মাধবী
সিরাপ
(১১)
বিছানা যখন ভোরের, সকাল ছোকরা তখনই। কিসব
ভাবতে ভাবতে আঁকে, বোলায়, গরম হয়। নড়ে ওঠে, বিহ্বল পর্দার খুশ্ আর খুশি। নশীনা
পাশ ফেরে, পোহায়, রোদ-দাঁড়ানোকে স্পর্শ করে, বলে, ওঠো ছড়িয়ে দাও।
সে ধরে রাখে, সারারাত অপেক্ষা। সারাদিন পড়ে
আছে কিন্তু ওই দিনের ফোঁটায় কি মন্দ্র সবকিছু। আলো, ছুঁয়ে থাকল যতক্ষণ মনেই হয়নি
কিভাবে হয় এমন, ফলের সমস্যা হয়না?
সকাল নিজেকে দেখতে পায়না। পেলে আঁচ টের
পেত, বিছানা ছেড়ে যাওয়ার আগে খাটের সামান্য কেঁপে ওঠা, প্লেটের বিগঠনে উড়ু চুল,
ভূমিকম্পও হতে পারে। সকালের হাত নেই, পা নেই। আছড়ে পড়া, ছড়িয়ে পড়া আছে। এখন লুটিয়ে
পড়ল
দেহি
পদপল্লব মুদারম, না বলেই
(১২)
আমি তো যেতেই চাইনি। শুনে রাস্তা আলাদা হয়ে
গেল। রাগ নাকি? বন্ধুরা আলাদা হলেও ডাকে, স্টেশনের প্রতীক্ষা মিশিয়ে। করুণা টপকে
সেই ডাক ভোর ভোর। শিশিরচমকভাঙা, যেন আর একটা জীবন হবেনা। মরীয়া। জাল জাল কুয়াশার
নেট প্র্যাকটিস তখন। ডাক জড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্রামে। অবসান যদি ভোর হয়, বাহানা তবে কী?
ছুঁয়ে দেখো আমায়। হাত ভরে উঠছে আদরজড়ানো ফুলের গ্রন্থিতে। অঞ্জলি? নাম আর ডাকের
ভেতরেই পড়ে আছে অবসান শব্দটা। ঝরে পড়া শ্রান্ত মুহূর্ত, শব্দটা।
ঠোঁট ভিন্ন, তাই বলাও। আর ডাকল কখন, বনের
গান তাকে বনের ভাবনা দিয়েছে, তখন। বন্ধুরা বন্ধুর থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে, তখনই
কথা
শেষ। চলে যাচ্ছি। দরজা
খুললাম, বাইরে অরুণ দাঁড়িয়ে...
(১৩)
উড়ে যাওয়ার পরেই পাখি হলাম। সারংশময় এক
সাঁতারু আকাশের। তুমি যাওয়ার পরেই। ডানা বৈষ্ণব, ঠোঁট শাক্ত পদাবলী। কখন তুমি চলে
গিয়েছ কে জানে, শুধু বৃষ্টি বেজেছিল পায়ের পাতার মতন, লিখেই ভেজা বাইলেনে কে যেন,
ডাকল। বৃষ্টিফেরার ডাক। চলে গেল ট্রামের মাথায় জড়িয়ে। এই মিয়াঁ তো ওই মালহার, চা
ফুটছে। রাস্তার আর কি, জল চুষবে। আকাশ বদলাচ্ছে, তাই।
পাখি হয়েই ডানা ঝাড়লাম। হাত ডানার কবরে
শুয়ে আছে। তুমি হাতের ব্যবহার নিয়ে বলতে।কত পুরনো আমাদের সভ্যতা, বলতে।তোমার বুকে
আমি একটা শব্দ আর একটা গন্ধ পেতাম। গন্ধটা হিমনাশক। শব্দটা পাল্কির। হু হুমনা হু
হুমনা.. অসভ্য, বলতে। আমার বাড়ি এখন পাখির বাসা। বাড়ি আর বাসার মধ্যে শুধু একটা
গান। ‘মন খারাপ করা বিকেল মানেই মেঘ করেছে’ শধু এই গানটা, আমি পেরোতে চাইছি...
ডানা বৈষ্ণব, ঠোঁট শাক্ত পদাবলী,আহা, কী লেখা! স্যালুট!
উত্তরমুছুন