কবিতার কালিমাটি ১৩৬ |
মায়াবী তুমি
এরপর কেটে যাবে বহুকাল,
দেখা হবে না আমাদের আর কোনো
কবিতা সন্ধ্যায়।
হয়তো কোনো এক অলস বিকেলে,
হলুদ জামার ভাঁজের আড়ালে,
গোধূলির লাল, উড়ে যাওয়া মেঘ
বৃষ্টির সাত রং মেখে,
আবারো মনে পড়বে
সেই সন্ধ্যা।
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে পার করা
নির্জনতা
অধরে অধর একাকার হওয়ার ক্ষণ-
একটু আধটু কবিতা
ল্যাম্পপোস্ট বা রঙ্গিন আলো
ফেনিল উচ্ছাসে
ফুলে ওঠা আবেগের ঢেউ,
পা ভেজাতে ইচ্ছে করে আমাদের।
দিগন্ত জুড়ে থাকে বিশাল এক শূন্যতা
প্রশ্ন করে গোধূলির রক্তিম ভালোবাসা
তুমি কি আমার আকাশ হবে?
সেই তুমি
আমি তো তাকেই ভালোবেসেছি
যার জন্য প্রিয় রঙ্গনের অপেক্ষা।
তুমি তো সেই
যার জন্য আমার জন্মান্তরের প্রতীক্ষা।
শব্দের জাদুকরী ফিকে তার কাছে
অনুভূতিরা তাই শুধু মূক হয়ে থাকে।
হ্যাঁ আমি তো তাকেই ভালোবেসেছি
যার কবিতায় মুগ্ধ হয়েছি বারবার
অভিমানের বাষ্প অন্তমিলে উড়িয়েছি
এক সমুদ্র অনুভূতির স্রোতে
ভালোবাসার ছবি এঁকেছি
অব্যক্ত কিছু কথা
আর ধূসর রঙের চেতনা
তুমি তো সেই
আমার জীবনের চিরন্তন আলো
এই সমর্পণের কথা কী তুমি জানো?
হাজারো রাগ রাগিনী পেরিয়ে
প্রেমের অঞ্জলি যার জন্য
যদি স্বীকার করো এ হৃদয় দান
তখন
অসংখ্য শব্দতত্ত্ব, মায়াবী দুপুর
নিশ্চল বাতাস, পলাশের সুবাস
মোহিত করে আমায়
ঠিক তখনই এক চিলতে রোদ্দুর
আমায় খুঁজে বেড়ায়।
সত্যি হয় রূপকথা
আর তারাদের সীমাহীন ব্যাকুলতা।
মেঘের আড়ালে
ঝরনার জলে ভাসতে ভাসতে,
বৃষ্টিভেজা গাড়ির কাঁচে,
এলিফ্যান্ট ফল্সের ধারে
কখনো শিলং-এর নাম না জানা
গাছের সারিতে
অনন্ত আকাশ আর আচ্ছন্ন পাহাড় পেরিয়ে,
কতবার ডেকেছি তোমায়-
ঘন কুয়াশা সরিয়ে
না, তুমি কোথাও নেই।
দূরের এক পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে,
হঠাৎ বৃষ্টি এলো।
ছাতা উড়ে গেছে, বর্ষাতি নেই,
ভিজে সপসপে এক খামে,
অচেনা পাহাড় কবিতা লিখলো
তোমার আমার নামে।
খুব চেনা গাছের সারি
গভীর খাদ
বয়ে চলা ঝরনার জল
বললো ওরা
সে রয়েছে দিগন্তের এক কোণে,
মন জানে, দেখা হয় মনে।
সে আসলে অভিমানে উপচে পড়া,
সন্ধ্যাতারার ক্ষত।
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়া
জ্বরের রাতের মতো।
ফেরার পথে
পাহাড়ি হওয়া বলল কানে কানে,
যত দূরে যাও আরো কাছে চলে আসো
সে শীতের মহাদেশ কোনো
তুমি বরফের মতো ভাসো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন