কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

বিদিশা সরকার

 

ব্যক্তিগত গদ্য




তুমি চিত্রার্পিত হলে বলব উভচর অসুখের ভাইরাস থেকে দূরে থাক। নিজেকে খন্ড খন্ড করে জোড়া লাগানোর বিদ্যা রপ্ত করে অন্ধকারেই সেরে নিই  জোড়াতালির কাজ। তোমার পছন্দ সমগ্রটাই। সেখানে আপোষের প্রশ্নই আসে না। আর নিজের কয়েক কপি জেরক্স থেকে একটা একটা করে তুলে দিই অন্ধকারেই। এক থেকে বহু'র এ এক আজব কুদরতি। আমি বুঝতে পারি আগামীকাল কী হবে। তার পরের দিনের ছবিও পরিষ্কার। ক্ষরণ দৃশ্যমান নয় বলেই অধিত কার বোধ লাই-ডিটেক্টরের সামনে বসিয়ে সম্পর্কে সীলমোহ! এ এক আদিম খেলা। কোনও কালশিটেই গোপন থাকে না। নিজেকে প্রমাণ করতে তুমি যা যা করে চলেছ, তাকে অগুরু চন্দনে মলম বানিয়ে তোমাকেই বলেছি - যাও লাগিয়ে দিয়ে এস তার দহনে। তাকে তাপ দাও, তাকে চুম্বন করো - জাগাও। জাগাও তাকে। দূরত্ব হাসে। ভিতরে চামুণ্ডার প্রলয় বাইরে সেবা  নিকেতনের নির্মাণে তুমি যে যে রঙ ব্যবহার করেছ সেগুলি শুকোতে একরাত্রিই যথেষ্ট। সেই সময়টুকু দূরত্বই বিধান। চলতি ভাষায় নিয়তি। আমার উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে শ্মশানযাত্রীরা-

কোন বিচ্ছুরণজাত অমোঘ নিয়তি পরিকল্পনাহীন এক সুয়েজের ভিতরে একটা অস্তিত্বকে লালন করছে একপক্ষকাল! আমার বিস্ময়ের কল্পতরু চাহিদার কথা জানলেও এক বিকল্প কল্প বিজ্ঞানে প্রত্যঙ্গের মসলিন অনুরাগ স্বীকার করে নিচ্ছে সমুদ্রের আহ্বান। এ হল জাগরণের ফলশ্রুতি। যেখানে দিনের আলো বলে কিছু নেই। সন্তর্পণের পা অভ্যস্ত পিছল পথে গর্ভগৃহ পর্যন্ত। অসতর্ক পায়ে পিলসুজ উল্টে গেলে সেখানেই থেমে যাওয়া। বাকিটা তার নির্দেশিত।

উচ্চারণ নয়, আচরণের সংযম। অন্ধকারেই শিক্ষিত হয় মানুষ। ধূপ দীপের ভজনা অথবা সংকীর্তনের ডামাডোলে পশু শিকার থেমে থাকেনি। এও তো এক চাহিদাই। সমস্ত আলোর পথ বন্ধ করে যে অশ্রুনদী, তার কথা শুনবে বলে যারা অপেক্ষমান, তাদের টিকিট কাটতে হয়নি। এক ঐশ্বরিক আলোর মুখোমুখি  দাঁড়িয়ে আত্মকথন! ঐশ্বর্যের এক কণাও যার প্রয়োজন নেই তার সামনে উপঢৌকনের এক পাতালপুরী। প্রত্যাখ্যানের পরে যেমন বিস্বাদ লাগে পূর্বতনের চুম্বন! আমার অবস্থানের অন্ধকারে আয়নাটাও কখন যে ভেঙে গেছে! সহনশীলতা বিষয়ে মনে হয় আমিই শেষ কথা। কারণ আমার গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে নিজেই সন্দিহান। পথই যখন মার্গ ভেবে নিয়েছি তখন সূর্যাস্তের পর অন্ধকারকে অজ্ঞাতবাসের কথা জানিয়েছি অথবা ফিরে আসার কথাও। তার নিঃস্পৃহতা আমাকে অবাক করেনি অথবা পরিজনের উপেক্ষা। বোধগম্য নই বলেই জিজ্ঞাসার কৌতূহল একটা বেড়ে ওঠা চারাগাছের প্রতি কিছুদিনই। রেগিস্থান বিষয়ে পাঠ্য পুস্তকেই। অথচ একটা পীচ রাস্তাকে যখন গলে যেতে দেখেছি, তখন তাকে একটা ক্ষুধার্ত জিভ ছাড়া ভবিনি কিছুই। গিলে নিচ্ছে... একটা ন্যানো, জেন, প্রাইভেট বাস অথবা মিছিলের প্রতিবাদ। শুরুটা দেখতে পেলেও শেষটা অনুমান। প্রতিবাদ কী ঘুমায়? কে জাগিয়ে দেয় তাকে? নিজের মত ভাবতে ভাবতে কখন যে চরাচরের সঙ্গে পরিচয়! কখন যে নদীর ভাষায় মনান্তরে! কখন যে উপেক্ষার অট্টহাসিকে সহবতের আপ্যায়ন! বিস্ময়বোধক! এতো রঙের কী প্রয়োজন? এতো বারণের! ওয়ান্টেড আর আন-ওয়ান্টেডের ফারাক নিয়ে ভেবে দেখেছি, নিমন্ত্রণে নিজেকে ওয়ান্টেড মনে করলেও আসলে হয়ত তাদের কাছে আকাঙ্ক্ষিত নই সেক্ষেত্রে তাদের বিব্রত করায় অনুশোচনায় বাতিল করেছি পরবর্তী আপ্যায়ন।

দুর্বোধ্য মানুষকে বলেছি আরেকটু সহজ হও। আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার মানুষটি হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে উষ্ণ প্রস্রবণের রোড ম্যাপ। বাসের নাম্বার পড়তে পারছি না অথবা আরেকটা মোবাইল বাজতে থাকলে, সরে যাচ্ছে পায়ের তলার মাটি। ওয়ান্টেডের মাথার দাম লাখ ছাড়িয়েছে। তাকে রক্ষা করার দায় একটা সঠিক প্রেম এখন নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। সহনশীলতা বিষয়ে আমিই শেষ কথা নই। কারণ অশ্রু মানে পুষ্পবৃষ্টি।

 

 

 

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন