ঐ / সেই ছেলেটা
অভিষেক ঝা
শেষে একটা স্যাঁতসেতে ঘরঘরে গলা, কার আমি ঠিক মনে করতে পারি না : “ইঃ! ‘পেড়মে ভূত দোল খাতিছেও!’ উ দিনকা ছুকড়ি! জাই কর আপনে পুতাহুকা সাথ রোটি বেলেমে লাগ…” (১)
না, মানে -- গল্পটার আগে গল্পটার সময় চলে আসে। ঐ যে সেই গল্পটা যখন আমার ঠাকুমার ঠাকুরমা তাঁর একশ চার বছরের চোখে দেখে বলল…! মানে সেই সময় যখন তেতরার জ্যাঠা তেতরার কাকার সাথে ঝগড়া করার সময় ছাড়া আর কখনই বাংলা বলত না। যখন হোঁদরার বাপ বউয়ের হাতের ভঁইষা ক্ষীরসা বেয়াই বাড়িতে পৌঁছনোর সময় কালিন্দ্রীর ধারে বসে চেটেপুটে সাফ করে দিত। আর নদীর হাওয়াই ক্ষীরসাপাতির ছায়ায় দিব্যি একটা ক্ষীর-ঘুম সেরে নিত। সন্ধ্যাবেলা পান চিবুতে চিবুতে বাড়ি ফিরে বউকে বলত, “হোঁদরার মাঈ, বেয়াই বলিলেক ক্ষীরসা ভোঁত আচ্ছা ছিও। শুনিকে হামমার জি ভি লালচাও। পরশু হামমার লিয়ে বানা দেবেক?” (২) হ্যাঁ, মানে -- গল্পটার পরে গল্পটার সময় চলে আসে। সেই যে ঐ গল্পটা তখন পিতোনিয়া গাছের পাশে একটা ফুরফুরে চাঁদ ছোট্ট করে হাই তুলল আর…
হ্যাঁ, মানে -- গল্পটার পরে গল্পটার জায়গা চলে আসে। সেই যে ঐ গল্পটা যেখানে আমার ঠাকুমার মা চাকতা-বেলনা দিয়ে রুটি বেলতে বেলতে শুনল…! মানে সেই জায়গা যেখানে হোঁদরার শ্বশুর তাঁর বেয়াই বাড়িতে এসে সময় ও সুযোগ মতো বেয়ানের কাছে আবদার করলেন। মহিষের দুধের ক্ষীর খাওয়ার। এখনও অবধি বেয়ানের হাতের সুখ্যাতিই শুনেছেন, চাখেননি। হোঁদরার মা বিস্ফারিত চোখে হোঁদরার বাপের দিকে তাকিয়ে থাকে। হোঁদরার বাপ আকাশপানে তাকিয়ে বগল চুলকোতে থাকে; চুলকোতেই থাকে। যেইখানটা সেখানে তেতরার জ্যাঠার ঘি-মাখন চোয়ান “হে কনিষ্ঠ ভ্রাতা, আপনার এইরূপ ব্যবহার আমাকে বড়ই কাতর করিতেছে”কে চাপা দিচ্ছে শনঠি চেহারা নিয়ে তেতরার কাকার চিল্লানো : “এঃ! জেনটেল ম্যান বনিছেও! বাংলামে ঝগড়া করিছও! জেনটেল ম্যান!”(৩) না, মানে -- গল্পটার আগে গল্পটার জায়গা চলে আসে। ঐ যে সেই গল্পটা যেখানে এক ভূত মনটা একটু কেমন কেমন করায় গাছের ডালে আনমনে দোল খাচ্ছিল, তখনই…
শুরুতে একটা ঘড়ঘড়ে-স্যাঁতসেতে গলা, কার আমি ঠিক মনে করতে পারি না : “হদদ্যাখ জোছনাক মাঈ! পেড়মে ভূত দোল খাতিছেও!”(৪)
মাঝখানে কখনও হোঁদরার বাপ তেতরার জ্যাঠা হয়ে যায়, তেতরার কাকা হয়ে যায় হোঁদরার মা। কোনোদিন হীরালাল আর সোনালালের গুলতানিতে ভরে যায় মাঝখান।
------সেই গল্পটার
------ঐ সময়ের
-----আগে
-----সেই জায়গার
-----পরে
-----ঐ গল্পটার
---------------------------------------------------
“ ” অংশগুলির ‘পশ্চিমবঙ্গানুবাদ’
(১) “এঃ! ‘গাছে ভূত দোল খাচ্ছে!’ সেদিনের মেয়ে! ছেলের বউয়ের সাথে রুটি বেলতে লাগ…”
(২) “হোঁদরার মা, বেয়াই বলল ক্ষীরটা খুব ভালো হয়েছিল। শুনে আমারও লোভ হলো। পরশু আমার জন্য একটু বানিয়ে দেবে?”
(৩) “এঃ! জেন্টলম্যান হচ্ছে! বাংলাতে ঝগড়া করছে! জেন্টলম্যান!”
(৪) “এই দ্যাখ জোছনার মা! গাছে ভূত দোল খাচ্ছে!”
শেষে একটা স্যাঁতসেতে ঘরঘরে গলা, কার আমি ঠিক মনে করতে পারি না : “ইঃ! ‘পেড়মে ভূত দোল খাতিছেও!’ উ দিনকা ছুকড়ি! জাই কর আপনে পুতাহুকা সাথ রোটি বেলেমে লাগ…” (১)
না, মানে -- গল্পটার আগে গল্পটার সময় চলে আসে। ঐ যে সেই গল্পটা যখন আমার ঠাকুমার ঠাকুরমা তাঁর একশ চার বছরের চোখে দেখে বলল…! মানে সেই সময় যখন তেতরার জ্যাঠা তেতরার কাকার সাথে ঝগড়া করার সময় ছাড়া আর কখনই বাংলা বলত না। যখন হোঁদরার বাপ বউয়ের হাতের ভঁইষা ক্ষীরসা বেয়াই বাড়িতে পৌঁছনোর সময় কালিন্দ্রীর ধারে বসে চেটেপুটে সাফ করে দিত। আর নদীর হাওয়াই ক্ষীরসাপাতির ছায়ায় দিব্যি একটা ক্ষীর-ঘুম সেরে নিত। সন্ধ্যাবেলা পান চিবুতে চিবুতে বাড়ি ফিরে বউকে বলত, “হোঁদরার মাঈ, বেয়াই বলিলেক ক্ষীরসা ভোঁত আচ্ছা ছিও। শুনিকে হামমার জি ভি লালচাও। পরশু হামমার লিয়ে বানা দেবেক?” (২) হ্যাঁ, মানে -- গল্পটার পরে গল্পটার সময় চলে আসে। সেই যে ঐ গল্পটা তখন পিতোনিয়া গাছের পাশে একটা ফুরফুরে চাঁদ ছোট্ট করে হাই তুলল আর…
হ্যাঁ, মানে -- গল্পটার পরে গল্পটার জায়গা চলে আসে। সেই যে ঐ গল্পটা যেখানে আমার ঠাকুমার মা চাকতা-বেলনা দিয়ে রুটি বেলতে বেলতে শুনল…! মানে সেই জায়গা যেখানে হোঁদরার শ্বশুর তাঁর বেয়াই বাড়িতে এসে সময় ও সুযোগ মতো বেয়ানের কাছে আবদার করলেন। মহিষের দুধের ক্ষীর খাওয়ার। এখনও অবধি বেয়ানের হাতের সুখ্যাতিই শুনেছেন, চাখেননি। হোঁদরার মা বিস্ফারিত চোখে হোঁদরার বাপের দিকে তাকিয়ে থাকে। হোঁদরার বাপ আকাশপানে তাকিয়ে বগল চুলকোতে থাকে; চুলকোতেই থাকে। যেইখানটা সেখানে তেতরার জ্যাঠার ঘি-মাখন চোয়ান “হে কনিষ্ঠ ভ্রাতা, আপনার এইরূপ ব্যবহার আমাকে বড়ই কাতর করিতেছে”কে চাপা দিচ্ছে শনঠি চেহারা নিয়ে তেতরার কাকার চিল্লানো : “এঃ! জেনটেল ম্যান বনিছেও! বাংলামে ঝগড়া করিছও! জেনটেল ম্যান!”(৩) না, মানে -- গল্পটার আগে গল্পটার জায়গা চলে আসে। ঐ যে সেই গল্পটা যেখানে এক ভূত মনটা একটু কেমন কেমন করায় গাছের ডালে আনমনে দোল খাচ্ছিল, তখনই…
শুরুতে একটা ঘড়ঘড়ে-স্যাঁতসেতে গলা, কার আমি ঠিক মনে করতে পারি না : “হদদ্যাখ জোছনাক মাঈ! পেড়মে ভূত দোল খাতিছেও!”(৪)
মাঝখানে কখনও হোঁদরার বাপ তেতরার জ্যাঠা হয়ে যায়, তেতরার কাকা হয়ে যায় হোঁদরার মা। কোনোদিন হীরালাল আর সোনালালের গুলতানিতে ভরে যায় মাঝখান।
------সেই গল্পটার
------ঐ সময়ের
-----আগে
-----সেই জায়গার
-----পরে
-----ঐ গল্পটার
---------------------------------------------------
“ ” অংশগুলির ‘পশ্চিমবঙ্গানুবাদ’
(১) “এঃ! ‘গাছে ভূত দোল খাচ্ছে!’ সেদিনের মেয়ে! ছেলের বউয়ের সাথে রুটি বেলতে লাগ…”
(২) “হোঁদরার মা, বেয়াই বলল ক্ষীরটা খুব ভালো হয়েছিল। শুনে আমারও লোভ হলো। পরশু আমার জন্য একটু বানিয়ে দেবে?”
(৩) “এঃ! জেন্টলম্যান হচ্ছে! বাংলাতে ঝগড়া করছে! জেন্টলম্যান!”
(৪) “এই দ্যাখ জোছনার মা! গাছে ভূত দোল খাচ্ছে!”
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন