বন্দুকের স্বপ্ন
ছেলেটার একটা অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল। বয়স তখন ছয়। মিষ্টি খেতে ভালবাসত। বাড়িতে মানা, তাই একদিন মনের দুঃখে
একটা শূন্য খাতায় বাক্সের মধ্যে কয়েকটা পছন্দসই মিষ্টির ছবি এঁকেছিল। আরে! পড়ার
টেবিলে এক বাক্স মিষ্টি! আন্দাজে নানা রকম কারণ ভেবে নিয়েছিল মা, বাবা, দাদা। ছেলেটাও বোঝেনি। শুধু খাতায় ছবির
অবয়বে কোনো রঙ নেই। তার স্পষ্ট মনে আছে সে রঙ করেছিল ছবিতে। এরপর ছোটখাটো পছন্দের জিনিস মাঝে
মধ্যেই এঁকে পেয়ে যেত সে। তুচ্ছ সে সব ঘটনা এড়িয়ে যেত বাড়ির বড়দের চোখ। পেন।
শার্পনার। দেশলাই বাক্স। লাইটার। যেসব জিনিস
হারিয়ে ফেলত অথবা নিষিদ্ধ ছিল। দুর্লভ কোনো জিনিস সে আঁকেনি কোনোদিন।
তারপর একদিন হঠাৎ তাদের বহুদিনের ভাড়া বাড়িতে বহুতল গড়ার প্রস্তাব নিয়ে কয়েকটা
লোক আসে। তর্কাতর্কি হয়। লোকগুলো চলে যায় চোখ রাঙিয়ে। মাঝে মাঝে ফোন আসে। ভয় পায় সকলে।
তাদের ছাড়তে হবে এই বাড়ি। বাবার মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। আবার একদিন আসে লোকগুলো।
পকেট থেকে যে জিনিসটা বার করে তারা, সেটা ছেলেটা টিভিতে দেখেছে। কালো চকচকে। পিস্তল।
ঘুমিয়ে পরে ছেলেটা। শিউরে ওঠে ঘুমের মধ্যে। ছয় বছরের ছেলেটা স্বপ্নে দেখে চকচকে কালো একটা বস্তুকে। মুঠো করে ধরা যায়। ট্রিগার টিপলে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে অন্যজনের। ঘুম থেকে উঠে ছবি আঁকে। স্বপ্নের ছবি। কাঁচা হাতের আঁকা।
লোকগুলো আবার আসে। এবারে বাবার কলার ধরে, হাত মুচড়ে ধরে। পনেরো বছরের দাদা ঘরের ভিতর থেকে দৌড়ে আসে। বাইরের ঘরে একটা সাদা খাতার পাতা পতপত করে উড়ছে। পাশে ওটা কী রাখা! মুঠোয় চেপে ধরে পনেরো বছরের দাদা। দৌড়ে যায়। লোকগুলো চমকে ওঠে। ওটা কী ওর হাতে? একটা চাপা বিস্ফোরণের শব্দ হয়। একটা লোক শুয়ে পড়ে। হতভম্ব হয়ে ছুট লাগায় অন্যরা। বাবা মা কিংকর্তব্যবিমূঢ়!
ঘুমিয়ে পরে ছেলেটা। শিউরে ওঠে ঘুমের মধ্যে। ছয় বছরের ছেলেটা স্বপ্নে দেখে চকচকে কালো একটা বস্তুকে। মুঠো করে ধরা যায়। ট্রিগার টিপলে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে অন্যজনের। ঘুম থেকে উঠে ছবি আঁকে। স্বপ্নের ছবি। কাঁচা হাতের আঁকা।
লোকগুলো আবার আসে। এবারে বাবার কলার ধরে, হাত মুচড়ে ধরে। পনেরো বছরের দাদা ঘরের ভিতর থেকে দৌড়ে আসে। বাইরের ঘরে একটা সাদা খাতার পাতা পতপত করে উড়ছে। পাশে ওটা কী রাখা! মুঠোয় চেপে ধরে পনেরো বছরের দাদা। দৌড়ে যায়। লোকগুলো চমকে ওঠে। ওটা কী ওর হাতে? একটা চাপা বিস্ফোরণের শব্দ হয়। একটা লোক শুয়ে পড়ে। হতভম্ব হয়ে ছুট লাগায় অন্যরা। বাবা মা কিংকর্তব্যবিমূঢ়!
পুলিশ আসে। ধরে নিয়ে যায় দাদা ও বাবাকে। ছেলেটা সারাদিন কাঁদতে থাকে। হতবাক
পুলিশ যে পিস্তলটা খুঁজে পায় সেরকম অস্ত্র আগে কেউ কখনো দেখেনি। যে রকম ক্রুড
ওয়েপন ক্রিমিনালরা ইউজ করে অনেকটা সেরকম। নকশাল পিরিয়ডে এরকম লোকাল মেড কিছু অস্ত্র
তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তবু কোনো পরিচিত মডেলের সাথে মিল খুঁজে পায় না পুলিশের
অভিজ্ঞ চোখ। যেন কোনো শিশু কাঁচা মনের
কল্পনাতে এঁকেছে বাঁকাচোরা ত্রিভঙ্গ অস্ত্রটা। কিম্ভূত! যে কোনো আবিষ্কারই অবশ্য অনুকরণপ্রিয়
কাঁচা মনের কল্পনা।
বাড়িতে ট্রাঙ্ক ঘেঁটে একটা পুরনো চাচা চৌধুরীর কমিক বই বের করে ছেলেটা। ভয়ঙ্কর
ভিলেন রাকা। অমর সে। ছবিতে গল্প বলে কীভাবে রাকা একটা পরমাণু বোমা ফেলতে চায় পৃথিবীর বুকে। পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে
পড়ে ছেলেটা।
গভীর রাত্রে ঘরে ফেরে বাবা। দাদা এখনও আটকে। ছেলেটা জেগে রয়েছে এই মাঝরাতে। বিধ্বস্ত বাবা ভালবেসে মাথায় হাত বুলান। সামনের সাদা খাতায় তখন ধীরে ধীরে একটা পারমাণবিক বোমার ছবি রঙিন হয়ে উঠছে।
গভীর রাত্রে ঘরে ফেরে বাবা। দাদা এখনও আটকে। ছেলেটা জেগে রয়েছে এই মাঝরাতে। বিধ্বস্ত বাবা ভালবেসে মাথায় হাত বুলান। সামনের সাদা খাতায় তখন ধীরে ধীরে একটা পারমাণবিক বোমার ছবি রঙিন হয়ে উঠছে।
Besh bhalo laglo lekha ta.
উত্তরমুছুন