কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০

উমাপদ কর



কবিতা 



চাপা গোল


শিয়রে গ্লোব, বার বার চোখ চলে যায়
      ছিটকে আসে চোখে এক একটা দেশের রং
    চারভাগ নীল যদিও চোখ নরম করে রাখেও

এত বিউগল এত নাকাড়া এত পাশুপত রঙের বিবাদী রং
      মুহূর্তে সমস্তটা নীল যেন লাল অগোপন
   কামলা চোখ, ভুল দেখে, ভুল, যেন অসৎ লালচে

ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্থলপাতাবাহার জেগে থাকে দিন রাত
      মুগুরের ছবি আঁকে, পরিখা বানায় ডিনামাইট
   ন’বার শেষ করে দিতে পারে হা-হা হাসিভরা বাজিরাজ

তারচেয়ে ভালো সবটা নীল অপরাজিতায় ছেয়ে যাক
       ভেসে যাক যত নয়া সংস্করণের তোমর
    নতুন করে আরেকবার রং করা যাবে জলজাগা ভুঁইয়ে

গ্লোবটাই চোখ মেলে তখন কিছুটা আরাম নেবে শিয়রের কাছে



২০ সেপ্টেম্বর


২০ সেপ্টেম্বর আসছে
    কীভাবে কাটাবো দিনটা
আগে থেকেই তার একটা মুসাবিদা করে রাখা যেতে পারে।

ধরা যাক আজকের সূর্যে যে প্রভাত তার রং কমলা
       আরও ধরা যাক ৫৭ বছর আগে
     তুমি দু-পায়ে ঠেলছ মায়ের গর্ভাশয়
            আর জল-ভাঙার গোড়ায়
    অসহ যন্ত্রণায় কাতর তোমার জন্মদাত্রী প্রায় বেঁহুশ
                অথচ তোমাকে পথ করে দিতে হবে…

ধরা যাক আজকের দুপুরের রোদটা মেঘমাখা
      আর ফাঁকা বারান্দা জুড়ে তোমার পায়ের ছাপ
             কিছুদিন আগেই যা আলতায় রাঙিয়ে নেওয়া হয়েছিল
                    তুলট কাগজে
                        চলে যাবে কিনা!

আজ হয়তো আর সন্ধ্যাই আসবে না, বিকেলের কথাই ধরা যাক
       শ্মশান ফেরত অনেকের সঙ্গে তুমিও যে মিষ্টিটা মুখে নিয়েছিলে
           তাতে কে যেন পৃথিবীর সব নিমপাতা মিশিয়ে দিয়েছিল

ধরা-যাকগুলো বাদ দিয়ে এবারে সরাসরি জিজ্ঞাসা-- 
                       সে কি তুমিই ছিলে!



ফতুর


শূন্য হাতের কাছে এসে বলি— দাও
           মশাল জ্বলে ওঠে
      হাত থেকে হাতে, হাত ছাড়িয়ে
           জ্বলে নেভে, আবার জ্বলে ওঠে

শ্মশানের নীরবতা নীল
   সেখানেও মশাল আমার হৃদ্‌কম্পনে
           সরব হয়ে শ্মশান
   আমাকে দেয় প্রকৃত নীরবতা
        আর হাসতে হাসতে উল্লাসী মশাল বাতাসে আসমানে

ফিরিয়ে দিয়ে কী-ই বা সুখ
      ভরা ফেরায় না, এমনকি খুদকুঁড়োও!
          অর্জন উপার্জন আর সংগ্রহ
শূন্যকেই বাড়িয়ে চলে, স্থির উন্মাদনাহীন বসন্ত
      ফিরিয়ে দেয় যাচনা, আর আগ্রহ

যার কাছে চাই, শূন্য দেখে তার হাতে মশাল দিতে পারলে
          সত্যিই আনন্দ হতো
    উপার্জন অর্জন ঘেঁটে দেখি সেখানেও শূন্য জমা হয়ে আছে

বলি দাও, পরপরই বলে উঠি ফিরিয়ে দাও,
             বলি, মাইরি ফতুর হয়ে আছি।




10 কমেন্টস্:

  1. অপূর্ব কবিতা!এই কথা বলব না। যান্ত্রিক মতামতের কবিতা নয় এগুলো। এই কবিতাগুলো অনুরাগ-বিরাগের পথে খুঁজে পাওয়া কবিতা। যার প্রিমাইসেস লুকিয়ে আছে স্রষ্টা আর পাঠকের ইচ্ছাশক্তির ভিতরে।

    উত্তরমুছুন
  2. শব্দে শব্দে যাতনা ও মেনে নেওয়ার নৈর্ব্যক্তিক প্ৰকাশ l পাঠককের মনেও মেঘলা নামে ....

    উত্তরমুছুন
  3. চমৎকার উমাদা। অনেকদিন পর পড়ার সুযোগ হলো।

    উত্তরমুছুন
  4. যাদের কবিতা পড়লে কবির উষ্ণ উপস্থিতি টের পাওয়া যায়, আমার কাছে আপনি সমসময় সেই জাতের কবি। ভালো লাগল।

    উত্তরমুছুন
  5. যাদের কবিতা পড়লে কবির উষ্ণ উপস্থিতি টের পাওয়া যায়, আমার কাছে আপনি সমসময় সেই জাতের কবি। ভালো লাগল।

    উত্তরমুছুন
  6. অপূর্ব। তিনটি কবিতাই ভালো লাগলো।

    উত্তরমুছুন
  7. আজকের নববর্ষের সকালে আপনার কবিতাগুলো পড়লাম , সুনিপুনভাবে একটা সকাল কিভাবে একজন কবি নিজের মতো করে সাজিয়ে নিলেন , অবাক হলাম। একাধিক কবিতা যেহেতু তুলনা না এসেও আসে , ব্যক্তিগত ভাবে, ২০ সেপ্টেম্বর একটু বেশি আমায় ক্লিক করল যেন

    উত্তরমুছুন