কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০

ময়ূরিকা মুখোপাধ্যায়



ঝুরোগল্প 



আরেকটি প্রেমের গল্প?   
              

তাহলে সেই হিসেবে  'এক্স'এর মত করে ধরে নিলাম, এটা একটা প্রেমের গল্প। এবার যেহেতু পরীক্ষাটা শর্ট টেস্ট তাই, প্রশ্ন পত্রে, মোটামুটি একুশ-বাইশ পেরোনো একটা মেয়ে, আর তার চেয়ে একটু বয়সের একটি ছেলে থাকবে... মানে ধরে  নেওয়া যাক আছে। তো, এবার দুজনই ধরে নেওয়া যাক, দুজনকে চেনে। ওই আর কী... নাম-ধাম বা আনুষঙ্গিক কিছু টুকিটাকি। তো এবার, একদিন দেখা হল তাদের মধ্যে, কিছু প্রয়োজনীয় কথা হলো কি হলো না, কারোরই খুব একটা কিছু যায় আসে না ফিরে গেল যে যার মত বেঁচে থাকার জীবনে। ছেলেটা বরাবরের মত অভ্যস্ত হয়ে গেল পোড়া ফিল্টারে
 আর মেয়েটা...
এখানে বরং লেখক একটু ইমপ্রোভাইজ করুক। পাঠক ভেবে নিন যে, মেয়েটা  এককালে ছেলেমানুষের মত কবিতা লিখতো, আর মেয়েটার অনেকগুলো বদ-অভ্যেসের মধ্যে একটা হল চরিত্র খুঁজে বেড়ানো। এই পর্যন্ত মোটামুটি ঠিক আছে। এবার একটা ছোট্ট গন্ডোগোল হবে।
একটা অষ্টমীর দুপুরে, কিছুটা হঠাৎ করেই ছেলেটার সঙ্গে মেয়েটার দেখা হয়ে যাবে।  পাঠক কিন্তু একদমই ভাববেন না যে, আগের লাইনে অষ্টমী এসেছে বলে এবারে শাড়ি আসবে, কুঁচি আসবে, অঞ্জলি আসবে... না মোটেই তা নয়। আমাদের এই  গল্পের মেয়েটি মোটেই সে সবের বান্দা নয়।
যাকগে গন্ডোগোলের আঁচ দিয়ে গন্ডোগোল না বাঁধালে অধর্ম হবে। অষ্টমী যখন বলাই হলো, তখন বাণ্যিজিক স্বার্থে পাঞ্জাবীকে দিয়েই গন্ডোগোলটা করানো হোক। ছেলেটা বরং লাল পাঞ্জাবীই পরে আসুক, সাথে নীল জিন্স।  
তাহলে...
প্রথমত, অষ্টমী;
দ্বিতীয়ত, পাঞ্জাবী;
তৃতীয়ত, উত্তর কলকাতার গলি। কী পাঠক, কী ভাবছেন? ভেবেছিলেন মেয়েটির  চোখে মুখে একটা অন্য রকম হাসি দেখেই ওমনি রাইট হ্যান্ড সাইড ইক্যুয়ালস্ টু লেফট্ হ্যান্ড সাইড করে দিয়ে পাত্তারি গোটাবেন? আজ্ঞে না... আপাতত সেটা হচ্ছে না।  
এখনও তো বাগবাজারের ঘাটে সন্ধ্যে নামা বাকি।
ছেলেটার প্যান্টের পা গুটিয়ে গোড়ালি ডোবানো বাকি।
পড়ন্ত আলোয় সোনালি পুঁতির মত জলের বিন্দুদের ছেলেটার অলস পায়ে খেলা বাকি...

আর বাকি মেয়েটার সেসব দেখা। টুক করে চাবিটা খুলে, ভেতরে সে সব রেখে দেওয়া।
মেয়েটার তারপর হয়তো  হঠাৎ ইচ্ছে করবে আবিষ্কারের। ছেলেটা পারটিকুলারলি একটা অষ্টমী ছাড়া কীভাবে পাঞ্জাবীর হাতা গোটায়, সেটা দেখার। মেয়েটা ওর  আরেকটা বদ-অভ্যেসবশত আবার দিনের শেষে, একটু একটু স্বপ্ন দেখবে...
হারিয়ে যাবে?

হয়তো হারাবে না, শুধু ট্রেনের কামরার কিছু ফিরতি হাওয়া একটু একটু মনখারাপ উস্কে দিয়ে যাবে
আর ছেলেটা!  
ছেলেটা আর কী... ক্লান্তি সাজিয়ে রাখবে অ্যাস্ট্রেতে। আর রিং-ব্যাক করবে মেয়েটাকে।
কী পাঠক, আবার চেষ্টা করছেন মিলিয়ে দেওয়ার? আরে, ওটা একটা বাধ্য মিসড্ কল ছিল...   
পরিকল্পিত...
সমান্তরাল রেখায় চলতে চলতে আবার হয়তো কোনও একদিন দেখা হবে ওদের। কোথাও কোনও গল্প হয়তো তৈরি হবে বা হবে না কিন্ত রক্ত মাংসের মানুষ? কী জানি!


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন