কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

তিলোত্তমা বসু

 

কবিতার কালিমাটি ১৪৫


রোদ্দুরের স্বভাব-চরিত্র     

 

শান্ত মেয়েটির পরে

অকথ্য অত্যাচারের মতো

চিল-চিৎকারে পাড়া কাঁপাচ্ছে

          মে মাসের ভীষণ রোদ্দুর

এগিয়ে আসছে না তবু কেউ-ই

 

আসে না কখনো

পিছল কলতলায়

‘ছোটলোক’ শব্দটি বাতাসে

গলায় দড়ি হয়ে ঝুলছে;

হয়রানি ঘুর-ঘুর

ঘুর-ঘুর করেই চলেছে ---

          থানা-পুলিশ… থানা-পুলিশ…

 

বেলা পড়ে আসে

 

বুড়ি পিসিশাশুড়ির মতো

বিচার এলিয়ে পড়ে ভাতঘুমে

             হাতপাখা নাড়তে নাড়তে…

 

রঙ নাকি শব্দ?

 

বিষণ্নতা কি রঙ নয়? কেবল শব্দ?

   ---বোবায় পাওয়া

 

গাছেদের বলা কথা

         শুনতেই পারছ না

বুঝতে পারছ না কেন বেঁচে আছ

অথচ মত্যুর ভয় তোমার মন

দিন দিন বর্ম হয়ে উঠছে কেমন…

এ শহর অচেনা ভাষায়

জানতে চাইছে বাড়ির ঠিকানা

 

আর তুমি আকাশ বাতাস ফাটিয়ে বলছ

তোমার কোথাও  ঘর নেই বাড়ি নেই,

ঘর নেই বাড়ি নেই…

চেনা-পরিচিত সব মুখ পাথরের

 

কয়েদিদের ইউনিফর্ম পরে

মার্চ করে চলে যাচ্ছে বিকেলেরা…

 

যজ্ঞ

 

তিনজন আগুন আমাকে

ক্ষণকাল দেয় না তিষ্ঠতে

 

দপ করে জ্বলে উঠে রাগ

দিশাহারা ক্রোধের ধোঁয়ায়

ঢেকে যায় চারদিক

দেখিনি কেন যে  

শিশিরের টুপটাপ ঘাসের ভিতরে

ফুলের নীলাভ মুখ, অপ্ৰস্তুত…

 

বাসনায় দগ্ধ হতে হতে 

ভুলে যাই সবুজ আভার গ্রহে  

পাখিদের ঘরবাঁধা, বেড়ালছানার চোখে

টলমল আলো।

কড়া নেড়ে নেড়ে ফিরে যায় ছোটমাসী

একবুক অভিমান নিয়ে

 

ক্ষিদে কি আগুন খুব কমলারঙের

শরীর তাড়িয়ে ফেরে

নিজেকে দেখেছি দূর থেকে

উন্মাদিনী ঘোর, কাঙালিনী,

গড়াগড়ি যায় পাথরের শানে আর

নিজেরই মুন্ড ছিঁড়ে করে রক্তপান…

 

তিনজন অগ্নি

থাকেন আমার দেহে

যজ্ঞ হয় সারাক্ষণ

ওম ওম ধ্বনি  টের পাই

কুটি কুটি কবিতার

ক্ষমার অযোগ্য ক্ষমা

লেগে থাকে চিরুনীতে

বৈদ্যুতিক!

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন