কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৮

সৈকত ঘোষ




কলকাতার সেলফি ৬১

একটা ক্লিক বদলে দিতে পারে জীবনের মেকানিজম
আমি নিজের মধ্যে অসংখ্য নিজেকে খুঁজে পেয়েছি 

সন্ধের চায়নাটাউন জানে কীভাবে ক্ষতগুলো প্রকাশ্যে আনতে নেই
কীভাবে কবিতা হয়ে ওঠে জন্মদাগ
নিজেকে চেনার জন্য মুখোশগুলোকে ডেবিট করি

ডিমান্ড অনুসারে সাপ্লাই দিতে দিতে হাঁপিয়ে ওঠে গ্রাম্য নদীটি, 
নিকোটিনে সুখ মিশলে তুমি পিছলে যাও
                             তোমাকে পিছলে গড়িয়াহাট ফ্লাইওভার
অটো থেকে নেমে ডিপ ফাইন লেগ, পাঁচ ফুট পাঁচ

এই সবকিছুর একটা আফটার এফেক্ট থাকে
প্রতিবার সাইলেন্ট মোডে যাবার আগে অন্তত একবার, 
একবার চিৎকার করে বলুন: 'মাস্টারমশাই আপনি কিন্তু কিছুই দেখেন নি'!


কলকাতার সেলফি ৬২

হঠাৎ আটকে যাওয়ার মধ্যে কী ধরনের মুগ্ধতা কাজ করে?

ধরে নিলাম তোমার নাম বৃষ্টি, তোমাকে ঘিরে থাকা মুহূর্তের নামও বৃষ্টি। 
সেই মুহূর্তের মধ্যে কোথাও নিজেকে খুঁজে পাওয়া, 
এ উপস্থিতি জানে কতটা অক্সিজেন ভরে নিতে পারলে 
তুমি ঢুকে যাও শব্দের শরীরে। ফ্রেম জুড়ে গোলাপি মুসকান।

আমি মিউট থাকতে চেয়েছিলাম, অনেকক্ষণ ঠিক এভাবেই।
তুমি চুঁইয়ে পড়ছো, তোমার চোখ গাল চিবুক পিছলে রাতের পার্কস্ট্রিট

এরপর শুধু ঢেউ, একটার পর একটা পাতা ওল্টানোর শব্দ। 
সিকোয়েন্স অনুসারে মনে মনে সাজিয়ে নিচ্ছি সিন।
তোমার ঘেঁটে যাওয়া কাজলে হুসেনের কালো ঘোড়া, কোমরে বাস্কারভিলস। 
যে পলাশ তোমাকে কমপ্লিমেন্ট করছে, 
যে বসন্ত ঠোঁটের বেনসন- তাকে আমি কলকাতা বলে জানি। 
সময়ের আঁচলে হলুদ রঙের মিথ।

আমি মিউট থাকতে চেয়েছিলাম, রেস থেকে ছিটকে পরা ঘোড়াটার মতো। 
লাস্টবেঞ্চের মুখচোরা ছেলেটা আমার স্বপ্নে। একটা ম্যাজিক। একটা কোড। 
তোমার চোখে গাঢ় হচ্ছে সন্ধে

শহরের সমস্ত হোডিংয়ে 'ডর কে আগে জিত হ্যায়'

কলকাতার সেলফি ৬৪

ফোর্থ সিটে বসা মেয়েটি আমাকে ম্যাজিক রিয়ালিজম শিখিয়েছে, 
শিখেছি কতটা বেপরোয়া হলে ঠোঁট ছাড়াও চুমু খাওয়া যায়।
বাকিটা ডারউইন শেখান নি, সেও না
পরে জেনেছি কিভাবে আলোর স্যান্ডউইচে কবির জন্ম হয়। 
আমার কোনও চিরুনি ছিল না, মেয়েটির গালে ছিল না ব্রণর দাগ।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে আমাদের দুটো জন্মদিন ছিল, সেলিব্রেশনে ব্লেন্ডার্স প্রাইড। 
জিকে বলতে দাঁত দেখে জানতাম বয়স মাপার কৌশল। কৌশলে পড়ে নিয়েছিলাম তার চোখে সহজ পাঠের ভুল। যদিও সে ভুল থেকে কোনও সুযোগ নিই নি।
৩২কে ৩৬ করার টেকনিক একমাত্র কবিরাই জানেন।
লোকাল ট্রেনের কবিসম্মেলন আমাকে শিখিয়েছে ঝালমুড়ি আসলে মহৎ শিল্প, 
টোলট্যাক্স ছাড়াই ধ্রুপদী বিপ্লব।
এর পরেও কোনও দলবৃত্ত মেঘ আমাকে ডায়েট চার্ট ধরিয়ে দেয়নি
রোদের মানচিত্রে দেখিনি কোনও ঘোড়-সওয়ারকে...
খেই হারিয়ে যাওয়া কবিতার মতো যে লোকটি
বৃষ্টি বিক্রি করতো, তাকেও না।
যদিও মেয়েটি আমার কাছে বৃষ্টি চায়নি, পাশাপাশি কোনও কমা দাড়িও না।
দুজনেই তাকিয়ে ছিলাম যেভাবে ঝড়ের আগে বর্ণবিপর্যয়...

নামার আগে মেয়েটি একটা চিরকুট দিয়ে গেল
তাতে লেখা 'আ খুশিসে খুদকুশি কর লে'


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন