সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

মলয় রায়চৌধুরী

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ১১৭


টোপ

বিহারের বাঢ় শহরে গিয়েছিলুম ইন্সপেকশনে, নথি পরীক্ষা করছি, সামনের বারান্দায় একজন যুবতী সেজেগুজে নাচা আরম্ভ করে দিল, “অভি না যাও চোদ কর কি দিল অভি ভরা নহিঁ”। সামনের দরোজাটা বন্ধ করে দিতে বললেও কারোর কানে গেল না কথাটা। নিজেই বন্ধ করলুম উঠে। বাঢ় বেশ কুখ্যাত শহর ছিল। পাড়ায় পাড়ায় গুণ্ডাদের ঠেক। আর সস্তার রঙচঙে বেশ্যা। সন্ধ্যা হলে অন্ধকার রাস্তায় হাত ধরে টানাটানি চলতো। এমনকি “পাঁচ রুপিয়া দে দিহো মালিক” ধরনের কাকুতি।

লাঞ্চের সময়ে নিচে নেমে একটা ছেঁদো হোটেলে ভাত-ডাল-আলুভাজা খাচ্ছি যখন, পিওনটা এসে ফিসফিস করে বলল, “স্যার ওই রণ্ডিটাকে শাখা অধিকর্তা আগে থেকে শিখিয়ে দিয়েছিল যে আপনারা ইন্সপেকশানে আসছেন,  টোপ ফেলে আপনাদের মন অন্য দিকে ঘোরাতে চেয়েছে, অনেক ঘাপলা আছে শাখায়, চাষিরা এলে তাড়িয়ে দেয়।”

যে হোটেলে সন্ধ্যবেলা উঠেছিলুম, সেখানেও কয়েকটা বেশ্যাকে নিয়ে হাজির। যখন বললুম যে, “ওই রণ্ডিদের সঙ্গে শুয়েও আমি যা রিপোর্ট করার তাই করব”, তখন শাখা অধিকর্তা হাঁটু গেড়ে হাতজোড় করে কাঁদতে আরম্ভ করল।

আত্মম্ভরিতা উপভোগেরও কষ্টের দিক আছে।


1 টি মন্তব্য:

  1. এমন মানুষ বর্তমান সমাজে পাওয়া খুবই দুর্লভ। খুব ভালো লাগলো গল্পটা।

    উত্তরমুছুন