রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২

দুরদানা মতিন

 

কবিতার কালিমাটি ১২৩


স্বপ্নযাত্রা        

 

স্বপ্নে যাত্রা করি,

উপনীত হই গন্তব্যের প্রায় কাছাকাছি;

শান্তির শীতল জল,

হাত বাড়ালেই ছুঁতে পারি যেন। আকাশে

ঘন কালো মেঘ, বাতাসে

জলের ছোঁওয়া, চির হরিৎ বন ডাকে আয় আয়।

চোখের কোণে হীরে কুচি,

ঘনিভূত আর্দ্রতা। ছোট একটি শব্দ কেবল

একটি হাল্কা ছোঁওয়া

মুহূর্তেই মিলিয়ে যায় সবকিছু।

 

আশ্চর্য সেতু

 

ধ্যানী বকের মতো নিশ্চল, পলকহীন দৃষ্টি,

বসে থাকা যেন কতকাল; নিঃসঙ্গ ভাবনাগুলি

কেবল সঙ্গী। শরীরে সময়ের গাছ পাথর, উইয়ের ঢিবি,  

ঊর্ণজাল। পেলবতা হারায়, ঢাকা পড়ে

যায় কতকিছু; অনেক গভীর গোপনে, দৃষ্টির

অগোচরে আজো কলকল, ছলছল, দূর্বার কোলাহল

টলটলে চোখ নিয়ে অবাক হওয়া এক নবীন

কিশোরী। একটা নদী বয়ে আসছে সে কত যুগ ধরে

হঠাৎ একদিন প্রকৃতির সব নিয়ম ভেঙ্গে সময় বইতে

থাকে উল্টো দিকে; কবে বিলীন হওয়া শৈশবের তেতুল

গাছটা নদী গর্ভ থেকে উঁকি দ্যায়; ফেলে আসা গলি,

ফেলে আসা পারাপারে সময়ের পলি; অপারগতার ভার

বুকের ভিতর। সব সূত্র ভেঙে যায়, ভেসে আসে অবিনশ্বর

এক স্বর। আশ্চর্য  সেতু ভেসে উঠে তারপর, ঈশ্বরের

মতো অনায়াস বিচরণ মহাকালের সমুদ্রে।

 

নীল

চারপাশ ঘিরে আছে ধুসর নীল

পর্দা; অবচেতনে ছায়ার মতো

অপচ্ছায়া, মাথার ভিতর নীরব

অপেক্ষায় হিচককের পাখিরা।

ফিরে আসে ভুল সময়, ভুল করে।

হৃদয়ের গোপন প্রকোষ্ঠে লুকোনো

অসংখ্য নীল নীল প্রজাপতি।

আকন্ঠ ডুবে থাকি জলাধারে,

যেখানে খেলে বেড়ায় নীল নীল

মাছ। তারা অগুণতি হয় দিনে

দিনে। অধরে মৃত্যুর সুরাপাত্র,

নিঃশ্বাসে ধোঁয়া। হৃদয়ের তন্ত্রিতে

বাজে নিরন্তর অন্ত্যেষ্টি সঙ্গীত।

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন