কবিতার কালিমাটি ১১৭ |
রবিবার
(১)
রবিবার, তখনই
সার্থক হয়, যখন রাস্তার পাশে
খাঁচাগুলো ভরে
ওঠে রক্তমাখা বিষণ্ণ পালকে
হাইড্রেনে ফেলে
দেওয়া পাখির বাতিল মুণ্ড
পশুপ্রেমিকেরা
নিয়ে যায়
খানিকটা কম
দামে, পোয়াতি বেড়ালদের
অরুচি কাটাতে
বাতিল হলুদ
নখ বাতাস কামড়ে পড়ে থাকে
পাশ দিয়ে হেঁটে
যায় হাসিখুশি টিউশন-ফেরত
রবিবার, সার্থক
হয়ে ওঠে
আমাদের মুণ্ডহীন
ধড়গুলো
দাঁড়িপাল্লার
দিকে ঝুঁকে পড়ে নিজের ইচ্ছায়...
(২)
কশাইয়ের স্বপ্নের
ভিতর জেগে উঠেছি আমি
চামড়া ছাড়িয়ে
নেওয়া রক্তে ভেজা আমি
দুটো পা উলটো
করে ঝুলিয়ে দেওয়া আমি
যার নখের ভিতরে
শুধু কুরে খাওয়া মাংসের গোলাপি
এবং ক্রেতার
মুখ, ধীরোদাত্ত মুখ...
যা আমাকে গত
দুটো মাস টানা ঘুমোতে দেয়নি
যা আমাকে আগামী
দুমাসও আর ঘুমোতে দেবে না
ভেঙেচুরে জেগে
থাকব ছুটির দুপুরে,
কশাইয়ের দিবাস্বপ্নে,
তার প্রিয় কুকুরের
লালাসিক্ত বিরাট চোয়ালে...
(৩)
চপারের দীর্ঘতম
ওঠাপড়া এ বাজারে
কেউ সবিশেষ
আর লক্ষ করে না
রক্তের দুপাশে
চলে চা-পান, কুশল বিনিময়...
খরিদ্দারদের
ঢালু পাঞ্জাবি-পকেটে
অনেক চাঁদির
টাকা
শাদা, কী ভীষণ
সাদা, ধাতুমুদ্রা এবং শীতল।
সে ভয়ার্ত দেবীমুখ
দক্ষিণাস্য
হয়ে আছে, হাড়িকাঠে চোখ পড়বে না...
দেখবে না রক্তজবা,
পশুটির শেষ স্নান, সিঁদুরে উল্লাস
শুধু শেষ আর্তনাদটুকু
বাজারের এ-মাথা
ও-মাথা ধাক্কা খেয়ে
ফিরে আসবে ঈশ্বরীর
শরীরে, চপারে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন