কবিতার কালিমাটি ১৩৬ |
সিদ্ধপুরুষের থানে পায়ের ভেতর পা আকাশ উড়ছে
ও কে। মালসা সাজাচ্ছে। কীর্তন হবে। সব এলোমেলো
করে দিলে কি হয়। আর কিছু হবে না কেবল গণপিটুনি। তারপর বোল হরিবোল, খই ছড়ানো রাস্তায়
কান্নাকাটি করে কাকেরা ছুটে আসছে। আমার কি কিছু পিছুটান ছিল।
এটা কিরকম হলো। আমি তো মড়া। আমার আমাকে নিয়ে ওপারে ঢুকে পড়া আমির পিছুটান, ক্যাচর ম্যাচড় থাকে কি করে। থাকাটা জবরদস্তরকম মায়াপাখনার নেশাঘোর।
ধ্যুরধ্যুর আরে এসব হল্লাপুল্লা বিত্তান্ত মনের মুঠোয় ধরছিটা কি করে। আমি তো আর সত্যিকরে কোনো ভোগারতির কোনো কিছুই এলোমেলো করিনি। গণপিটুনি হয়নি কাজেই মরিনি। ওই মালসা সাজাচ্ছে। তাকে যদি লুঠ করে বা কেড়ে পালাই। ওর গায়ে চন্দন কি ধুলোমাটি কাঁচাদুধের গন্ধ তো রয়েই গেল। ওকে তেঁতুলপাতায় পেলেই... ওহো তেঁতুলপাতা মানেই তো ঘষাঘষি লাগালাগি নজন সুজন। ঠিক আছে ঠিক আছে। না হয় মাঝ স্বর্গের সোনারূপা বৃষ্টিতে নিরুদ্দেশ সাঁতার কাহিনি। আকাশ উড়ছে। সোমরস বুঁদ কুণ্ডলি পাতালে সারিসারি উথাল পাতাল গড়াগড়ি। আমায় ধরো ধরো, ধোরো না, ধোরো না। আহা আহা পৃথিবী উপুড় জড়াজড়ি। সব ভুলে গেছি। এটাই সত্য এখনও এখানে ফুটো আছে। ফুটো দিয়ে আলো। আসছে। পঙ্ক্তি ভোজন। অহো এযে, কীই আনন্দ রমণ। নাম ভুলে গেছি, খাঁচা ভুলে গেছি, ভাঙা বোতাম, ভাঙা মন সব ভুলে গেছি। এখন শুধু তেঁতুলপাতায় হুড়োহুড়ি সুজন নেশা কারুকাজ পিচকারির ফিনকিতে পোড়ারুটির গন্ধ ছোটে ফাটা পিদিমের কবেকার মরচে ধরা আলো জোছনার আলতার ছাপ গান। লক্ষযোজন বিশ্বাসের নিঃশ্বাস উচ্চারণ হাতের মুঠোয় ঘামের ভেতর হাতড়ায়। চিতাকাঠে পুড়তে পুড়তে মাতাল হয়। এবার বোধহয় ওকে পাব। আদুর আতুর আয়নায়, শবহীন শব্দহীন নিজেকে পাব।
আয় চন্দ্রকলা। পা ঠোঁট আগুন নিজেকে চাটছি তো চাটছি, টুপটাপ টুপটাপ, টুপটাপ।
নিশ্চিহ্নের উজানিতে যদি একবার
অমিতাকে বিক্রি করে আমি আমার অমিতাকে পেয়ে গেলাম।
সাজানো সংসার। বিপণন ও
গুড়ে সেঁটে থাকা মরামাছি চেনালো। সময় ধরতে চাই।
শরীর ধরতে চাই। চাই ঈশ্বর
পাগলার গুহা। ওখানেই কোথাও ছাত নেই হয়ে যাওয়া বসত
বাড়িটার চোখের জল
তেলঝুলকালি ঝাঁকড়া গাছ হয়ে রয়ে গেছে। ওখানে একটা
কুকুর। বইয়ের ধারও মাড়ায়নি।
লাফাতো। গল্প করতো। ঠাকুমার সাথে বাড়ির ছাদে কার্নিসে
উড়ে উড়ে সে এক সময়ের
ভ্রমণ। এখন তো রাতদিন অমিতা গহীনে টেনে ধরে। ঠোঁটে
ঠোঁটে শুয়ে পড়ে গান হয়ে
ফোটে। অথচ ঐখানে ঐ আয়ুশ্বাস বুদবুদে ঐ রক্তমাংসহাড়ে
কোনো রাত-উতরোল তাপ
জেগে ওঠা অমিতা নেই কোনো ঝিনুকের সিঁড়ি বেয়ে উঠে
আসা অমিতা নেই। অমিতাকে
তো ঘাসডানাচুরি করাদের কাছে বেচে দিয়েছি। তাহলে
ও আমি তো আর ...। এক ফোঁটা
ছায়াপথ। উঠে আসছে অকাজউছাড় সমুদ্দুর। একবার তোর
বোতাম আটকাচ্ছি, একবার
খুলছি। পুরনো চাঁদ জাগছে। একফোঁটা ক্ষত মুক্ত হচ্ছে।
পাগল বিছানা ভিজে যাচ্ছে। মনে
পড়ে যাচ্ছে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে কবে যেন বন্ধ কারখানায়
খুন হয়ে পোঁতা হয়ে আছি।
কম্পাস নেই। পাশাপাশি হয়ে গেলে কতখানি নিবিড়বাজা
বাঁশিতে আকারণ
মাটিপোড়াগন্ধে দেয়াল বেয়ে উন্মাদ পাশবিকতায় নিজেকে
আছড়ে ফেলা যায় নিরালোক
আদরে। না থাকা অমিতায় লগি ঠেলতে ঠেলতে, ভ্রমণ...
ভালোবাসা নয় ধ্যুৎছাই তাহলে কী? আত্মবাসা
আরে মানুষ তো। জল হল গিয়ে জল। নগ্ন। খোলামেলা। মেজাজের তোয়াক্কা করে না। একটা
স্ফটিক-সরল বিশ্বাসই যে জ্বালানি ছাড়াই জোছ্না নামিয়ে দিতে পারে। ঐ জল ঐ স্ফটিক ঐ ভ্রমণ
গুনগুন জোছ্না মাটির গন্ধে বেঁচে থাকা মদফুলটাই হল গিয়ে তুমি। ও তুমি। তাই আমি, আমার
অপেক্ষা অকারণ সময় খাদ থেকে উঠে আসা পাগল খিদে খিদে ছায়া এই সবকিছু ভরশূন্য বিশুদ্ধ
অশুদ্ধ অর্থহীনতা যাকিছু গোপন শীতশিহরণ প্রহেলিকা ঝটকা গুলে মানে সব মিলেই হলাম আমি
এবং আমি। মান্দাস ভেলা ভাসে। আমি আমার সঙ্গ ছাড়িনা। ( সব কবিতায় দেখছি মান্দাসও আমার
সঙ্গ ছাড়েনা)। কী অদ্ভূত মৃতদের ছাড়া মৃত্যু হয়ে থেকে যাওয়া। যবে থেকে তুমি এবং তোমার
সুগন্ধি সজীবরেণু ঘাতক জাদুকরের সাথে শূন্য তাপাঙ্কের ইষ্টিশনে বন্ধ সময়-ঘড়ির শরীর
নেশায় হেঁটে গেছে। (এখনও যবে শব্দ ব্যবহার হচ্ছে একটা ক্লিসে)। নিজের পানে (আবার একটা
ক্লিসে শব্দ) নিজের দৃষ্টি মেলি। খসে পড়ে থাকা সময়মনাগুলো চুরিকরি। মাতাল চোখ গলে
(মাইরি কী লিখছিস স্বপন)। সহজ স্বচ্ছ বোবা রক্তদল আত্মবাসা ঝরতে ঝরতে কখন যেসব উৎসের
দিকে বিছোনো ছায়া নিবেদিত নুড়িপাথর সময়সঙ্গমহীন রাতে গভীর চূপকথা অনন্ত মাটি বিদ্ধ
ক্ষিপ্ত যুদ্ধফলা ঠোঁট অনুত্তর প্রশ্নের জঙ্ঘা গলিতে চিৎকার (আপনি ঠিক ধরেছেন এ লাইনটা
শালা পুরাণ ভাষা পুরাণ ভাষা লাগছে) হ্যাঁ কী বলছিলাম যেন জঙ্ঘাগলিতে চিৎকার-- বড়ই শীত
অথচ এ যে কী উত্তাপ-- হ্যাঁ আমি নিজেকে নিজে ছুঁচ্ছি এবং মরছি। আচ্ছা এ যদি নির্যাতন
হয় পীড়ন হয় এবং তোমাতে পবিত্র অপবিত্র বা বৈধ অবৈধ বা ধর্ষণ হয় - তো আমি আমারই আপ্ত
আশ্রয় হয়ে নিজেকে বিদ্ধ করতে এবং হাসতে এবং স্বপন করতে করতে মরতে পারি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন