কবিতার কালিমাটি ১৪০ |
ছদ্মবেশী
দু-একটি ছদ্মবেশী মেঘ
কখনো কখনো ভেসে আসে মাথার ওপর
তারা বৃষ্টি আনে না, শুধুই বজ্র আনে;
এ মাঠে আমি একা, খুঁজতে থাকি কাকে?
দেখা হয় না কারও সাথেই, সূর্য ঢাকে মেঘে।
আঁধারের
আবছা রাক্ষস নামে পথে
আদিম অস্ত্রের
মতো আতঙ্ক নাচে;
পিছিয়ে
আসি, আবার এগিয়ে যাই
যেতে যেতে
থামি;
আমার সহিষ্ণু ইচ্ছাগুলি নষ্ট হয়।
সুড়ঙ্গের
কোনও ব্যাকরণ নেই,
অন্ধকারের
কোনও ভাষাও থাকে না
নীরবতা
এসে আমাকে বোঝায়—
তবু কি
বুঝি না আমি?
বিশ্বাস
হারিয়ে গেলে শুধু তাকে খুঁজে ফিরি।
এই অন্ধকারের
মুখ মানুষের মতো
এই অন্ধকারের
হাত মানুষের হাত
বিজ্ঞাপনেও
বেশ উজ্জ্বল চকচকে;
আমার আকাশে
তাদের কণ্ঠস্বর
নম্র মেদুর
মেঘ হয়ে ছবি আঁকে...
ছবিগুলি
সব শিকারি পাখির মতো
আমাকেই তাড়া করে!
অবেলার চিঠি
কতদিন পর তোমার দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম
আমার বাইশ বছরের রোদ পড়ে আছে এখানে
অপেক্ষারা আর কেউ বেঁচে নেই
প্রথম চুম্বনের স্বাদ ঝরে পড়ে গেছে
একটার
পর একটা পাহাড় ডিঙিয়ে বহুদূর চলে গেছি আমি
এখন ক্লান্তির
সঙ্গে দেখা হয় রোজ
এখন থরোথরো
কেঁপে ওঠে আমার ভুবন
তোমার
ঘর দুয়ার সেজে উঠেছে
অনেক গোলাপ
চারা চেয়ে আছে চতুর্দিকে
বাতাস
এসে বাঁশি বাজিয়ে চলে যাচ্ছে কম্পন তুলে
আমি শুধু
একটি অবেলার চিঠি হয়ে পাক খাচ্ছি
আজও আমার
ঠিকানা খুঁজে পায়নি কেউ
আমিও হারিয়ে
ফেলেছি আমার নিজের পরিচয়
ভাঙা মাথায় সেসব বুঝি না
আকাশ ভেঙে পড়ছে মাথায়
আমাদের তাই ভাঙা আকাশ
মাথাও ভাঙা
অনিশ্চিত জীবন
কাটাই
গ্রীষ্মের
চাপ
শীতেরও
চাপ
সরাসরি বজ্রপাত বিনা মেঘে
জ্যোৎস্না
আর নামে না পাড়ায়
ধর্ষকেরা কেবল তাড়ায়
জাত-ধর্মের তাঁত চালিয়ে
পাড়ার তাঁতিরা তাঁত
বোনে
আমরা সেসব কাপড় কিনে
ইজ্জত ঢাকি
আহা! ইজ্জতেরা স্বপ্নে আসে—
ধর্মের গানে চ্যানেল চালায়
কাক-কোকিলেরা চ্যানেলে বসে
চ্যানেলে চ্যানেলে মন্ত্র ছড়ায়
দৈত্য-দানব ঘুব়তে থাকে
কে মানুষ, কে মানুষ নয়?
ভাঙা মাথায় সেসব বুঝি না
রক্ত-ঘ্রাণে বাতাস ভারী হয়—
কারও কারও হাত রক্তে রাঙা
কারও কারও মুখে রক্ত লেগে যায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন