প্রতিবেশী সাহিত্য
রাজেশ জোশী’র কবিতা
(অনুবাদ : মিতা দাশ)
লেখক
পরিচিতিঃ জন্ম ১৮ জুলাই ১৯৪৬, নার্সিঙগড়, মধ্যপ্রদেশ। তাঁর কয়েকটি কবিতা
সংকলন, গল্প সংকলন ও নাটক প্রকাশিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি কবিতা ও গল্প বিদেশী এবং দেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি নিজে বিভিন্ন
ভাষার কবিতা অনুবাদ করেছেন । শিশু সাহিত্যও লিখেছেন। কয়েকটি পত্রিকার সম্পাদনার
কাজও করেছেন। সম্মান ও পুরস্কার অর্জন করেছেন
সাহিত্য একাডেমি, শ্রীকান্ত ভার্মা স্মৃতি সম্মান, পহল সম্মান, শমশের
সম্মান, মুক্তিবোধ পুরস্কার, মাখনলাল চতুর্বেদী সম্মান ও শিখর সম্মান।
মেরে ফেলা হবে
যারা বিরোধিতা করবে, কাঠঘড়ায় দাঁড় করানো হবে,
যারা সত্যি কথা বলবে, মেরে ফেলা হবে
বরদাস্ত করা যাবে না কোনও জামা ও কারুর জামা...
‘ওদের’ জামা থেকে বেশি উজ্জ্বল ও
দাগহীন জামা যার-যার, মেরে ফেলা হবে
ঠেলে দেয়া হবে ওদের শিল্প সাহিত্যের জগৎ থেকে বাইরে,
যারা চারণ না
যারা গুণগান করবে না, মেরে ফেলা হবে
ধর্মের ধ্বজা হাতে তুলে যারা যাবে না মিছিলে
গুলি বর্ষণে ওদের বিদ্ধ করা হবে, কাফির বলা হবে
সবচেয়ে বড় অপরাধ এই সময়
অস্ত্র ছাড়া থাকা ও নিরপরাধী হওয়া
যারা অপরাধী না
ওদের
মেরে ফেলা হবে।
অতিরিক্ত জিনিসের মায়া
বাজারে যাই দরকারি কোনো জিনিস
আনতে
কিন্তু গছিয়ে দেয়া হয় একটি আরো জিনিস একবারে মুফতে
সেই জিনিসের আমার কোন দরকারই ছিল না
কিন্তু নেব না’ও বলতে পারা গেল না
ব্যস সেই এক মুহূর্তেই আমি ধরা পড়ে গেলাম
সেই অতিরিক্তের জন্য দরকারি জিনিসগুলির মাঝে
একটু জায়গা করে নিলাম
দরকারি জিনিসের জায়গাটা একটু ছোট
হয়ে গেলো
অতিরিক্ত জিনিস মনের দুর্বলতাগুলি চিনে নেয়
লোভ ধীরে ধীরে পা ছড়াতে শুরু করে
একটি অতিরিক্ত অন্য আরেক অতিরিক্তকে ডাকে
আবার দ্বিতীয়টা তৃতীয় অতিরিক্তকে ডেকে
জায়গা করে দেয়
একদিন সব জায়গা
অতিরিক্ত দিয়ে ভরে যায়।
শাসক হবার ইচ্ছা
সেখানে একটি গাছ ছিল
সেই গাছে কিছু পাখিদের বাসা ছিল
পাখিদের সেই গাছটা একটি অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল
তারপর হঠাৎ একদিন পাখিরা
আকাশ মাপবার পর যখন ফিরল
দেখলো গাছটা সেখানে নেই
এরপরে একদিন পাখিরা সেখানে একটা দরজা দেখতে পেল
পাখিরা সেই দরজা দিয়ে আসা যাওয়া করতে লাগলো
এরপর সেই পাখিদের নজরে পড়ল সেখানে রাখা একখানা টেবিল
পাখিরা সেই টেবিলে বসে বসে নিজেদের ক্লান্তি দূর করত
এরপর পাখিদের নজরে সেখানে রাখা একটি চেয়ারের ওপর পড়ল
পাখিরা সেই চেয়ারে বসল
এরপর পাখিরা একটা দিব্যস্বপ্ন দেখে বসল
তারপর একদিন ওদের মনে
শাসক হবার ইচ্ছে জাগ্রত হতে লাগলো।
প্রত্যেক জায়গায় রয়েছে আকাশ
বলা ও শোনার মাঝে সে দূরত্ব রয়েছে
সেটা হল মাঝে আকাশ
আমি পেরেকে ঝোলানো শার্ট নামিয়ে গায়ে দিলাম
এরই ভেতর একটু আকাশ আমার ভেতর ঢুকে পড়ল
আমি জুতো পায়ে দিলাম
তখন আকাশ আমায় মোজার মত পায়ে গলিয়ে নিলো
নেলকাটার দিয়ে নখ কাটলাম
তখন আমি এক টুকরো আকাশও কেটে ফেললাম
আকাশ হল একটি অবিভাজিত বিতান
আকাশ যে কোন কোণ হতে শুরু ও কোথায় শেষ
আমি দরজা খুলে ঘরে ঢুকি ও সিঁড়ি ভাঙি
আর আকাশ গেঁথে চলি
আকাশ প্রত্যেক জায়গায় কিন্তু একটা অনুপ্রবেশকারী।
এই সময়টা
এখন মূর্তি বিসর্জনের সময়।
মূর্তি সব বিসর্জন হচ্ছে।
মাথায় শুধু নিস্তব্ধতা
মস্তিষ্কে নেই কোনো বিচারের ঘোরাফেরা
মনের ভেতরেও নেই কোনো ভাবনা।
কালো জলে শুধু মূর্তির মুকুট
ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে!
চমৎকার লেখা।এমন সব প্রদেশের লেখা পড়া খুব দরকার।।
উত্তরমুছুনভালো
উত্তরমুছুন