মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

মেহনাজ মুস্তারিন

 

কবিতার কালিমাটি ১৫০


সূর্য ডুবে যাবার পরে

 

একবার ভাদ্রমাসে ভেঙে গেল সংসার

একবার ভাদ্রমাসে উত্তপ্ত একটা গাছ

অনেকক্ষণ স্থির দাঁড়িয়ে ছিলো

সেই গাছ, তার পাতা---নুইয়ে পড়া ডাল, ধূলো

ছুঁয়ে ছিলো মাটি

সেই সাথে ঝড়ো হাওয়া চুঁয়ে চুঁয়ে পড়েছিল

জল!

অথবা মেঘগুলো তুমুল ঝাপটায় হারিয়ে ফেলেছিলো ঠিকানা

একবার ভাদ্রমাসে সেই গাছ

চিৎকার করে বলেছিল,

মানুষ তুমি মানুষের কাছে যাও

এর পরে ঝড় থেমে গেলে

এগিয়ে যাও গাছের নিচে দেখো,

ডালপালা ভেঙেছে কি না অথবা পাতার আড়ালে কোন কষ্ট...!

সাদামাটা আকর্ষণহীন গাছটার কোমল বুকে

তাজা ঘ্রাণ পাও কি না!

পাহাড়ের পাড় ভাঙ্গা উজান বেলায়

মাটি আর প্রকৃতির খুব কাছে যাও

কারণ কোন এক ভাদ্রমাসে বার বার তুমি

তার কাছে হেঁটে যেতে চাও...!

 

নিবিড় দ্রোহে

 

তোর মৃত্তিকা আমার জল

চটকে কাদা,

কতো মাখিয়েছি মাটির দলা।

বানিয়েছি ছোট্ট কলস, হাড়ি, গেলাস

আরো কত কিছু;

কড়াই, খুন্তি তাও!

কে জানতো একদিন এদের সাথেই

হবে নিত্য বসবাস আমার!

তারপর

নতুন ঘর নতুন জগত দখল নেয়

এ্যালুমিনিয়াম, ননস্টিক আর স্টেনলেসস্টিল–---

কখন যেন কেটে যায়,

মৃত্তিকা আর জলের ঘন নিবিড় মন্থন!

হয় না দেখা আর তোর সাথে। কতদিন গা মাখামাখি করি না দু'জন,

ঝাঁপিয়ে পড়ি না জলে, কোছায় নেই না জল "কতদিন… কতদিন "

তবুও জীবন এই সম্বল বারবার খুঁজে ফেরে!

 

সমুদ্র ভ্রমণে নির্জনতা

 

কয়েক পেগ লবণজল গিঁট খুলতেই

তোমার কাছে কখনো আবার তার কাছে

পৌঁছে দেয়... সামলে নিই জোয়ার আর ভাটার

দুজনকে!

একই টেউ একই নেশা তলিয়ে যেতে যেতে

জেগে উঠি...

ঝাপটানো ডানায় - আগুনে - স্তব্ধ ছায়ায়

অস্তাচলে সূর্যাস্তের দ্বীপে!

তরঙ্গের দোলা আর তোমার ঠোঁট

আলাদা কি! উত্তপ্ত বালির উপর শিকল পরানো নৌকাগুলো আমাকে জানে…

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন