কবিতার কালিমাটি ১২১ |
বিবেক ঘুমাল
রাত বাড়ল
বিবেক ঘুমাল
এবার।
এখন যেমন ইচ্ছে
বেরিয়ে পড়ো
ধর্ষণ খুন অগ্নিসংযোগে
তুমিও বাহবা পাবে।
রাজনৈতিক চাঁদ
উঠছে
তোমাকে আলো
দেবে।
রাজনৈতিক সূর্য
উঠবে
তোমাকে পথ দেখাবে।
সব আলোই তোমার
আলো —
সব পথই তোমার
পথ —
তুমি হেসে উঠছ
তোমার মরচে
ধরা অস্ত্রগুলি চকচক্ করছে!
ইতিহাসের কালো মানুষ
কীসে কার জয় কেউই জানে না
গায়ের জোরে
পতাকা ওড়ে
ইজ্জতও লুঠ
হয়ে যায়
চাবুক খেয়ে ঘোড়াগুলি ছোটে
জনগণ রাস্তা ছেড়ে দাঁড়ায়
ইতিহাস দূর
থেকে লুফে নেয়
তিল ও তুলসী
চন্দনে বরণ করে
মানুষের ঘাম
আর অশ্রুদ্বীপের
মনোরম বাগানে
বসিয়ে রাখে
জনগণ আশ্চর্য
হয়ে হাততালি দেয়!
মানুষেরা ভেসে যাচ্ছে একে একে
ওরা ডেকেছিল,
আমি যাইনি
সারাদিন কান্নার
সমুদ্রে ঢেউ গুনছি
মানুষেরা ভেসে
যাচ্ছে একে একে
আমিও ভেসে যাব
সন্ধ্যার পাখি
উড়ে যাচ্ছে দূরে
ম্লান আলোয়
আকাশ কোনও অপার্থিব নির্নিমেষ
নিজের কথাও
আর শুনতে পাই না নিজে
বৃক্ষের অন্তরালে
ঘুমায় স্মৃতিফুল
আমার অন্তর
বাহিরে তীব্র স্রোত
অন্ধ এবং ভাসমান
চোখ
দেখতে দেখতে
ঘুমিয়ে যেতে চাই
কথারা তবুও
কথা, অনেক অনেক পৃথিবী, অনন্ত সময়
শুধু বিকেল হয়ে গেছে
ক্ষতগুলি শুকিয়ে
যায়নি
শুধু বিকেল
হয়ে গেছে
শেষ রশ্মিটুকু
ঝরে পড়েছে ক্ষতের উপর
কয়েক ফোঁটা
অশ্রুর শুকনো দাগ
সভ্যতার বারান্দায়
চিহ্ন হয়ে আছে
পাখিরা চলে
গেছে নিজস্ব বাসায়
যদিও সমস্ত
বাসা জুড়ে অন্ধকার
আমি শূন্যতা
নিয়ে খেলা করি শুধু
সমস্ত যুদ্ধের
ইতিহাস কালের আবর্তে ঘুরপাক খায়
সেসব জানে না
কেহ
মৈথুন ভরা ঘরে
বিরামহীন মদনের শর ছুটে যায়
ক্ষতগুলি স্মৃতির
বিস্ময়ে কেবলই নির্বাক হতে থাকে
সভ্যতা বদল
করে বাঁক
আলো নিভে এলে
কালের সীমানা জুড়ে বিষাদের কাক ডাকে
আমার ইচ্ছা
ও জানালা দিয়ে
ছুঁড়ে দেয় ডিমের খোলা, পচা আম
কাঁঠালের ভূতি…
আমি ওর মুখের
দিকে চাইতে পারি না
ছাদের উপর উঠে
ও চাঁদ ও নক্ষত্রদের ডাকে
অন্যগ্রহের মানুষদের
ডাকে
আমি ওর মোবাইল
নম্বর চাইতে পারি না
আলো নিভিয়ে
চুপচাপ বসে থাকি
অন্ধকারে ওর
মুখ হেসে ওঠে
ওর মুখের হাসি
লিখে রাখি
আমার সাইকেল
ওর রাস্তা ছেড়ে দাঁড়ায়
আমার চপ্পল
নিঃশব্দে ওর জানালা পেরোয়
আমার ইচ্ছা
লুকিয়ে থাকে
লুকিয়ে লুকিয়ে পাখি হয়
শরৎ ৠতুর মেঘ হয়
সোনালি ধানের রোদ হয়
পদাবলির
ঢেউ হয়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন