উমিয়াম ড্রাইভ
রাস্তাটা রোজ চলে যায়। অমল জানলা দিয়ে তাকিয়ে থাকে। একদম
সিধে। চলতে চলতে রাস্তাটা যে কোথায় হারিয়ে যায়, ও বুঝতেই পারে না। রাস্তার সঙ্গে
পাখিরাও চলে যায়, পাহাড়গুলোও, এমনকি পাইন গাছেরাও। চার বাই চার জানলা দিয়ে অমল
দেখার চেষ্টা করে রোজ এরা কোথায় যায়, কিন্তু কোনদিন বুঝতে পারে না।
অনেকদিন আগে এক দইওলা ওকে বলেছিল, এই রাস্তাটা নাকি চলতে
চলতে উমিয়াম বলে একটা লেকে গিয়ে পড়েছে। তারপর? সেটা আর দইওলা বলেনি। লেকে পড়ে কি
রাস্তাটা ডুবে গেল? নাকি আবার অন্যদিকে উঠে পড়ল? রাস্তাটা এদিকে আবার ফিরে এল না
কেন? অনেক প্রশ্ন। অথচ দইওলা আজকাল আর আসেই না।
হু হু করে চলে যাওয়া গাড়িগুলোকে অমল হাত দেখায়, কেউ থামে
না। সবাই ব্যস্ত। রাস্তার
ঠিকানা জানতে অমল রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোষ্ট গুনতে শুরু করে। চোখের ওপর হাত রেখে
যতদূর অব্দি বহুদূর থেকে ভাসা সন্ধের টিমটিমে আলো। রোজ সেই
সংখ্যা বদলে যায়। তাহলে কি ল্যাম্পপোষ্টরাও রাস্তার সঙ্গে চলে যায়?
অমল জানে ওর জন্য কেউ বসে থাকে না। রোজ ও রাস্তাকে জিজ্ঞেস
করে, তুমি কি ফিরে আসবে? কোন উত্তর আসে না। পাইনের পাতাগুলো একে একে চলে যায়, তারপর গাছগুলো, তারপর
পাহাড়। কেউ বলে না লেকের জলে ঘুমভিজে উঠে রাস্তাটা চলতে চলতে ওর সামনে আবার কবে
আসবে।
অমল বসে থাকে। সেই পুরনো রাস্তার আশায়।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন