শফিউল
আজম মাহফুজ
বন্ধুদের প্রতি
চাই না কিছু আর বন্ধু তোমাদের কাছে
অথবা বিশেষ কিছু চাওয়ার নেই আর।
না চাইতেই ঢের পেয়েছি,
পেয়েছি ভালোবাসার বিশুদ্ধ জল
তাতে স্নান করেছি।
যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছো তাতে ছিল
আধেক কেক কিংবা আধখাওয়া সিগারেট।
আমার ভীষণ অসুখ, শ্বাস
নিতে কষ্ট হয়;
তবু আমি তোমাদের হাসিমুখ ভালোবাসি বলে
ভিতরে টেনে নিয়েছি ধোঁয়ার বিষ।
কিংবা কখনো প্রচণ্ড কাশি চেপে
হাসিমুখে জ্বালিয়ে দিয়েছি হৃদপিণ্ডের রক্তিমতা
আর চোখের স্বচ্ছতা।
তোমরা আমাকে ভালোবাসো বলে
পিতার শিকারি চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে গেছি
ক্রিকেট খেলার মাঠে, বল
নিয়ে হাতে।
অথবা নেমে গেছি ডোবার জলে তোমাদের আহবানে
যে ডোবায় মাসখানেক আগে ডুবে মরেছে বন্ধু আনোয়ার।
পেয়ারা গাছে পারি না চড়তে বলেও পাইনি নিস্তার
অন্তত রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাহাড়া দিতে হয়েছে।
অপেক্ষাকৃত নিরাপদ কাজ করেও তোমাদের
করুণায় সমান ভাগই মিলেছে।
উত্তপ্ত রৌদ্রের দিনে স্কুল পালানোর দিন গেছে শেষ
হয়ে,
তোমাদের নিবিড়ভাবে ডাকা স্বর বাতাসে মিলেছে,
নিবিড়তা কোথাও নেই আর।
তবু এখনো বন্ধুর ডাকে সাড়া দিই আমি
মায়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে আড্ডা জমাই এখনো।
পুরনো দিনের মৃত স্মৃতিতে আমি আজও স্নান করি,
ফিরে পেতে চাই আজও রক্তিম হৃদপিণ্ড
আর চোখের স্বচ্ছতা।
নতুন নতুন বন্ধুদের মিছিলে সরব শ্লোগান তুলি
ওদের ঝিমিয়ে পড়া রক্তকে জাগানোর শেষ
চেষ্টা করি আরেকবার।
জীবন মানে শুধু
হতাশা-ক্লান্তি-যৌনতা নয়
অন্যভাবেও এর ব্যাখ্যা
হয়।
তবুও কেবলি ওরা হতাশায়
ডোবে,
যৌনতায় মাতে, ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়ে।
যতসব সাম্রাজ্যবাদী প্রেম
ইসরায়েল গাজায় যত বিমান হামলা করেছে
তার চেয়ে শতগুন বেশি মোবাইল ফোন হামলার শিকার
আমি।
এমনকি তুমি আমার সবচেয়ে গোপন সুড়ঙ্গে
মেসেজ বোমা নিক্ষেপ করেছো অনবরত।
তুমি আমাকে স্বস্তি দাওনি একদণ্ড
কখনো চালিয়েছো অতর্কিত মিসডকল হামলা,
আমি বহুবার চেয়েছি কিন্তু তুমি সীজ ফায়ার
চুক্তিতে
সাক্ষর করোনি কখনো।
আমার শান্তির ঘুম তুমি শক্তিশালী ভাইব্রেশনে
উড়িয়ে দিয়েছ বহুবার।
ইদানিং তুমি বলছ, তুমিই আমার
একমাত্র বৈধ দাবীদার।
এখানেই শেষ নয় তোমার দখলদারী মানসিকতার
শেষপর্যন্ত তুমি আমাকে আত্মঘাতী হামলার ভয়
দেখাচ্ছ?
ভালোবাসা, তুমি
এসো না
ভালোবাসা দেখা দাও তুমি অন্য কোনোখানে
অন্য কারো মনে।
আজ ১লা ফাগুন কাল হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন
এই তো সুযোগ তুমি ভর করো অন্য কোনো জনে।
আমি তো আজন্ম প্রেমিকই আমার পিছু ছাড়ো
বরং সাহস করে ভর করো কোনো রাগী অধ্যাপকের ঘাড়ে
নতু বা ঘাড় পছন্দ না হলে অধ্যাপিকার নিতম্বে
কিংবা মেদবহুল কোনো তলপেটে, মনে
হয় খুব জমবে।
ভালোবাসা, পরীক্ষা হয়ে যাক তোমার--
দেখি পারো কিনা লুকাতে কোনো সুন্নতি দাঁড়িতে
পারো কিনা ঘুমোতে ঐ বিলাসবহুল বাড়িতে
পারো কিনা জাগতে ঐ মন্দির, গির্জা
কিংবা মসজিদে।
দয়া করে এই মুল্লুকে এসো না হানা দিতে
আর একটা বছর অন্তত সময় দাও,
আমার প্রাক্তন প্রেমিকার কসম
তুমি এসো না এই ফাগুনে আমাকে নাড়াতে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন