প্রতিবেশী সাহিত্য
কে এলটিনে-র কবিতা
(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)
কবি পরিচিতি : কে এলটিনে সুদানের কবি। নিউবিয়ান বংশোদ্ভূত। তিনি বহু ভ্রমণ করেছেন,
এবং ফ্রানস, গ্রীস,ও ইতালিতে উচ্চশিক্ষা পেয়েছেন, ট্রিপল মাস্টার্স করেছেন ইউরোপীয়ান
লিটেরারি কালচারের ওপর। বর্তমানে স্পেনে ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষকতা করছেন। তাঁর কবিতা
বহুল প্রচারিত। আফ্রিকান আমেরিকান রিভিউ, ওয়ার্ড ফাউন্টেন, ইত্যাদি বহুপোয়েট্রি পেজ-এ
প্রকাশিত হয়। তার ‘মরাল জাজমেন্ট অফ বাটারফ্লাইজ’ কাব্যগ্রন্থ আন্তর্জাতিক পুরস্কারে
ভূষিত হয়েছে। ‘ইন্টারন্যাশনাল বেভারলি প্রাইজ
ফর লিটারেচার’ ২০১৯এ এবং ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে।
Heirloom (উত্তরাধিকার)
নব্বই হাজার নর-নারী ও শিশু
তাদের শ্রমের ধুলিকনা
ঢেলে দিয়েছে নদীতে...
তবুও
কখনো ব্রিজ তৈরি হয়নি!
ছ'টা প্রচন্ড গর্জনে বহমান
জলপ্রপাতের নিচে জমা আছে
আমাদের পূর্বজদের অস্থি।
আর আমার বিছানার নিচে তাদের
জমি জরিপ করার ফাঁপা, লম্বা শুকনো
লতার ফিতে।
ক্রীতদাস ছিলো তারা...
সূর্য তাদের চামড়া পুড়িয়ে দিয়েছিল
আর হৃদয়কে রসহীন কিসমিস!
একসাথে আমরা জল ভাগ করেছি
মারমেইডদের সাথে কেঁদেছি
যারা আমাদের মত অনগ্রসরদের
আওয়াজ দিয়েছে!
Forget (ভুলে যাওয়া)
আমি কপালের কাটা দাগ ও জন্মচিহ্নের
উল্লেখ করি, যখন জানতে চাও
আমি কোথাকার?
কারণ বলতে গেলে জীবন
অবিশ্বাস্য লাগবে।
তুমি নিজের ঘরে ফিরে যাও
দুপুরের খাওয়া শেষে
একটা ছোট্ট মিষ্টি ঘুম দাও।
আমি কাপড় কাচি আর
বারবার শুনতে থাকি "ওম কালসুম"।
শুনতে থাকি সেই লাইনগুলো...
যেখানে ধোঁয়াহীন গরম পাণীয়
সে তার প্রিয়তমের হাত থেকে নেয়।
আর শুনি... সাদা পাতার
স্বপ্নের গল্প!
তুমি আমার এপার্টমেন্টের পাস দিয়ে
যাও
ধূপের সুগন্ধিত ধোঁয়ার জন্য, মস্করা
কর!
আমরা অবাক হই, এই পায়রার মত
শহর দেখে। অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়ালেও
এসে থামো নিজের নির্দিষ্ট জায়গায়।
যেখানে কৃতজ্ঞ-চিত্তে শুনতে পাও...
তোমাদের
নাম স্মরণ করা হচ্ছে!
Zemiru (অন্তর্লীন চেতনা)
আরবিক জনশ্রুতি আছে, "জীবনের
গান
গাইতে হলে শয়তানের থেকে দূরে থাকো।"
ভাষার সমস্যা হ'ল আমরা ভালোবাসা দিয়ে
শুরু করি এবং শিশুদের মধ্যেও সেটা
চিরকালের জন্য সঞ্চারিত করে দিই।
প্রথমত তোমার অধরোষ্ঠের মাঝখানে
এবং আমার পদক্ষেপে একটা কম্পাস
বসিয়ে দিতে চাই... যাতে বুঝতে পারি
কতজন তোমার মিথ্যায় বিভ্রান্ত
দিগভ্রষ্ট হয়ে আমাদের মাঝ থেকে
চির-বিদায় নিয়েছে!
যা কিছু সুন্দর বাগান ছিলো স্মৃতিতে
এখন এক বিধ্বস্ত কষ্টের গল্প হয়ে
রয়ে গেছে!
সোফায় ঘুসি মেরে নিশান বানিয়ে দিই
যখন ভাবি তোমার হিংসেগুলো
কতটা জোরে সমুদ্রে ছুঁড়ে দিয়েছিলাম
কতক্ষণ অপেক্ষায় ছিলাম স্তব্ধ তরঙ্গের
জন্য।
কতক্ষণ আমার হৃদয় বিবর্ণ এবং
ভারসাম্যহীন হয়ে ভেসেছিলো!
যাদুকরী পাখিগুলো তাদের ডানায়
সব উড়িয়ে নিয়ে গেলো!
এখন তোমার মুখ আমার কাছে
একখানা ভাঙা থালা
শিখে নিয়েছি কেমন করে
জীবনের গান গাইতে হয়!
সুন্দর অনুবাদ। ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুন