দ্বিধা
এখন কেবল পেছনে তাকিয়ে
পথটাকে দেখি
হলুদ দালান, শার্সিতে গুলির
ক্ষতচিহ্ন, খসে
পড়া পলেস্তরা, কখনো কখনো
ভীষণ সাবেকী
একজন মানুষ, নির্লিপ্ত,
অনুযোগহীন বসে
আছেন ইজিচেয়ারে, বিস্ময়হীন
দু’চোখ,
অন্ধ।
অথবা আমার পিতা, খুঁড়ছেন
বাড়ির উঠোনে
এক সুবিশাল কবর। এসব
অর্থহীন দ্বন্দ্ব
আমাকে আপ্লুত করে, রাখে
আটকে নিভৃত কোণে।
অনাকাঙ্ক্ষিত কিসের এই
দ্বিধা? দেয় না আমাকে
সম্মুখে তাকাতে, শুধু টেনে
ধরে জামার আস্তিন!
খসে পড়া ডিম, ঝড়াহত
বাবুইয়ের বাসা থেকে
অতীত স্বপ্নেরা আজ ক্রমাগত
ত্রাহি ডাকে
খরাক্রান্ত বুভুক্ষু মাটিতে
পড়ে পড়ে রাত দিন।
প্রসারিত হাত গেছে অভিশাপের
দেওয়ালে ঠেকে।
আরো একটি সকাল
আরো একটি সকাল দরোজায় আলো ফেলে বলে
তুমি হেঁটে যাও
রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিবসের দিকে
পেছনের সুদীর্ঘ রাতের
ইতিহাস খেলাচ্ছলে
শৈশবের শ্লেট থেকে মুছে
দিয়ে আমি বাড়াই পা।
অসভ্য অতীত কেন টেনে ধরে
জামার কলার?
দু’পায়ে জড়ানো গারদের ডান্ডাবেড়ি চৌদ্দশিকে
আটকাতে চায় সুদৃঢ় প্রত্যয়।
করুণা ও কৃপা
সম্ভ্রমের আব্রু, একমাত্র
অবলম্বন আমার।
কাফনের মতো সেঁটে আছে দ্বিধা, তাকাতে পারি
না
অপেক্ষমান আলোর দিকে হায়,
কম্পমান দু’পা।
যে অমোঘ অন্ধকার এসেছি
মাড়িয়ে, তার সাথে
সখ্য কতখানি গভীর আমার,
কতখানি ঘৃণা?
কেন বারবার মনে পড়ে তাকে,
সে-ই অপরূপা
নির্মম বৃত্তের পাকে
বেঁধেছে সে কৃষ্ণপক্ষ রাতে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন