ঝুরোগল্প |
অন্ধগদ্য... বন্ধগদ্য
বসার ঘর। লোকটা তাও শুয়ে। সোফার ওপর বিষণ্ণ শরীর। ধীরে ধীরে অন্ধকার নামছে
বাইরে। সন্ধ্যার আলো মিলিয়ে গিয়ে বসার ঘর অন্ধকার হয়ে আসছে। ক্রমে আলোর
শেষ
লেশ হারিয়ে যাচ্ছে ঘর থেকে, বাইরে থেকে। লোকটা তাও শুয়ে। সোফা থেকে উঠে
আলোটা
জ্বেলে দিলেই পারে। কিন্তু না, জ্বালছে না। চাইছে না জ্বালতে। নাকি পারছে
না? হয়ত
পারছে না জ্বালতে। এমন অন্ধকারে নড়াচড়া করা দায়।
লোকটা কি ঘুমোচ্ছে? বেঁচে আছে তো? নাকি সোফার ওপর মরে কাঠ? কী ভাবছে অমন
ঠায়? নাকি দেখছে? কী দেখছে একমনে অন্ধকারে? আলোয় মানিয়ে নেওয়া
চোখদুটো
কি অন্ধকারে থিতু হয়েছে? নাকি বুজে গেছে আলো শেষ হতে না হতে?
জানা নেই। জানা যাবে না। মৃত্যু, নিদ্রা আর চিন্তার সম্যক সম্ভাবনা বিস্তার
করা এগদ্য
অন্ধকারে স্থিরস্থাবর। আলো না ফেরা পর্যন্ত নিথর গদ্যের ট্রলি সামনে পিছনে
ট্র্যাক করে
যাবে অনবরত।
লোকটা যদি উঠে গিয়ে আলো জ্বালে কখনো? তবে কি সোফার ওপর নিজের অবসন্ন
শরীর ছাড়া আর কোন প্রাপ্তিযোগ ঘটবে তার? নিজেকে দেখার একটা আলো থাকে। সেই
আলো থেকে লোকটা ক্রমেই দূরে চলে যাচ্ছে।
লোকটা কি ভাবছে? ভাবছে কি আদৌ? এমন করেই হয়ত আলো নেভে ছোটবেলার।
বড়বেলা আসে। জীবন নেমে আসে চিলেকোঠায়। তারপর বার্ধক্যের জানালায় দেখা
দেয়
সোনালী ডানার সে ঈগল। তার সাদা ডানায় সোনার পরত। উত্তরহীনতার
নিরুত্তাপ
এক-দু'কলি আঁধার ছাড়া এই গদ্যের আর কোনও প্রাপ্তি নেই।
Valo laglo
উত্তরমুছুন