কালিমাটির ঝুরোগল্প ১২৬ |
বিষধারা
সংবিধান: তারপর? ওরা কারা?
এই কথা শুনে নবনীতা : সেটাই জানতে
চাই। কেউ আমাকে গভীরে টানছে।
সংবিধান: কতদূর যেতে পারো তুমি,
পৌরুষ সর্বব্যাপী।
নবনীতা: আমি সর্বস্বব্যাপী। তাই
আরও গভীরে ডুবে যেতে চাই।
সংবিধান: তবে অগ্নিকুণ্ড ত্যাগ
কর।
নবনীতা: না। সেথায় আমির বাসভবন।
সংবিধান: তবে বাসভবন ত্যাগ কর।
তোমাকে শর্তনিঃস্ব হতে হবে।
নবনীতা: না। আমাকে নিয়েই অহমের
স্ব-মহিমা।
গর্ভবতী গাড়ির গোঙানি। এইসকল পরিণত
বৃক্ষ ও চারা, রোপণ ও উৎপাদন কার দিকে মুখ করে? এইসকল জীর্ণহাড় নামগান? এই হিংস্র গোঙানি? একি অভিকর্ষবিমুখী
নয়?
একলাখী জংশন থেকে গাড়ি ছাড়ার কোন লক্ষণ নেই। এ নিয়ে চারবার। এদিকে ক্রমশ নবনীতার মুখ ফ্যাকাশে, চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসে, দহ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম অন্ধকার, মাঝে মাঝে নিস্তেজ হয়ে যায় কন্ঠ নির্গত ঘর্ঘর, পুনরায় জেগে ওঠে। সে এগোয়, এগোয়, এগোতে থাকে। বহুমাত্রিকতার দিকে। সংবিধান জানে না, গোকুলে কে বড় হয়। জানে, ফসল ভূমির এক ভাগ চাষী মাত্র সে।
নবনীতাও কি জানে? তবুও সে চেয়েছিল। এ জীবনে একবার। আর নয়। ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনার আশে একলা দুপুরে আগুন ঢেলে দিয়েছিল তার আঁচে। এ জনজঙ্গলে লাঙলের শেষ নেই। এবং কেউ কেউ লাঙ্গলধারী সংবিধান যথা ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়। এবং নিভন্ত আঁচ তাকে ধরে পুনরায় বৈঠা বাইতে চায়।
ট্রেনটা এখনও দাঁড়িয়ে কালো রংয়ের দহ স্টেশনে। ছায়া আসে ছায়া যায়। আলো কি আর জ্বলবে না? আলো জ্বলেনি, কান্নায় জ্বলে উঠলো একটি মুখ। মোবাইলের আলোয় রক্তাক্ত প্রাণ। কিন্তু নবনীতা? সে কোথায়?
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন