অন্তর্যামী
– ১
তোমার পদ্মপাদে মাথা রাখি। আনত হই বহুবার। একটা দৃঢ়চেতা আত্মবিশ্বাস জাগে। অহংয়ের ভার মুছে আসে। ক্ষতে প্রলেপ পড়ে, যে ক্ষত একটু একটু করে আঘাতে ঘর বেঁধেছিল। নিরাময় হয়ে উঠি। তুমি হাসতে থাকো। নির্মেদ হাসি। বাক্যমনাতীত আনন্দঘন স্নেহাতুরা হাসি। অমলিন প্রেক্ষাপট জমে ওঠে। সন্ধ্যারতির ছন্দে সেজে ওঠে গোটা বেলুড় মঠ। আত্মিক অনুভবগম্যতায় কণ্ঠে ধ্বনি ওঠে। ভাবমোহিত অপার্থিব কোরাসে আমার একক সত্তা তোমার স্পন্দনে মিশে যায়...
অন্তর্যামী
– ২
কোনো এক অজানা সতর্কতায় হাত বাড়িয়ে ধরে থাকো আমার হাত। আমিও নির্ভরতা মাখিয়ে রাখি সেই স্পর্শের আদরে। স্পর্শের কোনো বাচিক ভাষা নেই। মায়াময়ী অবয়ব দেখি সুনন্দ অনিন্দ্যসুন্দর। স্নেহ দিয়ে আঁকা দু'চোখ। করুণাঘন। আমার নাগরিক অভাব মিটে আসে। নিরন্তর একটা তৃপ্তির ঘুম জমে আসে ক্যানভাসে। ক্লান্ত শরীর মেলে ধরি পদপল্লবে। শান্ত হই। কোল পেতে বসে থাকা অবয়ব দেখি। আমার ছেলেবেলার কোনো এক স্মৃতিকে আঁকড়ে শুধু মায়ের কথা মনে পড়ে...
অন্তর্যামী
– ৩
উপনিষদে প্রদর্শিত আত্মজ্ঞান জেগে ওঠে। যে সব অনাগত ভাবনারা পায়ে শিকল বেঁধে বসেছিল, তারা সমস্বরে মুষ্টি পাকিয়ে নেমে আসে রাজপথে। সমদ্বিপদ মেলাই। হেঁটে চলি ভালোবাসার দাগ আঁকড়ে। মহাজাগতিক বিভার আলো জমতে থাকে আমার আজানুলম্বিত শ্বেত ক্যানভাসময়। তত্ত্ববিশ্ব ভাবতে বসি বিশ্বায়ন উত্তর জগতের বুকে। ক্ষোভে ব্যর্থতায় অবাণিজ্যিক পণ্য হয়ে উঠতে চায় আমার মেধামঞ্জরী। হে অন্তর্যামী, তোমার অমিত হাস্যকলায় জেগে উঠুক এবার ভোরের গন্ধ। আমার অনতিক্রান্ত জীবনের পাঠক্রমে নতুন অধ্যায়ের প্রাথমিক পাঠ শুরু হোক...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন