কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

সোনালি বেগম

 


কালিমাটির ঝুরোগল্প ১০০


হারিয়ে যাওয়া ক্যানভাস

 

তেরে ক্যানভাস পর উতরুংগী

ইয়া তেরে ক্যানভাস পর

এক রহস্যময়ী লকীর বন

খামোশ তুঝে দেখতী রহুংগী

                             ---- অমৃতা প্রীতম

ঘন কালো মেঘের চাদরে বিজলি চমকাচ্ছে। প্রেম কি শুধুই মানসিক ক্ষুধা নাকি শারীরিক, শুভা ভাবছে। ছন্দাও ভাবছে। আবার অ্যাডি অর্থাৎ অধিরথও ভাবছে। একটি ত্রিভুজের তিনটি কোণে বিরাজমান অদ্ভুত ত্রিকোণ প্রেম বিনির্মাণ হতে চলেছে। শুভা অ্যাডির কথা ভাবছে। অ্যাডি ছন্দাকে চায়। কিন্তু ছন্দার মধ্যে কিছু মানসিক অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। সে একান্ত ভাবেই শুভাকে চায়। এ আবার কেমন ধারার ভাবনা!

অ্যাডি বাঁশি বাজাচ্ছে, সেই বাঁশির সুরে কেঁপে উঠছে কদমগাছের ডালপালা। চাঁপাফুলের গন্ধ ভেসে আসছে। নানারকম নাম-নাজানা ফুলের সৌরভ ছেয়ে আছে। ঘন জঙ্গল আনন্দে মেতে উঠেছে। সামনেই সিমেন্টের বেদিতে ওরা তিনজনেই বসে পড়ল। কয়েকটি কদমফুল ঝরে পড়ল মাটিতে। দুটি চামূর্তি ঘোড়া ঘাস খাচ্ছে। ঘোড়া খুবই সমঝদার জীব। নিজের সম্পর্কে সে খুবই সচেতন। অ্যাডি ঘোড়ার পিঠে চড়ে বসে। শুভা এবং ছন্দার প্রতিক্রিয়া পেতে সে একাই ঘোড়া ছুটিয়ে খানিকটা চক্কর কেটে ফিরে আসে।

অ্যাডি ছন্দার পাশে এসে বসে, কিন্তু ছন্দা নির্বিকার ছন্দে বলে যে তার কোনো পিতৃপরিচয় নেই। প্রতিউত্তরে অ্যাডি জানায় যে তার কোনো মাতৃপরিচয় নেই। শুভা দুহাত ছড়িয়ে জানায় যে সে তো মাতৃ এবং পিতৃ পরিচয়হীন!

 বাদানুবাদ শুরু হয়ে গেল। এরপর কিছুক্ষণ নীরবতা। গাছের পাতার জল ঝরে পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে এখন। আকাশে মেঘগর্জন আর অঝোর বৃষ্টি শুরু হয়ে  গেছে। ধীরে ধীরে ছন্দা ও শুভা দুজনে দুটি ঘোড়ায় চড়ে বনের পথে কোথায় যেন হারিয়ে গেল। বংশ পরিচয়ের লতাপাতায় কিছু খড়কুটো খুঁজতে থাকল অ্যাডি।    

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন