থাকলে
ভালো।
কাঁথাবোনা বুড়ি এক, যার চোখ চিকচিক
করে।
অশ্বত্থ গাছের নিচে খুব কালো এক পাখি কেঁদে ডেকে গেল-
কেউ দেখল না।
চোখ মুছে জাতিস্মর ফেরে
যে বাড়িতে এই-জন্ম
থালা আগলে আছে।
শেষমেশ
ছটফটে রোদ্দুর, ঝকমকে রোদ্দুর! তুমি যাও!
আমি এই চোখ সওয়া অন্ধকারে থাকতে থাকতে কেন
আলো খুঁজতে গেছি?
আমি কেন সিঁধ কাটতে গেছি এই দ্বিধাহীন জেল-এ?
ছটফটে রোদ্দুর, ঝকমকে রোদ্দুর! তুমি সিঁধকাটিটায় আলো ফেলে
আমায় ধরিয়ে দিয়ে যাও!
তুমি যাও তোমার খেলায়
আলোর একবগ্গা সিধে নির্দোষ নিয়মে
আমি এই জরাগ্রস্ত কুষ্ঠি জীবন নিয়ে মুখ লুকিয়েছি।
আমি দেখো টবের নিচের সব দিশাহারা পোকাদের মতো
সেঁধোতে ব্যস্ত ওই নিয়ামক শান্ত অন্ধকারে
তুমি আলো ফেলে তাই বিরস দৃষ্টিপাতে
যাও, চলে যাও, ফিরে যাও।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন