নভেরা হোসেন
আত্ম
চন্দ্রিমা ও ঊষাকালে সিনথেটিক বৃষ্টি
জানালায় চৈনিক পর্দা
তোমার হাতও আজ মাটি ঘাঁটছে
খুঁড়ে নিচ্ছে শয্যা
ছুরি কয়েকটা গাঁথা ছিল কপালের মাঝ বরাবর
টেনে তুললে সাঁড়াশি দিয়ে
অসংখ্য তীর আর বল্লমের ফলা পায়ের পাতায়
তুমিও গলায় পরে নিলে আস্ত একটা হাঁসুলি
পাহাড়ি মদ ও ধানী মরিচ
বিছানার দুপাশে দুজন
মাঝ বরাবর সরু ফোয়ারা
এখান থেকেই যাত্রার শুরু
পেরিয়ে গেলে কালকূট, আলিপুর দুয়ার
দিল্লি বিমানবন্দর,
পথে যেতে যেতে
গোলাকার চাঁদ, পপিক্ষেত
পাহাড়ি মদ ও ধানী মরিচ,
জিভে নুন স্বাদ
সুগারের মাত্রায়ও কম-বেশি আছে
এখানে কেউ জীবিত নয়
সাদা কাফনে মোড়া জোড়া লাশ
এখানে কোনো পাখি ডাকছে না
নীরব রাত্রি
খেলা ঘর বাঁধতে লেগেছি
"কাদম্বরী
মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই"
আর এখানে অসংখ্য
চোরকাঁটা পায়ে বিঁধে আছে
শেয়াকূল, লেমন গ্রাস প্রান্তরে ছড়ানো
নিঃশব্দ রাত্রি
ফাঁকা ট্রেন লাইন
তুমি জেনে গেছ
মানুষ বেঁচে থেকেও
মরে যায়,
কারো কারো মৃত্যু হয়
শেষ রাতে ঘুম ভাঙার একটু আগে
বুক থেকে খসে পড়ে
অজানা তারারা
তুমি একটা তারা হতে
চেয়েছিলে
একটা জেলে নৌকা বয়ে
যাচ্ছে আঁড়িয়াল খাঁর পশ্চিম তীরে
একটা লাল ঘোড়া কিনেছিলে
আজ তাকে দেবার
প্রয়োজন অনুপস্থিত
সম্পর্কের মৃত্যু
মানে তো মানুষের মৃত্যু
একজন মানুষ মরে যায়
অন্যজনের মনে
রাত ধীরে বাড়ে
ঝিঁঝির একটানা মারণসঙ্গীত
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন