প্রতিবেশী সাহিত্য
কাহলিল জিবরান -এর কবিতা
(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)
কবি পরিচিতি : কাহলিল জিবরান ১৮৮৩ সালের ৬ জানুয়ারি নর্দান লেবাননের (তুর্কী) পাহাড়ি অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। মায়ের তৃতীয় স্বামীর সন্তান তিনি। কাহলিল জিবরান বোস্টনের স্কুলে পড়াশোনা করেন কিছুদিন। সেখানেই তাঁর ক্রিয়েটিভিটি টিচারদের নজরে আসে। তিনি কবি হওয়ার সাথে সাথে একজন শিল্পী ছিলেন। প্যারিসের আর্ট স্কুলে শিক্ষাও নিয়েছেন। ২৯০৪ সালে তাঁর পেইন্টিং বোস্টোনের ড্যায়'সন স্টুডিওতে ডিসপ্লে করা হয়। প্যারিসে থাকাকালীন তিনি ইয়াং তুর্কী রেভ্যুলেশনের সাথে জড়িয়ে পড়েন। কাহলিলের কিছু লেখা অট্টোমান সাম্রাজ্যে ‘ব্যান’ হয়। ১৯১১ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে আসেন। এখানেই তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দ ম্যাড ম্যান’ প্রকাশিত হয়। এরপর ‘দ প্রফেট’ এবং অন্যান্য কবিতা। প্রথমে আরবিক ভাষায় লিখলেও পরে তিনি ইংরেজিতে লেখেন এবং বিশিষ্ট কবি ও শিল্পী হিসেবে প্রসিদ্ধি পান। ১৯৩১ সালে তিনি মারা যান।
লাভ ওয়ান এনাদার
(নিজস্ব একাকীত্ব)
একে অপরকে
ভালোবেসো
কিন্তু
কোনো বন্ধনে জড়িও না বন্ধু!
বরং একে
চলন্তিকা সমুদ্র-ঢেউয়ের মতো
হৃদয়ের
দুকূল ছুঁয়ে
আসা যাওয়া
করতে দিও।
একে অপরের
পেয়ালা ভরে দিও
পান কোরো
না এক পাত্র থেকে।
সাজিয়ে
দিও তাকে যত্নে খাবার
ভোজন
কোরো না এক থালা থেকে।
নাচো,
গান গাও একসাথে...
আনন্দ
ঝুলিতে ভরে নিও একসাথে
কিন্তু নিজস্ব একাকীত্ব দুজনের
মাঝেই
রাখুক ছোট্ট আসন পেতে!
যেমন
থাকে এস্রাজের তারগুলো...
যদিও
তারা সুর তোলে একসাথে!
হৃদয়
দিও একে অপরকে
কিন্তু
কেউ কারোর
সম্পত্তি
হয়ে যেও না বন্ধু!
কারণ
একমাত্র জীবনের গতিতে
তোমার
হৃদয় পরিপূর্ণ হবে!
পাশে
দাঁড়াও... একটু ফাসলা থাক-না
মন্দিরে
স্তম্ভগুলো যেমন দাঁড়ায় একলা!
ওক ও
সাইপ্রাস গাছও যে একে অপরের
ছায়ার
নীচে বেড়ে ওঠে না!
ফিয়ার (সমর্পণ)
কথিত
আছে...
সমুদ্র
প্রবেশের প্রাক্কালে নদী
ভয়ে থরথর
কেঁপে ওঠে!
সে পেছন
ফিরে তাকায়
তার যাত্রাপথের
দিকে।
পর্বতশীর্ষ
থেকে শুরু হয়ে
যা পেরিয়ে
এসেছে অনন্ত পথ...
বনরাজি
অথবা নগর গ্রাম্য জনপদ!
এখন সম্মুখে
অসীম পারাবার
যেখানে
সে হারিয়ে যাবে অনন্তে!
কিন্তু
এছাড়া উপায় তো নেই
নদী ফিরে
যেতে পারে না
কেউ পেছনে
ফিরে যেতে পারে না
মহাকালের
অমোঘ গতিতে!
নদী সাগরে
বিলীন হ'লেই
সে ভয়
দূর হবে কারণ তখনই বুঝবে
এ যে
হারিয়ে যাওয়া নয়... এ যে
নদীর
সাগরে নিলয় নয়
এ যে
সাগর হয়ে যাওয়া!
লাভ ইজ এ ম্যাজিক
রে (জ্যোছনা-স্নান)
ভালোবাসা
এক জাদুকরী
আলোর
ঠিকানা!
হৃদয়ের
জলন্ত ক্ষিদের তাড়নায়
উৎসারিত
হয়ে... যা কি-না
পৃথিবী
এবং পরিবেশকে
এক আশ্চর্য
আলোয় ভরিয়ে দেয়!
ভালোবাসা
জীবনকে
পূর্ণ
করতে শেখায় আনন্দঘন স্বপ্ন দিয়ে।
একের
অনুভব অন্যকে সংক্রমিত করে
সেই
‘হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব’!
সে জাদুকরী
আলোর রশ্মিতে
জ্যোছনা
স্নান করে জীবন!
অসাধারণ অনুবাদ, খুব মসৃৃণ ভাবে ভাবনার প্রকাশ করেছেন।
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগলো পড়ে। অভিনন্দন বাণী। ❤️
উত্তরমুছুনখুব সাবলীল ও প্রাঞ্জল অনুবাদ হয়েছে।পড়তে গিয়ে কখনো মনে হয়নি অনুবাদ পড়ছি।মৌলিক লেখার মতোই সুখপাঠ্য।
উত্তরমুছুন