কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪

০৯) কাজী জহিরুল ইসলাম



কাজী জহিরুল ইসলাম

একটি বৃত্তের গল্প

একটি বৃত্ত আঁকো, দাঁড়াও এবার
কেন্দ্রে পুতে রাখো দুটি দেবদারু আলপিন দিয়ে
বাতাসের দিকে মুখ করো, তোমার কো্নো চারদিক নেই
আছে সব দিক। সব দিকে তাকাও একসাথে
বৃত্তের ভেতরে তুমি, বাইরে ভূতেরা হাঁটাহাঁটি করে
তুমি অন্ধ
বৃত্তের বাইরে দেবদারু গাছেদের চোখ নেই
চোখের কোটরে শালিখের বাসা
ডিমের ভেতরে ভয়াবহ দিনের কুসুম
ডিমের পালকে হতাশার ঝড়
ঝড়ের রাত্রির কথা ভাবো
শাল-চন্দনের মৃত্যুশোকে কাঁদবে কি ইউক্যালিপটাস?
তোমাকে আকাশমণির কথাও ভাবতে হবে

বনের ভেতর দিয়ে হেঁটে যায় বরফের ভালুক
শিকারিদের পিছু নেবার জন্য তৈরি আরেকদল শিকারি
তোমাকে এইসব জটিল অংক শিখতে হবে
‘ভালোবাসি, ভালোবাসি’ বলে আকাশের সাথে দোস্তানী
নদীর দিকে মুখ করে বাতাসের সাথে প্রেমালাপ বন্ধ করো  
ঘামের মধ্যে যে গন্ধক আগুন জ্বালাতে হবে ওইখানে

হাড়ের ফসফরাসে বারবিকিউ চলছে ম্যানগ্রোভ অরণ্যে
কুমিরের রোষ্টগুলো লবণ মাখিয়ে মেরিনেট করছে কারা?
রাণী ভবানীর বারান্দায় কাকের গোস্তে  
ভাগ বসায় একদল দাঁড়কাক কোন রহস্যের মঙ্গাকালে?

এখন জ্বলে উঠবার দিন
তোমাকে শিখতে হবে সম্পূর্ণ জ্বলে উঠবার মন্ত্র
শেখাতে হবে গরুদের, শূকর আর কচ্ছপদের
কালো বাঁকানো বাঁশিটি কোথায় লুকানো, খুঁজে বের করতে হবে
একটি বৃত্তের ভেতরে, একটি অরণ্যের ভেতরে টেনে আনতে হবে
বৃত্তের ভেতরে বেঁচে থাক বৃত্ত, অরণ্যের ভেতরে বেঁচে থাক অরণ্য
ভূতের গায়ে আগুন জ্বালাতে হবে
বহ্নি উৎসবের পর খুঁজতে হবে সবুজের নতুন শেকড়

পকেটে সাপের ডিম নিয়ে ঘুরে বেড়ায় কারা?
তোমাকে চিনতে হবে মুখোশের আড়ালের মুখোশগুলো
তোমাকে শিখতে হবে পতঙ্গ ও সরীসৃপের ভাষা
ভাষার আড়ালে লুকানো অতি দূর্বোধ্য সব ভাষা 
বৃক্ষদের, পাখিদের, তিমি ও হাঙড়ের
কুকুরের পায়ে চুমু খেয়ে শিখে নিতে হবে
অতি অধঃ শব্দতরঙ্গ ধরার কৌশল 
তোমাকে চিনতে হবে মানুষের ভেতরের মানুষগুলো
বৃক্ষের ভেতরের বৃক্ষগুলো
অরণ্যের ভেতরের অরণ্যগুলো
পাহাড়ের আড়ালের পাহাড়গুলো
নদীর ভেতরের নদীগুলো 
ছায়ার ভেতরের ছায়াগুলো

এরপর বৃত্ত ভাঙতে হবে

আকাশের স্ট্রীটে হাঁটে ডিজিটাল নারদ
এখন তো আকাশের স্ট্রীটে হাঁটে ডিজিটাল নারদ
ইথারের
ভেনে সেদ্ধ হয় বাতাসের ডিম
রাত্রির বাগানে ফোটে ছোট ছোট দীর্ঘশ্বাস
অন্ধকারের ফরাশ বিছিয়ে বসেন ই-পীর
রূপোর তাবিজে আবেগের মোম লাগান সারারাত
দুধভরা ওলান ঝুলিয়ে হাঁটে বরফের গাই
মুখ দেয় সেল্যুলার ঘাসে।

কষ্টের টুথব্রাশে দাঁত মেজে স্নেহের ঝাপটা দিই চোখে-মুখে
সারাদিন পার করি স্বপ্নের জামায় বোতাম লাগাতে লাগাতে
রোদ্রের ঠোঙায় শিঙ্গাড়া কিনে আনে মেঘের ছেলেরা
বিকেলটাকে ল্যাঙ মেরে সন্ধ্যাবাবু ধুতি গুটিয়ে বসেন চিন্তার ছাদে।
উরু ফাঁক করে শুয়ে পড়ে রাত্রি ।

আবারো ডিজিটাল নারদ
বাতাশের ডিম, কষ্টের টুথব্রাশ
আর স্বপ্নের জামা থেকে বোতামগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে পড়ে পাথ্রের ফ্লোরে।
রোদের ঠোঙায় করে শিঙ্গাড়া কিনে আনে মেঘের ছেলেরা
বিকেলটাকে ল্যাঙ মেরে সন্ধ্যাবাবু ধুতি গুটিয়ে বসেন চিন্তার ছাদে।
রু ফাঁক করে শুয়ে পড়ে রাত্রি।

আবারও ডিজিটাল নারদ
বাতাসের ডিম, কষ্টের টুথব্রাশ
আর স্বপ্নের জামা থেকে বোতামগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে পড়ে পাথরের মেঝেতে



আবিদজান

হৃদয়ের ওপর একটা মাছি
মৃত পাম গাছের লিভার ঠোকরায় বাতাসের শকু্ন
সভ্যতার দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে
লেগুনটা পার হয় লেবানিয় বণিক 
ফরাসিরা ক্যামোফ্লেজ তৈরি করে কাকাও বাগানের চারপাশে

এইরকম একটি সময়ের সাক্ষী,
নীল পতাকা আমার হাতে।

হারবো কি জিতবো, দ্বিধার পাহাড়ে হোচট খায় নির্বাচন
কালো কালো বাদুড়ের ডানা ঢেকে দেয় প্লাতুর আকাশ

রাত্রির সড়কে পা ফেলে
তবু ওরা আসে
একা একা।
দুজন কখনো, হাত ধরাধরি করে
কখনো বা দল বেঁধে।
গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে মেঘের নাভিতে
সুড়সুড়ি কাটে অভিবাসী রোদ্দুর
খরাক্রান্ত অভিবাস, তুমুল বৃষ্টিপাত খোঁজে
         একটি দখিনা ঝড়।   




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন