এবং বিমল ভাবে
মানুষের জীবনের প্রথম অনুভূতি হলো বিস্ময়।
পৃথিবীর প্রতি, জীবনের প্রতি, নিখাদ বিস্ময়। সেই বিস্ময়
নিয়ে শিশুরা আকাশ পানে চেয়ে থাকে। মেঘ দেখে পাখি দেখে। এমনকি চাইলে হাওয়াও দেখতে
পায়। বিমল মনে করে শিশুদের সুপারহিরোসুলভ কিছু না কিছু শক্তি থাকেই। বড় হতে গেলে
সেইসব শক্তি খুইয়ে আসতে হয়। এসময় বিমলের আকাশের দিকে তাকানোর কথা নয়। বিমল আকাশের
দিকে চেয়ে থাকা মানুষও না। তবু আজ বিমল একবার আকাশের
দিকে তাকিয়েছিল।
শেষ বর্ষার ঘামে ঘেমে আছে শহরতলি। মালক্ষ্মী টি স্টল আজ
সকাল থেকে বিরান। একা বিমল বসে আছে, যেমন
থাকে। রতন দু’খানা ডিম ফট
ফট করে ফাটিয়ে প্রবল ভাবে মশলা সহ ফেটিয়ে নিচ্ছে স্টিলের গ্লাসে - বিমলের
অমলেট। কাঁচা পেঁয়াজ ভাজার গন্ধ টি স্টলের
টেবিলে বেঞ্চে লেগে। বিমল খবরের কাগজ খোঁজে, অথচ পায় না, এবং আকাশের দিকে তাকায়।
বলা উচিৎ আকাশ দেখে ফেলে।
আকাশ এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে একটা দুবলা রামধনু।
বিমল অবাক হয়ে সেই থেকে আকাশে চেয়ে আছে।
এবং বিমল ভাবছে, গড়পরতা মানুষ জীবিতকালে কতবার রামধনু দেখতে
পায়?
এবং বিমল ভাবছে, গড়ে পনেরো বারের বেশি নয় নিশ্চয়ই?
এবং বিমল ভাবছে, মানুষ তবে জীবনের বিশেষ বিশেষ দিনে রামধনু দেখতে
পায়?
এবং বিমল ভাবে, বিমলের জীবনে আজ তেমনই এক দিন।
মেঘের উপর ভেসে আছে দুর্বল এক রামধনু। রতনের চায়ের দোকানে
ডিমভাজার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। তার মাঝখানে বসে আছে বিমল। বিমল ভাবছে, অনেক মানুষ এমনও
আছে নিশ্চয়ই, যারা জীবনে কোনোদিন রামধনু না দেখেই মরে গেছে। বিমল আবার আকাশে
তাকায়, রামধনু দেখতে না পাওয়া মানুষদের হয়ে রামধনু দেখে। রাস্তায় ঘুরছে লালু। বিমল
জানে কুকুরের চোখে রামধনু ধরা পড়বে না। বিমলের মায়া হয়। সারা শহরের প্রতি মায়া হয়,
মায়া হয় এই ভেবে যে আজ কত মানুষ আকাশে চোখ রাখেনি। এবং বিমল ভাবে, বহুদিন এমনও
হয়েছে, বিমল মাথা ঝুঁকিয়ে মাটিতে চোখ রেখে হেঁটে চলে গেছে সারাদিন। আকাশে চোখ
রাখতে সাহস করেনি। সেসব দিনে বিমল নুইয়ে গেছে। ছড়িয়ে থাকা খইয়ের মত মিইয়ে গেছে।
পৃথিবীর সকল মানুষের হয়ে বিমল আকাশে চাওয়ার চোখ কামনা করে আজ।
রতনের উনুন থেকে গরম ধোঁয়া আকাশে উঠতে থাকে। রতনের স্টল
থেকে বিমল গ্যাস বেলুনের মত আকাশের রামধনুর দিকে উড়ে চলে যায়।
তোমার এই অবধি যে লেখা গুলো আমি পড়েছি,তাতে যে মাত্রার নেশার ঘোর চড়েছে-এটা যায়না তার সাথে।এটা খুব সাবলীল,হালকা হাওয়া লাগা লেখা প্রিয় লেখিকার।
উত্তরমুছুনঘোর লাগা গল্পের পারদ আরো চাই যে,এ নেশা না উতরোক আমার ....
ভালোবাসা ও শুভকামনা ❤����❤
তোমার এই অবধি যে লেখা গুলো আমি পড়েছি,তাতে যে মাত্রার নেশার ঘোর চড়েছে-এটা যায়না তার সাথে।এটা খুব সাবলীল,হালকা হাওয়া লাগা লেখা প্রিয় লেখিকার।
উত্তরমুছুনঘোর লাগা গল্পের পারদ আরো চাই যে,এ নেশা না উতরোক আমার ....
ভালোবাসা ও শুভকামনা ❤����❤
আচ্ছা সুহৃদ, খেয়াল রাখবো ��
মুছুন- অলোকপর্ণা