কবিতার কালিমাটি ১০১ |
কৃষ্ণ-নগর
দু'চারটি মানুষ বসে আছেন
গান করছেন খোল বাজিয়ে
পেলব জীবন নয় তাদের
কয়েকটি মানুষ বসে গায়
গান করছেন খোল বাজিয়ে
পেলব জীবন নয় তাদের
কয়েকটি মানুষ বসে গায়
খুচরো ছেলেমেয়ে, সাইকেল চালাতে গিয়ে, ফিক্ করে হাসে
বাতাস এসে বসে, কানের ঝুমকায়-
বাতাস এসে বসে, কানের ঝুমকায়-
'ও ঝুমকোলতা গো...' গান চলে...
আমি আর আমার পূর্ণিমা হাঁটি
পাশাপাশি দাদুর-দোকান
ভিজে পান, চৈনি-খৈনি, ফুলুটের অধীর-করা সুর
আমি শুনি, চন্দ্রমা শোনে
পাশাপাশি দাদুর-দোকান
ভিজে পান, চৈনি-খৈনি, ফুলুটের অধীর-করা সুর
আমি শুনি, চন্দ্রমা শোনে
বাঁ-দিকে দুঃখ রেখে, ডান-দিকে, চোখের জলের কাছে যাই
মহীয়সী নয়, আজকের এই বৈকাল
সামান্য
কুঞ্চিত
কিঞ্চিৎ অপরাধমুখী
মহীয়সী নয়, আজকের এই বৈকাল
সামান্য
কুঞ্চিত
কিঞ্চিৎ অপরাধমুখী
হ্যালোজেন ছুট্টে এসে, ছুঁয়ে দিলে, শরীর কুড়োই
কে যেন চলিয়া গেছে আজকে, সন্ধের-পাট ভেঙে!
কে যেন চলিয়া গেছে আজকে, সন্ধের-পাট ভেঙে!
বাচ্চারা খিলখিল
কুড়োয় খইয়ের দানা, রাত
কীর্তন, কৃষ্ণ আর গাইয়ের পায়ে রেখে দেয়
কুড়োয় খইয়ের দানা, রাত
কীর্তন, কৃষ্ণ আর গাইয়ের পায়ে রেখে দেয়
ফুটে উঠলে ভাত-
এই মফস্বলও 'কৃষ্ণ-নগর'...
মাঠ
মাঠ
যখন সমস্ত খেলা থেমে যায়
যখন সমস্ত ধুলো, মুড়ে আসে পাঁপড়ির মত
সে এক বালক
দীপিত দু'চোখ মেলে শুয়ে থাকে
যখন সমস্ত ধুলো, মুড়ে আসে পাঁপড়ির মত
সে এক বালক
দীপিত দু'চোখ মেলে শুয়ে থাকে
পক্ষীর চোখ তার
লাল-পলা অন্ধকার
গলে গলে পড়ে যেন, চৈতন্যের উপরে
লাল-পলা অন্ধকার
গলে গলে পড়ে যেন, চৈতন্যের উপরে
শুয়ে থাকে, শুয়ে থাকে বালক
চেয়ে থাকে, দ্যাখে- একা আগুনের-শ্লোক
পড়ে যায় রাতের মাঠটি
চেয়ে থাকে, দ্যাখে- একা আগুনের-শ্লোক
পড়ে যায় রাতের মাঠটি
পরী-মাঠ
পরী-জ্বলা আতরের মাঠ
গন্ধে গন্ধে লীন, আকণ্ঠ ধনুকের মত
শুধু ছিলা
শুধু জ্যা রোপণ করেছে
একা একা পক্ষীর-পালক
পরী-জ্বলা আতরের মাঠ
গন্ধে গন্ধে লীন, আকণ্ঠ ধনুকের মত
শুধু ছিলা
শুধু জ্যা রোপণ করেছে
একা একা পক্ষীর-পালক
নিদাঘে, সুতীব্র শীতে, ধুলো-যামিনীর আহ্বানে
বালক তাকিয়ে দ্যাখে- বুড়োলোক, সে এক প্রপিতা
আকন্দের অক্ষরে লিখে গেছে নদীদের গীতা
আঁধারে, তীব্র জ্বরে, অধিকন্তু রজস্বলা রাতে!
বালক তাকিয়ে দ্যাখে- বুড়োলোক, সে এক প্রপিতা
আকন্দের অক্ষরে লিখে গেছে নদীদের গীতা
আঁধারে, তীব্র জ্বরে, অধিকন্তু রজস্বলা রাতে!
তবু
সে শুয়েই থাকে
আকাশ দেখেছে অপরাধে-
সে শুয়েই থাকে
আকাশ দেখেছে অপরাধে-
একা ক্রোধ, কামাতুর হয়ে ওঠে আঘাতের মাঠে...
দুঃখ
দুঃখ
তুমি যদি রাধা হও, আমি তবে জাতকের গাছ
দ্রিমি দ্রিমি দ্রিমি দ্রিমি ভেসে যায় জ্যোৎস্না-চরাচর
রাজগৃহের তীরে এসে বসে দোয়েলের মত
নৌকার সংলাপ, মানুষের রোগা রোগা স্বর
দ্রিমি দ্রিমি দ্রিমি দ্রিমি ভেসে যায় জ্যোৎস্না-চরাচর
রাজগৃহের তীরে এসে বসে দোয়েলের মত
নৌকার সংলাপ, মানুষের রোগা রোগা স্বর
বেদনায় ভরা রাধা, পায়েসের দুধ হল ব্যথা
মুষ্ঠি মুষ্ঠি চালে সন্ন্যাসী যন্ত্রণা মাখা
শামুকের শীত থেকে, নিভৃত জীবন শুরু হয়
জীবন অনিত্য তবু, জীবন তো আর কিছু নয়
মুষ্ঠি মুষ্ঠি চালে সন্ন্যাসী যন্ত্রণা মাখা
শামুকের শীত থেকে, নিভৃত জীবন শুরু হয়
জীবন অনিত্য তবু, জীবন তো আর কিছু নয়
সরিষা মৃত্যু তার, পালে ওঠে শিবালিক বাতাস
যবন জানেন শুধু, এ মৃত্যু নয় কোন ত্রাস
জীবনে মরণে তুমি জেগে আছ বোধিসত্ত্ব
তোমার চলার পথে নিকুঞ্জ হারায় দেবতা
যবন জানেন শুধু, এ মৃত্যু নয় কোন ত্রাস
জীবনে মরণে তুমি জেগে আছ বোধিসত্ত্ব
তোমার চলার পথে নিকুঞ্জ হারায় দেবতা
অশথের তলে রাখি শরীরের সব গুরুভার
কৃষ্ণ অতলে দোলে, আগমনী ধুনো দেয় ভোরে
যদি তুমি গৌতম, আমি তবে দুঃখ ঢালি দোরে...
তোমার কাবিত সব সময়ই অনবদ্য ।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ আপনাকে
মুছুনএই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুনঝিলম ত্রিবেদীর কবিতা মানে অন্যরকম ঘোর। বোধের অতলে হারিয়ে যাওয়া। পড়া শেষ হয়, তবু যেন রেশ শেষ হয় না তার।
উত্তরমুছুনআপনার মতামত ঋদ্ধ করল..
মুছুন'মাঠ'এর পরী-মাঠ এক নতুন সংযোজন। নতুন ভালোলাগা।
উত্তরমুছুনকৃষ্ণ-নগর অনবদ। অঞ্চলটা আমার শৈশব মনে করিয়ে দেয়।
আমিও তো মনকেমন করা এক মফস্বলের মেয়ে..
মুছুনযথারীতি অনবদ্য। খুব ভালোলাগলো।
উত্তরমুছুনশুভেচ্ছা নিরন্তর
আপনার মতামত মূল্যবান আমার কাছে..
মুছুনআপনার সব কবিতার মতোই অসাধারণ হয়েছে।
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ..
মুছুনচমৎকার অনুভবের কথা ।তিনটি কবিতাই অতি সুন্দর, তবে প্রথম ও শেষেরটি আমার অনবদ্য লেগেছে! খুব লেখ।
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগল জেনে...
মুছুনতিনটি কবিতাই অনবদ্য। সত্য ও সুন্দরের খোঁজ দেয়। সেই সাথে বিষয়দর্শনেও রয়েছে নিখুঁত ইমেজ। যেখানে প্রতিটি পঙক্তি ভেতর ছুঁয়ে বলে যায় বহুকথা। যে কথা পড়তে পড়তে উঠে আসে খোল সহযোগে কীর্তনের সঙ্গে গ্রামীণ অতীতগাঁথা। উঠে আসে জীবনের সংগ্রামী সুরে লেগে থাকা এক আলোকিত বিশ্বায়নের আঁচ। যেখানে কবির অবাধ গমন। পাঠককেও নিয়ে যান তার সেই অবারিত পথে। কলমের গুণে। এইভাবেই কবি পাঠকের কাছে থাক। পাশে থাক। হৃদয়জুড়ে থাক আপনজনের মতো।
উত্তরমুছুনতিনটি কবিতাই অনবদ্য। সত্য ও সুন্দরের খোঁজ দেয়। সেই সাথে বিষয়দর্শনেও রয়েছে নিখুঁত ইমেজ। যেখানে প্রতিটি পঙক্তি ভেতর ছুঁয়ে বলে যায় বহুকথা। যে কথা পড়তে পড়তে উঠে আসে খোল সহযোগে কীর্তনের সঙ্গে গ্রামীণ অতীতগাঁথা। উঠে আসে জীবনের সংগ্রামী সুরে লেগে থাকা এক আলোকিত বিশ্বায়নের আঁচ। যেখানে কবির অবাধ গমন। পাঠককেও নিয়ে যান তার সেই অবারিত পথে। কলমের গুণে। এইভাবেই কবি পাঠকের কাছে থাক। পাশে থাক। হৃদয়জুড়ে থাক আপনজনের মতো।
উত্তরমুছুনতিনটি কবিতাই অনবদ্য। সত্য ও সুন্দরের খোঁজ দেয়। সেই সাথে বিষয়দর্শনেও রয়েছে নিখুঁত ইমেজ। যেখানে প্রতিটি পঙক্তি ভেতর ছুঁয়ে বলে যায় বহুকথা। যে কথা পড়তে পড়তে উঠে আসে খোল সহযোগে কীর্তনের সঙ্গে গ্রামীণ অতীতগাঁথা। উঠে আসে জীবনের সংগ্রামী সুরে লেগে থাকা এক আলোকিত বিশ্বায়নের আঁচ। যেখানে কবির অবাধ গমন। পাঠককেও নিয়ে যান তার সেই অবারিত পথে। কলমের গুণে। এইভাবেই কবি পাঠকের কাছে থাক। পাশে থাক। হৃদয়জুড়ে থাক আপনজনের মতো।
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ আপনাকে..
মুছুনআমি লিখব কী! কবিতাগুলো শুধু পড়েই চলেছি আর ঘোরের মধ্যে বসে আছি। বোধের স্নিগধ জ্যোৎস্নায় ভেসে আছে প্রতিটা কবিতার অক্ষর....
উত্তরমুছুনমৌলী... তুই বললে যে আলো পায় কবিতারা, তা অন্যরকম আলো!
মুছুন