কবিতার কালিমাটি ১৩০ |
গুলাচি ও ডালসিমার
গুলাচির ভেতর থেকে ভেসে আসে ডালসিমারের সুরতরঙ্গ;
হয়তো নির্জন প্রস্তরখণ্ডে বসে কোনো অনূঢ়া আকাশের নীলে ছড়িয়ে দিচ্ছে সুরের রজত সম্ভার,
একটি ডালসিমার-তন্ত্রী প্রলম্বিত হতে হতে আকাশে যখন রুপালি পথরেখা নির্মাণ করে তখন
সুরের সম্মোহন পাহাড়ি পথের মিডিয়ান স্ট্রিপে প্রসাধিত গুলাচির সূক্ষ্মকোণী পত্রালির
অনুকম্পনের ওপর প্রভাব ফেলে; রুপালি সংকেতের ভেতর দৃশ্যমান হতে থাকে সৈকত-প্রকল্প,
গভীর জলশব্দে খুলে যেতে থাকে সীমান্তের সকল দরজা।
সংকেতময় মাঠ
ট্রিপটলেমাসের উড়ন্ত রথ থেকে কর্ষিত মাঠে যখন
শস্যবীজ ঝরে পড়ছিলো তখন আমি বৃক্ষ-পত্রে মুদ্রিত পুনরুত্থান-উপাখ্যান পাঠে মগ্ন। গামারির
হলুদ ফুলে পার্সেফনি অলংকৃত হবার আগেই পোকার আক্রমণ, অতঃপর সুপুরির লোকগানে ভরিয়ে
রেখেছি একখণ্ড ভূমি।সুপুরির শ্যামল পাতার ঘ্রাণ আকাশে রচনা করে নিরাপদ পথরেথা। এ পথ
ধরে নীলকণ্ঠ পাখি উড়ে যায় দূর মাঠে, ঘাসের ভেতর মিশে থাকা অরণ্য আর সমুদ্র সংকেত
তাকে বিস্মিত করে, সে খুঁজে পায় অবরুদ্ধ ভবনের সুবর্ণ চাবি।
আকাশে পদ্মতন্তু
সিনট্যাক্সের ভেতর অসংখ্য নীল ব্রিজ; নিচে নদীর
পাশে নদী, দূরে স্টিকসের তীর থেকে বহুমুণ্ডুধারী কুকুরের ঘেউ ঘেউ। আমার গন্তব্যে মধুরঞ্জনী
তরঙ্গিত, তা প্রায় অশ্রুতিগম্য। ব্রিজের পর ব্রিজ পেরিয়ে যাচ্ছি, প্রাঞ্জল হয়ে উঠছে
রাগপ্রকৃতি; পদ্মতন্তু আকাশে ছড়িয়ে দিচ্ছে অসীম অংশুজাল।
'সংকেতনয় মাঠে'তে অবচেতন মনের সক্রিয়তা নজরে পড়লো। এবং, তাতে আমার দৃষ্টি থমকে দাঁড়ালো এই ভেবে যে বরষার জল ঢুকে পড়েছে ক্ষেতে; ফসলের যত্নপ্রযত্ন জরুরি। "সুপুরির শ্যামল পাতার ঘ্রাণ আকাশে রচনা করে পথরেখা।"
উত্তরমুছুনবাস্তবতা যোগ হয় অবচেতনের সঙ্গে ; বিনির্মিত হয় পরাবাস্তববাদী জগৎ।
আমার কবিতাভোগটা এলো এমনই করে।