কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

<<<< সম্পাদকীয় >>>>

 


কালিমাটি অনলাইন / ১৩০ / ত্রয়োদশ বর্ষ : তৃতীয় সংখ্যা  




 

একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলা ভাষায় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় যে সংখ্যক কবিতা প্রকাশিত হয়, তার তুলনায় গল্প উপন্যাস প্রকাশিত হয় অনেক কম, প্রবন্ধ-নিবন্ধ আরও কম। আমি বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যের পরিপ্রেক্ষিতে একথা লিখছি, কেননা অন্যান্য ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে আমার জ্ঞান ও ধারণা সীমিত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, গল্প উপন্যাস ও প্রবন্ধ-নিবন্ধের তুলনায় এই যে কবিতা প্রকাশের অত্যধিক প্রবণতা, তার পেছনে কী কারণ বা যুক্তি থাকতে পারে? প্রথমত হতে পারে, গল্পকার ও প্রাবন্ধিকদের তুলনায় কবির সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। আবার অনেক লেখক আছেন, যাঁরা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখার পাশাপাশি কবিতাও লেখেন। বিশেষত বাংলা পত্র পত্রিকার জগতে অনেক পত্রিকা আছে, যাতে শুধুমাত্র কবিতাই প্রকাশ করা হয়। অবশ্য কবিতা কেন্দ্রিক কিছু পত্রিকায় কবিতা সম্পর্কিত প্রবন্ধ-নিবন্ধও প্রকাশিত হয়। শুধুমাত্র গল্পপত্রিকা ও প্রবন্ধ-নিবন্ধের পত্রিকাও প্রকাশিত হয়, কিন্তু তার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। কবিতা বেশি লেখা এবং প্রকাশিত হওয়ার আর একটা কারণও থাকতে পারে, কারও কারও ক্ষেত্রে হয়তো গল্প উপন্যাস লেখা এবং প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখা থেকে কবিতা লেখা সহজ বলে মনে হয়। যাইহোক এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা সঠিক কারণ নির্দিষ্ট করতে পারবেন, কিন্তু এই সূত্রে যে ব্যাপারটা উল্লেখ করার জন্য আমার এসব কথার উপস্থাপনা, তা হচ্ছে, স্বরচিত কবিতাপাঠের আসর যেমন প্রায় নিত্যদিন বিভিন্ন জায়গায় আয়োজিত হয়, তার পাশাপাশি স্বরচিত গল্পপাঠ ও প্রবন্ধ-নিবন্ধ পাঠের আয়োজন করা হয় না বলা যেতেই পারে। এর কারণও একাধিক হতেই পারে। প্রথমত যেকথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, গল্পকার ও  নিবন্ধকারদের থেকে কবির সংখ্যা অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত একটা গল্প বা প্রবন্ধ-নিবন্ধ পাঠ করতে যতটা সময় লাগে, সেই একই সময়ে অন্তত পাঁচ-ছ’জন কবি তাঁদের কবিতাপাঠ করতে পারেন। আর তাই স্বাভাবিক কারণেই কবিদের সঙ্গে দর্শকশ্রোতাদের যতটা সাক্ষাৎ পরিচয় ঘটে, শুধুমাত্র গল্পকার ও প্রবন্ধ-নিবন্ধকারদের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ থাকে না।

সম্প্রতি গত ৫মে সোমবার মুদ্রিত ‘কালিমাটি’ পত্রিকা ও ‘রবীন্দ্রনাথ’ পত্রিকার উদ্যোগে প্রথম গল্পপাঠের আসর আলোচনাসভা আয়োজিত হয়েছিল কলকাতার কলেজ স্কোয়ার সংলগ্ন বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটে চাঁদপুর সম্মিলনীর সভাঘরে। বিকেল ৫টা থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত এই আসরে গল্পপাঠ করেছিলেন সাম্প্রতিক বাংলা সাহিত্যের চারজন অত্যন্ত প্রতিভাবান গল্পকার তৃষ্ণা বসাক, শতাব্দী দাস, অলোকপর্ণা এবং মনীষা মুখোপাধায়। তাঁদের এই পঠিত গল্পগুলি নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে বিশদ ও তীক্ষ্ণ আলোচনা করেন চারজন বিশিষ্ট গল্পকার ও প্রাবন্ধিক বাসব দাশগুপ্ত, উপল মুখোপাধ্যায়, তপনকর ভট্টাচার্য এবং রাহুল দাশগুপ্ত। পরিশেষে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিমান মৈত্র, সুদীপ দাস এবং শ্রেষ্ঠা সিনহা। অনুষ্ঠানে  সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ধ্রুব হালদার। আসরের শুরুতে ‘কালিমাটি’ পত্রিকার পক্ষে সম্পাদক কাজল সেন ও ‘রবীন্দ্রনাথ’ পত্রিকার পক্ষে সম্পাদক পূর্ণেন্দুশেখর মিত্র প্রাথমিক বক্তব্য রাখেন। আসর ও আলোচনাসভা সঞ্চালন করেন কাজল সেন এবং সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের মূল সংগঠক ছিলেন টিভি সাংবাদিক বিধান ঘোষ। বলা বাহুল্য, বাংলাসাহিত্য ক্ষেত্রে কলকাতায় এই আয়োজন ছিল সাম্প্রতিক কালে অভিনব ও অভূতপূর্ব। অদূর ভবিষ্যতে আরও অনেক এই ধরনের আসর ও আলোচনাসভা আয়োজনের জন্য আমরা দায়বদ্ধ।  

‘কালিমাটি অনলাইন’ ব্লগজিনের প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের জানাই গ্রীষ্মকালীন আন্তরিক শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :

kajalsen1952@gmail.com / kalimationline100@gmail.com

দূরভাষ যোগাযোগ : 9835544675

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন