আড্ডা টেবিলের গণেশদা
দেবব্রত চক্রবর্তী
আমাদের আর্ট কলেজ জীবনের প্রারম্ভেই শিল্পী গণেশ পাইন আমাদের মধ্যে তাঁর শিল্পদ্যুতি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। ষাট দশকের মাঝামাঝি চাক্ষুষ পরিচয় আর সত্তর দশক থেকে প্রায় দু’দশক জুড়ে গণেশদার আড্ডা টেবিলের একজন মন্ত্রমুগ্ধ আড্ডাধারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম। খুব কাছ থেকে মানুষটিকে জানার ও বোঝার সুযোগ ঘটেছিল। গণেশদার আড্ডার ঠেক কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ৬০ দশক থেকে ৯০ দশক জুড়ে। ধর্মতলার সোডা ফাউন্টেন রেস্টুরেন্ট বা কাফে ডি মণিকোতে আমার সেরকম ভাবে যাওয়া হয়ে ওঠেনি, তবে কলেজ স্ট্রিটের বসন্ত কেবিনের আড্ডার টেবিলে একটু জায়গা পেয়েছিলাম। প্রথম আলাপ উত্তর কলকাতার শ্রীমানী মার্কেটের দোতলার পলেস্তারা খসা মন্দার মল্লিকের স্টুডিওতে। ওখানে উনি বিনা পারিশ্রমিকে অ্যানিমেশন ড্রইং করতেন। আমার অ-শিল্পী বন্ধু গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়ে বলেছিল, ‘গণেশদা, আমার এই বন্ধু আর্ট কলেজে পড়ে। আপনার ভক্ত’। গণেশদা ছবি আঁকতে আঁকতে চশমার ফাঁকের উজ্জ্বল দুটি চোখে আমাকে পর্যবেক্ষণ করে গোপালকে বলেছিলেন, ‘আমার আবার ভক্তও আছে নাকি?’ মধ্য কলকাতায় গণেশদার পৈতৃক বাড়ি ছিল কবিরাজ রো-তে। সেখানে কর্মরত ঐ শিল্পীকে দেখেছি। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর ফুটপাথ ধরে ধুতির কোঁচা সামলে গেরুয়া পাঞ্জাবী পরিহিত গণেশ পাইনের সঙ্গে পথে হেঁটেছি। বিস্মিত হয়েছি ওঁর শিল্প সাহিত্যের পড়াশোনায়। ছবির নির্মাণ, কম্পোজিশনের যথার্থতা আর গণেশ ঘরাণার টেম্পারা সমৃদ্ধতা আমাদের বিস্মিত ও শ্রদ্ধানত করেছিল, যা আজও অটুট। ‘দ্য স্টেটসম্যান’-এর কার্টুনিস্টের চাকরি হওয়ার পরে আমার কার্টুন নিয়ে আগ্রহভরে নানা প্রশ্ন করতেন। ‘আমারও প্রিয় বিষয় কার্টুন’ –- একথাও বলতেন। সমাজের বিভিন্ন দিক কার্টুনিস্ট তুলে ধরেন, সেই কথাটা বলে তিনি লন্ডনের বিখ্যাত ‘পাঞ্চ’ ম্যাগাজিনের কার্টুনিস্ট ডেভিড ল্যাংডনের গল্প শুনিয়েছিলেন। একটা বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে চলে যেতেন। এখন তো চলে গেলেন অন্যলোকে।
ভারতবর্ষের প্রথম সারির এই শিল্পীর ২০১৩-র ১২ মার্চ প্রয়াণের খবর দেশে ও বিদেশে আলোড়ন তুলেছিল।
আমাদের আর্ট কলেজ জীবনের প্রারম্ভেই শিল্পী গণেশ পাইন আমাদের মধ্যে তাঁর শিল্পদ্যুতি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। ষাট দশকের মাঝামাঝি চাক্ষুষ পরিচয় আর সত্তর দশক থেকে প্রায় দু’দশক জুড়ে গণেশদার আড্ডা টেবিলের একজন মন্ত্রমুগ্ধ আড্ডাধারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম। খুব কাছ থেকে মানুষটিকে জানার ও বোঝার সুযোগ ঘটেছিল। গণেশদার আড্ডার ঠেক কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ৬০ দশক থেকে ৯০ দশক জুড়ে। ধর্মতলার সোডা ফাউন্টেন রেস্টুরেন্ট বা কাফে ডি মণিকোতে আমার সেরকম ভাবে যাওয়া হয়ে ওঠেনি, তবে কলেজ স্ট্রিটের বসন্ত কেবিনের আড্ডার টেবিলে একটু জায়গা পেয়েছিলাম। প্রথম আলাপ উত্তর কলকাতার শ্রীমানী মার্কেটের দোতলার পলেস্তারা খসা মন্দার মল্লিকের স্টুডিওতে। ওখানে উনি বিনা পারিশ্রমিকে অ্যানিমেশন ড্রইং করতেন। আমার অ-শিল্পী বন্ধু গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়ে বলেছিল, ‘গণেশদা, আমার এই বন্ধু আর্ট কলেজে পড়ে। আপনার ভক্ত’। গণেশদা ছবি আঁকতে আঁকতে চশমার ফাঁকের উজ্জ্বল দুটি চোখে আমাকে পর্যবেক্ষণ করে গোপালকে বলেছিলেন, ‘আমার আবার ভক্তও আছে নাকি?’ মধ্য কলকাতায় গণেশদার পৈতৃক বাড়ি ছিল কবিরাজ রো-তে। সেখানে কর্মরত ঐ শিল্পীকে দেখেছি। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর ফুটপাথ ধরে ধুতির কোঁচা সামলে গেরুয়া পাঞ্জাবী পরিহিত গণেশ পাইনের সঙ্গে পথে হেঁটেছি। বিস্মিত হয়েছি ওঁর শিল্প সাহিত্যের পড়াশোনায়। ছবির নির্মাণ, কম্পোজিশনের যথার্থতা আর গণেশ ঘরাণার টেম্পারা সমৃদ্ধতা আমাদের বিস্মিত ও শ্রদ্ধানত করেছিল, যা আজও অটুট। ‘দ্য স্টেটসম্যান’-এর কার্টুনিস্টের চাকরি হওয়ার পরে আমার কার্টুন নিয়ে আগ্রহভরে নানা প্রশ্ন করতেন। ‘আমারও প্রিয় বিষয় কার্টুন’ –- একথাও বলতেন। সমাজের বিভিন্ন দিক কার্টুনিস্ট তুলে ধরেন, সেই কথাটা বলে তিনি লন্ডনের বিখ্যাত ‘পাঞ্চ’ ম্যাগাজিনের কার্টুনিস্ট ডেভিড ল্যাংডনের গল্প শুনিয়েছিলেন। একটা বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে চলে যেতেন। এখন তো চলে গেলেন অন্যলোকে।
ভারতবর্ষের প্রথম সারির এই শিল্পীর ২০১৩-র ১২ মার্চ প্রয়াণের খবর দেশে ও বিদেশে আলোড়ন তুলেছিল।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন