কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৯

অভিষেক ঘোষ




তিথি ও পঞ্জিকা দেখেই বলবেন না হয়  
                                           
আমি তো এখনও জীবিত তাই টাটকা থাকতে পারি নি। আমাকে হিম ঘরে ঢুকিয়ে, আমার উপর দেড় কেজি বাই সারে বাইশ কেজির বরফ চাপাতেই, আমি ফেটে না বেরোতে পেরে, এমনি গলে গেছি জল শুদ্ধু। আমাকে জ্যান্ত রাখার ইচ্ছে, কারোর মধ্যে হয় না, আমাদের জ্যান্ত রাখতে গেলে যে পরিমাণ  জল হাওয়া ও ভালবাসার দরকার আমাদের তা নেই। আমাদের তাই মেরে দিয়ে, না পচিয়ে, স্রেফ টাটকা রাখার কর্মসূচি চলেছিল, আট ফুট বাই বারো ফিটের বরফ চাপিয়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখার জন্য নয়, স্থবির করার জন্য। মাথাই তো  আর বেঁচে নেই, ও ঠাণ্ডা না  গরম না বোধদীপ্ত শীল কীভাবে বুঝব, বলে দিও।


ননীর পুতুল তো

অনেক রং দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া মন তো আমি চাই নি,
চাষিরা যা কিছু কেটে আনে,আমার কাটা মাথা থেকেই
তখন বেরোয়, লতার দিক।  
আমি দিকবিদিক হয়ে ভবেছিলাম, এই জীবনে কিছু একটা
করতে হলে,
সবার আগে করতে হবে যেভাবে আমার মুখ করত
তোমায় দেখে।
তুমি ভাবতে আমি মেখে দাঁড়িয়ে আছি এমন অনেক  
পাউডার, যাদের বকে দিলেই আবার ফর্সা লাগবে সব,
আমাকে আবারো ভাবতে রোজ বসতে হয়,
এই সব লিখলেই,
এখানে শব লিখলে আর কিছু মনে পড়ে না তোমার,
তুমি কিন্তু আমারও ছিলে, সেই রজনী কালে,
যখন আমার শেষ লাইনের জন্য বসে আছে  
একটি হাজার লক্ষ কটি।
আমি তাদের এক মেঘে নিয়ে আসি আগে,
তারপর বৃষ্টিকে খোঁটা দিয়ে,
যখনই বৃষ্টি পড়ে,
প্রাণপণে বড় বড় ছোট পা নিয়ে,
প্রচণ্ড ভাবেই,
জোরে ছুটি। 


                                                          
গভীরতা শুধু আমার, আর কারোর হবেই না,
ভেবো না, যেমন কবিতা নিয়ে জনপ্রিয়তা নিয়ে ভেবেছ
                                                                          
(১)

হয়নি বলে যে লেখাটুকু পড়ে গেছে জানালা থেকে,
হবে না বলে যে লেখাগুলো বেরিয়ে আসেনি ভয়ে,
ছন্দ মিলবে না ভেবে যারা লুকিয়ে আছে কোনো এক
দুঃখের ফেরিঘাট জুড়ে, 
বারবার লিখে পড়তে হলে, সে লেখা ঠিক
যেমন দেখতে হয়,
সে লেখাই আর লিখো না আর লিখো না তুমি।

(২)

আমি ভাবতে পারিনা বলে লিখতেও পারি না একলাইন,
শুধু পড়ে যাই একের পাশে শূন্য দিলে, শূন্যতা কমে কেন!  
কাগজের হেডিংএ কালো পিভিসি টেপ লাগিয়ে,
কলম বোলালে মনেই হয়না, এও প্রজাপতির বাগান যেন।
ফুল এসে বসেছে যার গায়ে, শিকড় এসে ভিজিয়েছে
যে ডানা,
তাকে সোজা পথের সরলরেখায়,
টেনে আনতে পারেনি কেউ।
তুমি দাবানল নও, আমিও মশালে ডুবে যাওয়া অন্ধকার
হতে হতে
কখনও কখনও খেই পেয়েও
খেয়ার তালে তালে গুনতে যাই ঢেউ। 
চোখ বুজে বসে থাকা যায়নি বলেই, কিছুদিন তাকিয়েছিলাম,
চেয়ে থেকে দেখেছি, এত সুন্দর প্রাপ্তি কেবলই পেতে পারে পাখি,
বাজ না পড়লে গাছে, কর্মে যত রকম অমিথ্যা ও গোপন সূত্রের
খবর আছে,
তাকিয়ে ও চোখ বুজে কোনটাই আমি আর
থাকতে পারব না বলেই,
চোখও
ভেজিয়ে রাখি।  

(৪)

আবারও বিরক্তিকর সেই কাজটি করতে হচ্ছে।
যার সীমিত মানেও, অন্তত একচল্লিশটি অক্ষর।
কত ছোট করে দাঁড় করালেও নদীতে
একটি নৌকা ছাড়া যায় এবং সেই নৌকা চেপে
আমাদের ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল,
শুধু আমি উঠলেই, পড়ে যাবো ভাবি,
তাই ওঠা হল না।

(৫)

মানুষে মানুষে আনন্দ ভাগ হয় না। দুঃখ ভাগ করলে,
আধা দুঃখ আমার থাকে, আধা হাসি বা
অজ্ঞানতা ওর।
সে সব নিয়ে আমি আর কোনদিনও কোথাও লিখব না
মনে মনেও জানব না, বিশ্বাস ও করব না,
যে ওটাই তো ঠিক একসাথে
ঠিক একা থাকার জোর। 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন