কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

সোমবার, ৭ মে, ২০১৮

মৌসুমী মণ্ডল দেবনাথ




ঝরো পূর্ণতায়

না হয় চুপটি করো থাকবো রাতের পাশটিতেই
কতোটা মেঘ জমলে পরে, কান্না ঝরে বৈশাখেই

এখন যেমন গাইছে পাখি, ব্যালকনিতে সূর্যোদয়
বৃষ্টি তোমায় ছন্দ দেবো, ঝরবে ঝরো পূর্ণতায়

যেমন ক'রে পাহাড় ফুরোয়, ধূসর বাসর নীলঘন
কালচে মৃত্যু ছড়িয়ে বনে, সবুজে প্রাণ নিমগ্ন

বরফদেশের সুরগুলো সব, মুখর হলো উষ্ণতায়
আলতো করে মন মেশাবো, ম্যাপেল বনের উচ্চতায়

চলছে নদী ধমনীতে, সামনে জোয়ার সাবধানে
হৃদয় খুলে দিলাম দ্যাখো, মধ্যবেলার যৌবনে

এই অবেলায় ফুরোলো দিন, আকাশ হলো মেঘাতুর
অন্তরাতে বাঁধছি জীবন, ডানায় মিলায় রোদ্দুর


বাড়ি

দমকা হাওয়ায় উড়ছে বিষাদ, ভিজলো হলুদ শাড়ি
উড়ছি আমি উড়ছো তুমি, জিনিস রকমারি

ভিজছে রাস্তা উড়ন্ত চিল, সামলে জীবন আস্তে
সুখের পংক্তি জুড়ছে অসুখ, কবিতা এক দিস্তে

হাঁটছি আমরা উল্টো রাস্তা, সঙ্গে পুরনো সন্ধ্যে
ঝোলায় রয়েছে বর্ণমালা, ফাগুন রন্ধ্রে রন্ধ্রে

ভিজে ভিজে পা, উফ্! কফিশপে আজ ভীড় বড্ডো
মেঘ লিমেরিক, বৃষ্টি টেবিল, আহ্! মন কতোটা দার্ঢ্য

সামনে উদাস ফেরার রাস্তা, বৃষ্টি শেষের গাড়ি
আঁচলের নীলে পলাতক চাঁদ, শ্যাওলা রঙের বাড়ি


অরণ্য পরিবার

এমনই তোমার মেঘে ঢাকা রীতি যেন কোনওদিন দেখোনি বজ্রপাত
দুপুরের ছাদে উড়ছে পোস্টকার্ড চিঠি যেন নীল প্রজাপতি ও জলপ্রপাত

একদিন বাতিল কৃষ্ণচূড়ার ফুল যেন প্রমাণ লোপাট হলো বেঁচে থাকার
ডোরাকাটা রাস্তায় ছেঁড়াপাতা পড়ে যেন মৃত্যু নিষাদ মেঘ ব্রাত্য কবিতার

তারপর জাগে ছিন্ন ক্যাপাচিনো কফি যেন দু'চামচ বৃষ্টিচিনির প্রিয় অধিকার
আজ বিছানায় থাক জোছনার কথা যেন ঘুমের বালিশে আঁকা অরণ্য পরিবার


পাহাড় মন

এইতো আমার কুয়াশা রাস্তা প্রিয় তুষারপাত
এক পশলা দুঃখ ভেজায়, মেঘলা ধূসর রাত

একলা পাহাড় পাইনের বন, একলা ঘুম স্টেশন
একলা গিটার, ঘরের কোণে একলা হয় জীবন

ইচ্ছে তোর্ষা খরস্রোতা, হলুদ পাখির টোপ
দু'হাত জুড়ে রঙ এঁকেছে, রোডোডেনড্রন ঝোপ

পাহাড় চুড়ো প্রেম রেখেছে, সোনালী জঙ্ঘায়
সুর বেঁধেছে বাগেশ্রীতে, ঠোঁট জ্বলেছে চা'

আয় কিছু রোদ হিম পাহাড়ে, আয় বসন্ত বৈশাখী
দীঘল বাঁকে টয়ট্রেন আর কবিতা মায়াকভস্কি


বৃষ্টি পড়ে

মেঘ ছোঁয়ানো খেয়াল দুপুর শান্ত পুকুর টলমল
জানলা বেয়েই বৃষ্টিধারা, আকাশছেঁচা রঙমহল

বৃষ্টি যখন নামলো ব্যাপক, হয়নি রাখা নীলরঙ
ডিক্রি জারি সোঁদা গন্ধে, একলা উঠোন ঝমঝম

হঠাৎ করে আসবে বলায়, নদীও ছিলো বেসামাল
মনের মাঝেই মন রেখেছি, ঠোঁটের তিলেই মফঃসল

আনলে শেষে দুঃখ দুপুর চাঁদছাপা এক কলমকারি
বৃষ্টি ভেজায় কনকচাঁপা, জানলায় হয় দুপুর চুরি

অথচ সে ঝড়ের শেষে, বাক্য ভুলে রামধনুতে
বর্ষাতিতে কানাকানি, বৃষ্টি হারায় ঘোর অসুখে

বন্ধ হলো জানলাখানা, গ্রীষ্ম এলো অন্তমিলে
হারিয়ে গেলো হলুদপাখি, কেমন করে মনের ভুলে



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন