বিপরীতমুখী
উপমারা তফাতে দাঁড়াও, পড়ছি পাণ্ডুলিপি;
একাগ্র চিমনীর ধোঁয়া ছুঁয়েছে
আকাশ;
লিখছে অজানা কথা ত্রিমাত্রিক
ক্যানভাসে।
কেন উঠে আসে তোমাদের
আপত্তিমিছিল?
কোন সন্ধানে আসে?
আমি তো আমারই মতো!
হৃদয়ের দুই তীর প্রাক্তন
গ্রাম আর আপেল বাগান!
কী নামে ডাকবে তাকে
তোমাদের বিচার্য বিষয়;
রয়েছি নিজের মতো কিছুটা
মগ্ন আর ঈষৎ
প্রকাশিত আত্মকোলাহলে, নিজ
হলাহলে।
ঘাস নদী প্রান্তর আকাশ
ডুবে গেলে জলজল
অন্ধকার জন্মায়, সাঁতার কাটি
সে জলে বিম্বমুগ্ধ
ঈশ্বরগামী বুনো হাঁস হয়ে। ঘাটেও কেলি করি দুই
বিপরীতমুখী আমি, রাজতনয় এবং
ধীবর রমণী।
কাকে
কাকে তুমি তাড়িয়ে দিলে
বলো?
যে খুঁজেছে আশ্রয় তোমার
কাছে,
সর্বশেষ খেয়া পারাপার?
শর্তহীন বিষুবরেখার মত
দহন ছিল
তোমার গণ্ডীতে আর সে
বালক দেখেছে
উজ্জ্বলতা শুধু।
ছুটে গেছে বার বার,
ঘরভাঙা একাকী পাখি
যেমন খোঁজে আশ্রয়ডাল।
গাছের কাছে যে বালক
আশ্রয় খোঁজে,
গাছ ফেরায়
না তাকে কখনও,
সামান্য মানুষ তুমি, সরিয়ে
নিলে হাত!
একটু আড়াল পেলেই জোরালো
হয় যে সব দীপশিখা,
কেন তাদের প্রতি তোমার
এতটাই ঘৃণা?
আসলে কি ভুলতে চাও
নিজের সে সব দিন-
বাঁচার সংগ্রাম?
কোন কোন অন্ধকার
কোন কোন অন্ধকার বড়
প্রিয়,
আকুলি বিকুলি তার জন্য;
এহেন যতিচিহ্ন তুমি ধরেছ
গভীরে
ভ্রমণগন্ধ মেখে উড়ে যায়
অট্টালিকা,
চাষআবাদ স্থাবর অস্থাবর বিষয়
আসয়।
এই যে তেপান্তরে বারবার
আসো কবি,
কী পাও, কী পাবে
আকুলিবিকুলি স্বপ্নের মুখোস যে
কোথায় লুকিয়েছ?
অন্ধকার চলে গেলে, প্রভাতে
যাবে কার আশ্রয়ে?
কেন যে!
কেন যে কাঁদাও তুমি
প্রতিটি সকালে,
নিজের যন্ত্রণা বোঝ? বোঝ
না,
অথচ কাঁদি আমি তোমার
রক্তপাতে।
প্রতিটি সকাল জুড়ে তোমার
কান্নাগুলো সঙ্গীত
হয়ে যায়, ভাসে আকাশের
অনন্ত নন্দন বনে,
আমি ভাবি দুঃখবোধ যদি
না থাকে কারও
সে থাকে কী পরম
আশীর্বাদে!
আমাদের ছোটখাটো পাওয়া,
পেয়ে হারানোর অধিক সে
প্রাপ্তিযোগ,
মনের ভেতরে কাতরায় বিদ্ধ
বালিহাঁস,
তার পাখায় লেগেছে নিজের
রক্তদাগ।
কেন যে হাসো তুমি
প্রতিটি সকালে,
কান্নার অধিক সে হাসির
শব্দ
আমাকে ছুঁয়ে ছড়িয়ে যায়
রিনিঝিনি মুক্তোদানা হয়ে।
কেন যে!
ঘুমোতে যাবার আগে
রাত্তিরের শেষ টেম্পো চলে
যায়, মালটাল নিয়ে;
দ্বিধা চলে যায়, ভালোবাসা
ফুটে ওঠে নিজস্ব শিবিরে।
করতলে ঘুরে গেছে পৃথিবীর
মায়া, ইশ্বরকে বলেছি
শূন্যতায়, প্রতিটি মানুষ যেন
দিনশেষে
পায় তার পছন্দের নমনীয়
রুটি।
ভগবান কারও বিজ্ঞাপনে আসেন
না কখনও,
ডাকলেও না; আসেন সংকট
মুহূর্তে যেভাবেই
ডাকো তাঁকে; প্রতিটি ভগবান
এক নিজস্ব বিচার;
উত্থিত অন্তরাত্মা থেকে
গভীর গোপনে।
ঈশ্বরের লালন যতটা করেছ
ভালোবাসায়
ততোটাই সম্মুখে তিনি, হিংসাতেও
পেতে পারো
যদি ভাবো, ধ্বংসেও পাবে
তুমি, পাবে যেভাবে চাও;
ঈশ্বর বহিরঙ্গ কিছু নয়,
তোমারই ছায়া নিয়ে
হাঁটেন ঈশ্বর।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন