শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩

বিদিশা সরকার

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ১১৫


সিঞ্চনের আগে ও পরে

সিঞ্চনের আগে মেঘের পূর্বাভাস ছিল। শুধু আতিথ্যের কুণ্ঠা বন্ধ করে দিয়েছিল সব জানলা। আমার আবাসনের বারোমাসের অন্ধকার নিয়ে তুই ডকু ফিল্ম বানাবি বলতেই একটা কর্কশ কণ্ঠের চেতাবনি আমাকে আর ভয় দেখাতে পারেনি। সমস্ত কানেকশন কেটে দিয়ে মানুষটা নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে আর ভবা পাগলা আকণ্ঠ ভক্তিরসে বুঁদ হয়ে দু হাত পেতে গ্রহণ করছে চামুণ্ডার শাড়ি। আসলে নগ্ন হওয়ার মুহূর্তে যেমন অন্ধকার জরুরি তেমনই বস্ত্রহরণের পালায় আনাচ কা...নাচেও আলোর প্রয়োজন। পাঠক যখন দর্শক হয়ে যান তহবিল ভরে ওঠে রুজি রোজগারের। এই নিয়ে বার পাঁচেক আমাকে বিক্রি করতে গিয়ে বিফল হয়ে ফিরে আসা মানুষটা জানেই না দ্রব্যমূল্য বিষয়ে ক্রেতাও সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে পাররনি। এ সবই যে দিনের আলোর প্রকাশ্যে। আজ তোকে  শুনতে শুনতে বড্ড বাঁচা'র লোভ থেকেই লিখতে শুরু করলাম বিরাট ফর্দ। সমস্ত অসম্ভবই আজ খোল কর্তাল বাজিয়ে নগরকীর্তনে! সেই মানুষেদের পায়ের তলায়ই পিষ্ট হয়ে পড়েছিলাম প্রকাশ্য দিবালোকে। ঝরে পড়া পাতারা নিজেদের জড়ো করে ঢেকে দিয়েছিল অঙ্গরাজ্য -- বিমানবন্দরে তোর ট্রলি ব্যাগের ভিতরে ক্যামেরা ঘুমোচ্ছে তখন।

আসলে তুমি কে? যে তুমি'র সঙ্গে কথা বলছি সেটাই কি আসল তুমি? অথচ গতকালের তুমি'র সঙ্গে বা তারও আগের তুমি -- আমি তোমার সম্পর্কে কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। হয়তো তুমিও। একই প্রশ্ন একই জিজ্ঞাসা আমার সম্পর্কে। এই পক্ষাঘাতকে লুকানোর জন্য ঝাঁপতাল অথবা কোনও বিশারদের কোনো প্রয়োজন আছে কি? আসলে প্রয়োজনেই তো মানুষ মানুষকে মই ব্যবহার শেখায়, কেড়েও নেয়। আপাতত আমার মইটা ফেরত চাই। অন্ধকূপের ভেতর আমার অস্তিত্বকে, অগ্নিকুণ্ডকে ফেলে দিয়ে যারা আত্মগোপন করেছে তাকে অজ্ঞাতবাস বলে না। অভিসন্ধির সন্ধিপ্রস্তাবও নয়।

বাণিয়া প্রগতি অপরিসর জলাভূমিতে চাঁদের উদয় দেখবে বলে জোছনার ভ্রমে মাদকেই -- গত কয়েকদিন চাঁদকে দেখা যায়নি। আশ্চর্য এ বিষয়ে কারও বিশেষ হেলদোল নেই। ওরা সবাই রুমালে মুখ ঢেকে আসল ঘটনাকে না, নিজের সত্যিটাকে আড়াল করছে।

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন