চারানা আটানা
৩০) কাল ছিলো...
চারানা আটানার
ঘেরাটোপের বাইরে আপনারা যারা আমার লেখালিখি নিয়ে কিছুটা অবহিত, তাঁরা হয়তো খেয়াল করেছেন যে
রবীন্দ্রনাথের এই কবিতাটার ওপর আমার এক বিশেষ দুর্বলতা আছে –
কাল ছিলো ডাল খালি,
আজ ফুলে যায় ভরে।
বল দেখি তুই মালি
হয় সে কেমন করে?
এর অনেক কারণ আছে।
যুক্তাক্ষর-বর্জিত এই শিশুপাঠ্য চরণ-কটি ছন্দের সুষমায়, অন্ত্যমিলে ও সহজ দর্শনে
ভরপুর। কিন্তু এর তাত্ত্বিক আলোচনা তো চারানা আটানার উদ্দেশ্য হতে পারে না! আমি বহুদিন ধরেই ভাবছিলাম
এই লাইনগুলো কি রবীন্দ্রনাথের মৌলিক, না এর মধ্যে আগের কোনো কবির লেখার
ছায়া আছে?
এই ভাবনার পেছনেও
একটা কারণ যে নেই, তা নয়। আজকাল তো পাঠকের চেয়ে লেখক বেশি, এই যেমন আমি। তাঁত-বোনা
তাঁতী হঠাৎ এঁড়ে গরু কেনার মতো শব্দচর্চার
কর্ডলাইনে ঢুকে পড়েছি অনাহূত। কিন্তু চাইলেই তো হলো না, ‘কালিমাটি’র সম্পাদক কাজলদার মতো দু’একজন ছাড়া পাত্তা কে দেবেন আমার মতো অর্বাচীনকে? আমার সাহিত্য তাই ফেসবুকে সীমাবদ্ধ। তাতে
অসুবিধা নেই, যাই ইচ্ছে পড়বে, কমেন্ট করবে, না ইচ্ছে হলে করবে না। কিন্তু ইদানিং
দেখছি আমার সাহিত্য কমা-ফুলুস্টপ-সেমিকোলন সমেত ঝেড়ে দিচ্ছেন অনেকেই, চালিয়ে
দিচ্ছেন নিজের নামে। সাহিত্য-সঙ্গীতে ‘অনুপ্রেরণা’ বস্তুটি বহু দিন ধরেই প্রচলিত।
বাপ্পী লাহিড়ি, অন্নু মালিক জাতীয় সঙ্গীতকার তো অনুপ্রাণিত হয়েই চালিয়ে দিলেন পুরো
জীবন। আমার সাহিত্য থেকে কেউ যে অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন, সেটা নিশ্চয় মহৎ ব্যাপার,
কিন্তু পুরো মালটা অন্যের নামে চলে গেলে সংশয় হতে পারে, কে কার থেকে
অনুপ্রাণিত হয়েছে! মানে, সাদা বাংলায়,
আমিই কি আমার লেখাটা ঝেড়েছি?
যাক গে, মূল আলোচনায় ফিরে আসি। ‘কাল ছিলো’ কবিতাটা এত সুন্দর, আমার মনে হলো, এর পেছনে যদি কারো লেখার অনুপ্রেরণা থাকে, বা এটা
যদি আরো কাউকে অনুপ্রাণিত করে থাকে, সেটা আপামর জনতাকে জানানো প্রয়োজন।
সুতরাং এই নিয়ে আমি
বেশ কিছুদিন রিসার্চ টিসার্চ করলাম। তার ফল হচ্ছে এই পাঁচ পাতার থিসিস। আপনারা দেখে
অবাক হয়ে যাবেন, এই বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা জারি আছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই এবং এর
ওপর রবীন্দ্রনাথ যেমন লিখেছেন এবং স্থান দিয়েছেন সহজ পাঠে, তেমনি তার আগে ও পরেও
অনেকেই লিখেছেন, কিন্তু প্রকাশ করেন নি। পান্ডুলিপিতেই রেখে দিয়েছেন। ভাগ্যক্রমে
সেই ম্যানাস্ক্রিপ্টগুলোর কিছু কিছু আমার হস্তগত হয়েছে, আর তাই আমি নিজে জানতে আর
আপনাদের জানাতে পারছি।
এই বিষয়ে সবচেয়ে
পুরনো কবিতা – শ্লোক ইন ফ্যাক্ট – পাচ্ছি ঋগ্বেদে। ঋক্ যে কার লেখা তা তো কেউ
জানে না। তবে এটা বিশ্বামিত্র বা
ঋষি অগস্ত্যর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রবীন্দ্রনাথ এই
শ্লোকটা নিশ্চয় জানতেন, কেননা উনি যেটা লিখেছিলেন, সেই কবিতাটা এই শ্লোকটার হুবহু,
মানে ভার্বাটিম বঙ্গানুবাদ। এই সেই ঋগ্বেদীয় শ্লোক –
কল্য শাখা রিক্ত
আসীৎঅদ্য পুষ্পে ভারাক্রান্তা।
উদ্যানপাল ত্বং
জানসিকেন প্রকারেণ ইদম্ অস্তি।।
উপনিষদ বা পুরাণেও নিশ্চয়
আছে, কেননা ওগুলো তো ঋগ্বেদের ছায়া পোকাশোনীকৃত মানেবই টাইপেরই বস্তু, কিন্তু আমি
আর সেসব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করিনি। সবই স্যাংস্কৃটে লেখা, আর আমি বড় অসংস্কৃত প্রাণী।
কালিদাস নিয়ে আমার খানিকটা ইন্টারেস্ট ছিল, কেননা রবীন্দ্রনাথ নিজে ওঁকে গুরু বলে
মানতেন, লিখেছিলেন – ‘আমি যদি জন্ম নিতেম কালিদাসের কালে’, ইত্যাদি। তো দেখা
গেল, ইয়েস, কালিদাসও ঝেড়েছেন, তবে পুরোটা না। কালিদাসের একটা ঘ্যাম ছিল, উনি ঝাড়াঝাড়ি ঠিক পছন্দ করতেন
না, নাটবল্টু সমেত মানে কমা-ফুলস্টপসহ তো কভি নেহি। তবে এই শাশ্বত শ্লোকের মায়া উনাকে কিঞ্চিৎ মোহের আবরণে ছেয়ে
ফেলেছিল হয়তো, যার হাত থেকে উনি পুরোটা
বেরোতে পারেন নি। তাই লিখে গেছেন –
শুষ্কং কাষ্ঠং
পুষ্পাদিপূর্ণম্।
মালী ন জানতি কুতো
মনুষ্যাঃ।।
কালিদাসের পরেও
একগাদা সংস্কৃত মহাকবি জন্মেছেন আর কাব্য-নাটক লিখে গেছেন। তারাও কি আর এটা নিয়ে
কিছু লেখেন নি? নিশ্চয় লিখেছেন। কিন্তু বাংলা নিয়েই যেহেতু আমাদের কারবার – আমি
বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই, আমি আমার আমিকে, এটসেট্রা – আমি ভাবলাম বরং
সন্ধান করি এমন কারো লেখার মধ্যে, যেখানে সংস্কৃতটা আস্তে আস্তে বাংলা হয়ে উঠছে।
ঠিক ধরেছেন, কবি জয়দেব, যিনি দেহি পদপল্লবমুদারম্ ইত্যাদি লিখে দেহটা পায়ের পাতা
থেকে ইঁদারায় ফেলে দিয়েছিলেন। তিনিও, বুঝতেই পারছেন, ডাল খালি রাখতে চাননি,
লিখেছেন এই বিষয় নিয়েও –
নীরস তরুবর পুরতো
ভাগে।
কেন প্রকারেণ ফুলদল
জাগে।।
মালী মূঢ়মতি মূক
বধির।
সব ফুল নীল কেন
জানিতে অধীর।।
অবভিয়াসলি মূক-কে
এখানে মূকো, বধির-কে বোধিরো, অধীরকে অধীরো পড়তে হবে। যে যুগের যা নিয়ম। আর এই
স্যাংস্ক্রিটাইজ্ড্ ফর্ম যখন সত্যি সত্যিই বাংলার দিকে ঢলে পড়লো, বড়ু চন্ডীদাস লিখলেন
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, তাতেও যে এই শুকনো ডালে ফুল ফোটানোর কীর্তন থাকবে, তাতে আর
আশ্চর্যি কী! আপনারা তো জানেন, তখনো বাঙালির জিভ মোটা ছিল, জিভছোলা
আবিষ্কার হয়নি, তাই ফুল বলতে পারত না, বলতো ফুঅ, নদী
বলতে পারত না, বলত নঈ। তো সেসব দিয়েই চন্ডীদাসের খুড়ো বানিয়ে ফেলেছিলেন খুড়োর কলের
মতো এই চার লাইন –
কত ফুঅ ফুটে বড়াঞি
শুখা শুখা ডালে।
উন্নয়নের বাঁশি বাজে
কালিনী নঈ কূলে।।
মাইকেল মধূসুদনের যে
এই নাকেকান্নামার্কা পদ্য পছন্দ হবে না, তা বলাই বাহুল্য। উনি সনেট ফনেট বানাতেন,
বাংলার গরুর গাড়ির বনেটে তাকে মানানসই করে তোলা কি চাড্ডিখানি কথা? তবু এই যে
চারটি লাইন, যার আবেদন চিরকালীন, মাইকেলের কবিমন তাকে নিশ্চয় স্পর্শ করেছিল, তা
নইলে তিনি কেন লিখতে যাবেন –
হে বৃক্ষ! কল্য
কান্ড চাঁচাছোলা গাল,
তা সবে – অবাক কান্ড
– অদ্য পুষ্পাবৃত!
কী কারণে? কহ শুনি, ও
উদ্যানপাল,
ঘুমাইতেছ? কর্ণে
ঢেলে দেব গব্য ঘৃত?
বোঝাই যাচ্ছে,
সনেটটা শুরু করেছিলেন সিরিয়াসলি, কিন্তু তিন লাইন লেখার পরেই একটু ডিস্ট্র্যাক্টেড
হয়ে গেছিলেন। অতিরিক্ত মদ্যপান করা স্বভাব ছিল তাঁর বলে আমরা পড়েছি; হয়তো তিন লাইনের পরে বোতল খালি
হয়ে গেছিল। বিদ্যাসাগরের কাছে হাত পাততেন, কিন্তু
টাকা পাঠাতে তো কিঞ্চিৎ সময় লাগত, আর ততদিন বোতলাভাবে সুচারু কাব্য বেরোতো না। তাই
হয়তো রেগেমেগে মালীর কানে গাওয়া
ঘি ঢেলে তেলেভাজার পরিবর্তে ঘিয়েভাজা বানানোর মতো আনপার্লামেন্টারি পোতিক্রিয়াশীল লাইন লিখে ফেলেছিলেন। যাকগে, এটা ভাগ্যিস
মেঘনাদবধ কাব্যে ঢোকান নি! রবীন্দ্রনাথ তার মেঘনাদবধকাব্যের কড়া সমালোচনা করেছিলেন ‘ভারতী’ পত্রিকায়, এটা পেলে তো এর
ওপরেই ডিসার্টেশন লিখে ফেলতেন নির্ঘাৎ।
রবীন্দ্রনাথের
সমসাময়িক অক্ষয়কুমার বড়ালও রবির সময়েই এটা নিয়ে পদ্য লিখেছিলেন, তবে রবিরটা তাঁর নিজের মতে বেটার বলে মনে
হওয়ায় ‘ভারতী’ পত্রিকায় ছাপাতে দেন নি। তাঁর ছন্দের হাত খারাপ ছিল না,
‘মধ্যাহ্নে’ কবিতাটা পড়তে পড়তে আমরা তো দুপুরবেলা ঘুমিয়েই পড়তাম। এই বিষয়ে লেখার
সময়েও সেই ছন্দ, সেই কারুকলা, সেই নৈপুণ্যের দৃষ্টান্ত রেখেছেন তিনি –
বালিগঞ্জ থেকে বালি কাল ছিল ডাল খালি
উন্নয়নের ফুলে আজ গেছে ভরে।
কষে তোরে দেব গালি যদি না পারিস মালি
বলতে, হচ্ছে এটা কী রকম করে।
রবীন্দ্রনাথের পর
প্রবলভাবে এলেন জীবনানন্দ। বিষয়-টিষয়কে গুলি মেরে কবিতায় জেগে উঠলো রূপসী বাংলার
চাল ধোয়া কিশোরীর শীত হাতখান। লাল লাল বটের ফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতার
মধ্যে আকাশে ফুটে উঠল সাতটি তারার তিমির। তিনি পথ চলতে লাগলেন হাজার বছর ধরে,
শ্রীলঙ্কা মালয়েশিয়া শ্রাবস্তী বিদর্ভ এটসেট্রা কভার করে বাংলায় ফিরে এসে দুর্ভাগ্যক্রমে
ট্রামে চাপা পড়ে মারা যাওয়ার আগে লিখে ফেললেন অনবদ্য ইঁদুর ও প্যাঁচার কাহিনী। শুকনো ডাল যে তার ভিজে মনকেও রসসিক্ত করেছিল, তার এক টুকরো উদাহরণ তিনি
রেখে গেছিলেন বনলতা সেন কবিতার খসড়ায় –
হাজার বছর ধরে আমি
পথ হাঁটিতেছি বাংলার পথে,
জঙ্গলমহল থেকে নিশীথের অন্ধকারে উত্তরে পাহাড়ে
অনেক হেসেছি আমি; চৌত্রিশ বছরের অসহ্য জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর একাত্তরের অন্ধকারে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারি দিকে দেখি শুধু খালি খালি ডাল,
উন্নয়নের ফুল ছেয়ে গেল তাতে, তেলেভাজার কামাল!
জঙ্গলমহল থেকে নিশীথের অন্ধকারে উত্তরে পাহাড়ে
অনেক হেসেছি আমি; চৌত্রিশ বছরের অসহ্য জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর একাত্তরের অন্ধকারে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারি দিকে দেখি শুধু খালি খালি ডাল,
উন্নয়নের ফুল ছেয়ে গেল তাতে, তেলেভাজার কামাল!
কল্লোলের কোলাহল
চলতে চলতেই এসে গেল কৃত্তিবাস। ওঝা না, পত্রিকা। গাঙ্গেয় বঙ্গের গঙ্গো-কবি সুনীল
লিখে চললেন একের পর এক কবিতা, গল্প, উপন্যাস। চৌত্রিশ বছরেরও অনেক বেশি। শেষের
দিকে এসে হঠাৎ এক মর্মস্পর্শী প্রদোষকালে খেয়াল গেল, তাই তো, এত লোক এত কিছু করবে
বললো, কথা তো কেউ রাখলো না। তার প্রেক্ষিতেই এসে গেল ডাল ও ফুলের ব্যাপারটাও –
কেউ কথা রাখেনি।
চৌত্রিশ বছর কাটলো
কেউ কথা রাখে না।
মামাবাড়ির মালী
ছাদেরালি বলেছিল
ওয়েট কোরো,
দাদাঠাকুর
আমি তোমাকে শুকনো
ডাল দেখাতে নিয়ে যাব,
যে ডাল পরের দিনই
ফুলে ফুলে ভরে যায়।
আমি আর কত ওয়েট করব
ছাদেরালি?
গরমেন্ট এলো, গরমেন্ট
গেল।
এই গরমেন্টও চৌত্রিশ
বচ্ছর উন্নয়ন চালিয়ে গেলে
তবে তুমি আমায় শুকনো
ডাল দেখাতে নিয়ে যাবে?
ইফ সুনীল কাম্স্,
ক্যান শক্তি বি ফার বিহাইন্ড? চাটুজ্যেদের বাড়ির রোয়াকে তাই হাংরি শক্তি আন্দোলনে
বসে একের পর এক পদ্য লিখতে লাগলেন। অনেকে এসে তাঁকে ডাক দিল। যেতে পারতেন, ইচ্ছে করলেই তিনি যেতে
পারতেন, কিন্তু তিনি শক্তি, তিনি যাবেন কেন? তাই
তিনি বসে বসে লিখলেন বরষাপীড়িত ফুলের কাব্য। লিখলেন চিরপ্রণম্য অগ্নির উপাখ্যান। লিখলেন
মানুষের কান্না, হারিয়ে যাওয়া চাবি, শক্ত পাথর আর চিতাকাঠের প্রহসন। শুকনো ডালে
ফুল ফোটার ব্যাপার তাঁকেও ভাবিয়েছিল, তাই তিনি লিখলেন –
খটখটে ঐ রসকষহীন
ডালে
ফুলের গোছা জন্মেছে
কোনকালে
ও মালি, জানো কেন?
সারা বছর শুকিয়ে যায়
ডাল
তবুও ফুল সারা সীজন
ফোটে
নাকের নীচে ধারালো
শৈবাল
মুশট্যাসিয়ে ওঠে
ও মালি, জানো কেন?
রবীন্দ্রনাথ
ছেলেভুলানো যে সব ছড়া কালেক্ট করে গ্রন্থনা করেছিলেন, যার মধ্যে ছিল যমুনাবতী
সরস্বতী কাল যমুনার বিয়ে, সেইসব ছড়ার লাইন কবিতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিলেন শঙ্খ
ঘোষ। রবীন্দ্রনাথের কবিতা – তোমার শঙ্খ ধূলায় পড়ে কেমন করে সইব – তাঁরও সহ্য হলো না, সেটাও একটা
কারণ হয়তো! তাঁর কবিতা পড়ে নিভন্ত চুল্লিতে আগুন জ্বলে গেল। সবার মুখ বিজ্ঞাপনে ঢেকে
গেল। যারা বকবক করছিল, তারা চুপ করে শব্দহীন হয়ে গেল। স্বর্গে প্রভু নষ্ট হয়ে গেলেন দেখে মিত্র বাবুমশাই
হাসপাতালে আশ্রয় নিলো।
ডাল ও ফুল নিয়ে তাঁর কবিতাটা ছিল এই রকম –
এটা নতুন ধরন
যত শুষ্ককাঠের এই পুষ্পধারণ।
যদি মালী না জানে
তবে জানবেটা কে,
কেন নতুন চুলের ফুল
গজালো টাকে?
এর পরে বাংলা কবিতায়
জোয়ার এলো জয় গোস্বামীর হাত ধরে, চাদ্দিকে জয়জয়কার পড়ে গেল। জয়ের কথা আপনাদের বলে আর মায়ের কাছে মাসীর গল্প ফাঁদি কেন?
বরং পদ্যটা নামিয়ে দিই –
শুকনো কাঠ, শুকনো কাঠ,
তোতে গজায় ফুলও?
শুকনো কাঠ, তোদের
বাড়ির মেঘবালিকা হুলো?
শুকনো কাঠ, যেদিন
প্রথম ভিজলি রে বৃষ্টিতে
ব্রিজের নীচে
দাঁড়িয়েছিলাম আমিও প্রবল শীতে।
আমি তখন নবম শ্রেণি,
আমার পকেট ফুটো
ভাঙা উড়ালপুলের নীচে
জমাচ্ছি কাঠকুটো।
তবে সমস্ত গুড থিংস
কাম টু অ্যান এন্ড। জয়ের বাঁশিও প্রায় থেমেই গেছে। টর্চ এখন শ্রীজাতর হাতে। তিনি
মাঝে মাঝে জ্বালাচ্ছেন, তার আলোয় দেখা যাচ্ছে অন্ধকার পথ। মাঝে মাঝে তিনিও
খুঁজছেন। অন্য সব কিছুর সঙ্গে সেই শুকনো ডালখানাও, যাতে আগামীদিনে আবার কুঁড়ি
ফুটবে, ভরে উঠবে ফুলে ফুলে। সেই প্রত্যাশা থেকেই –
চল রাস্তায় খুঁজি
ড্রাই ডাল
যেটা কালকেই ফুলে
ভরবে।
আহা, মা-মাটি-মানুষ
কেউ জানে
কোন্ কাক কেড়ে খায়
ওর বেল?
চল রাস্তায়...
মারহাব্বা! কেয়াবাৎ! জম্পেশ! কামাল!
উত্তরমুছুন